শেষ হলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন। অধিবেশন সমাপ্তি সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ পাঠের মধ্য দিয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বৃহস্পতিবার (৯ মে) রাত ৯টায় অধিবেশনের সমাপ্তি টানেন। এর আগে এই অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর উত্তরদানের মধ্যে ৩৮টি প্রশ্ন জমা পড়েছিল। এর মধ্যে ১৫টির উত্তর তিনি দিয়েছেন। অন্যান্য মন্ত্রীদের জবাবদানের জন্য প্রশ্ন জমা পড়েছিল ৯০২টি। এর মধ্যে জবাব পাওয়া গেছে ৩৬৪টির। জবাব দেয়া প্রশ্নোত্তরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রশ্ন ছিলো ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের কাছে। প্রায় আধাঘণ্টা ধরে তারকা চিহ্নিত ও সম্পূরক প্রশ্নের জাবাব দেন তিনি।
- ডাকের আয় কমেছে ৯০ শতাংশ
- সব তার যাবে মাটির নিচে
- ৯৮ শতাংশ এলাকায় ৪জি
- মন্ত্রী এমপির ফেসবুক-ইউটিউব ভেরিফায়েড করা হবে
- টেলিটক এর ৩০০০ বিটিএস বাস্তাবায়ন
- সাইবার সুরক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগ
- রপ্তানিমুখী আইসিটি শিল্পে ২০ লক্ষাধিক কর্মসংস্থান
প্রশ্নোত্তরে ফেক আইডি দিয়ে অপপ্রচার বন্ধে মন্ত্রী-এমপিদের ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফায়েড করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, দেষের ৯৮ শতাংশ এলাকা ফোর জি নেটওয়ার্কের আওতাধীনে এসেছে। ভবিষ্যতে শতভাগ কানেক্টিভিটি তার ভূগর্ভে স্থাপন করার পারিকল্পনা নেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ব টেলিকম অপারেটর টেলিটকর সেবার মান বাড়াতে তিন হাজার নতুন বিটিএস সাইট (টাওয়ার) স্থাপনের কাজ বাস্তবায়ন পর্যায়ে রয়েছে। ডিজিটাল অগ্রগতির সঙ্গে বাড়তে থাকা সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ২৪ ঘণ্টার নজরদারি ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ এবং আইন হালনাগাদ করা হচ্ছে। তবে সঞ্চয়পত্র বিক্রির কমিশন কমানোয় ডাক অধিদফতরের আয় ৯০ শতাংশের বেশি কমেছে। তারপরও সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার শিল্পে বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করে আইসিটি শিল্পের বিকাশ ও ২০ লক্ষাধিক তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান তৈরির পাশাপাশি আইসিটি খাত এখন দেশের অন্যতম রপ্তানি শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে সম্পূরক প্রশ্ন করেন ঢাকা-১৯ আসন থেকে নির্বাচিত স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ফেক ফেসবুক আইডি খুলে জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ীদের চরিত্র হনন করা হচ্ছে, ইউটিউব আইডি খুলে মানুষের সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। এটা বন্ধে মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চান তিনি।
জবাবে ফেক আইডি দিয়ে অপপ্রচার বন্ধে মন্ত্রী-এমপিদের ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফায়েড করার পরামর্শ দিয়ে প্রতিমন্ত্রী এমপি-মন্ত্রীদের উদ্দেশে বলেছেন, আপনাদের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফায়েড করার জন্য পাঠান, তাহলে আমরা তা করে দেবো। ফলে ফেক আইডি দিয়ে আপনার নামে কেউ অপপ্রচার করতে পারবে না। ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটকসহ অন্যান্য সংস্থাগুলো মাল্টিন্যাশনাল, তাদের অফিসের বাংলাদেশে রেজিস্ট্রেশন নেই। এই জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করছি। যাতে করে বাংলাদেশের কোনও ব্যক্তির বা প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুমতি না নিয়ে দেশের বাইরে নিয়ে যেতে না পারে এবং অপব্যবহার করতে না পারে। অভিযোগ করলে শক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকারি দলের সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে ভবিষ্যতে শতভাগ কানেক্টিভিটি তার ভূগর্ভে স্থাপন করা হবে জানিয়ে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অভিমুখে এগিয়ে চলেছি। স্মার্ট বাংলাদেশের সকল কিছুই হবে স্মার্টভাবে। সকল ধরনের কানেক্টটিভিটি তার থাকবে ভূগর্ভস্থ। ইতোমধ্যে দেশব্যাপী আমরা এই কার্যক্রম শুরুও করেছি। ঢাকার নানান স্থানসহ বিভিন্ন জেলায় বিদ্যুতের তার ভূগর্ভে স্থাপন করার জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে শতভাগ কানেক্টিভিটি তার ভূগর্ভে স্থাপন করা হবে। দেশে টিএন্ডটির লাইনসমূহ শুধুমাত্র গ্রাহক পর্যায়ে কারিগরি কারণে মাটির উপর দিয়ে টানা হয়েছে। তবে বিভিন্ন স্থানে টিএন্ডটি’র তার ভূগর্ভস্থ করা হয়েছে। যেমন, এক্সচেঞ্জ থেকে কেবিনেট পর্যন্ত লাইনসমূহ মাটির নিচ দিয়ে টানা হয়েছে। তবে ভবনে ফাইবার ক্যাবলের চ্যানেল ইন্টারনেটসহ সকল সার্ভিস লাইনের জন্য একক ডাক্ট এর ব্যবস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশেও উন্নত দেশের মত টিএন্ডটিসহ সকল ধরনের কানেক্টটিভিটি সমূহ মাটির নিচ দিয়ে টানা সম্ভব হবে।
পটুয়াখালী-১ আসনের সংসদ সদস্য এ বি এম রুহুল আমীন হাওলাদারের লিখিত প্রশ্নের জবাবে পলক সংসদকে জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে সেবার মান বাড়াতে টেলিযোগাযোগ বিভাগ সারাদেশে সরকারি মোবাইল কোম্পানি টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের মোবাইল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বর্তমানে ‘গ্রাম পর্যায়ে টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং ৫জি সেবা প্রদানে নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ন’ শীর্ষক চলমান প্রকল্পের অধীন তিন হাজার নতুন বিটিএস সাইট (টাওয়ার) স্থাপনের কাজ বাস্তবায়ন পর্যায়ে রয়েছে। সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের অর্থায়নে দেশের দুর্গম পার্বত্য জেলা চট্টগ্রাম, হাওর, উপকূলীয় ও দ্বীপাঞ্চল এলাকায় ৪২০ নতুন বিটিএস সাইট (টাওয়ার) স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। এর পাশাপাশি প্রস্তাবিত ‘ইউনিয়ন পর্যন্ত টেলিটকের ৪জি মোবাইল ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ২ হাজার বিটিএস সাইট স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এসব প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়িত হলে টেলিটকের মোট বিটিএস সাইট (টাওয়ার) সংখ্যা ১১ হাজারে উন্নীত হবে। ফলে, সারাদেশে টেলিটকের মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবার উন্নতি হবে এবং ৪জি নেটওয়ার্ক সেবা প্রদান সক্ষমতা অর্জিত হবে।
সংসদে স্বতন্ত্র এমপি সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের সম্পূরক প্রশ্নে অভিযোগ উত্থাপন করে বলেন, মোবাইল অপারেটররা বিভিন্ন ভাবে এমবি কেটে নেন। কিন্তু আমরা ফোন কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারি না। প্রতারণার শিকার হয়ে আমরা জিডিও করতে পারি না। এ বিষয়ে আমাদের সুরক্ষায় সরকারের কোনো বিশেষজ্ঞ প্যানেল আছে কি না তা আপনার কাছে জানতে চাই।
জবাবে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি আনন্দের সাথে বলতে পারি, আমরা পৃথিবীর অন্য দেশগুলো থেকে সবচেয়ে সাস্তা দামে ইন্টারনেট কিনতে পারি। প্রতি এমবিপিএস ৫০ টাকায় নামিয়ে আনতে পেরেছি। যার অবদান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের। বাংলাদেশের ৯৮ শতাংশ এলাকা ফোর জি নেটওয়ার্কের আওতাধীন বলেও দাবি করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, এখন ১৯ কোটি সিম ব্যবহারকারী। আজ আমরা দরিদ্র মানুষের কাছে স্বল্পমূল্যে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে পেরেছি। গতকাল আমরা বিটিআরসিতে গণশুনানিতে তিন ঘণ্টা ধরে তিন হাজার গ্রাহকের প্রশ্নের মুখোমুখি করেছি এবং সমাধানের পথও দিয়েছি। ভবিষ্যত পরিকল্পনা অনুযায়ী, কোনো গ্রাহক যদি বিটিআরসি-তে অপারেটরদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তবে তিসি যত প্রভাশালীই হোন না কেন তাদেরকে আমরা আর্থিক জরিমানা করে আইনের অধীনে আনবো। এজন্য আমাদের আইটি অডিট ও ফাইন্যান্সিয়াল অডিট টিম রয়েছে। আমরা তাদের জবাবদিহিতার অধীনে আনতে পেরেছি বলেই বিটিআরসি থেকে ৭৩ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব খাতে জমা দিতে পেরেছি।
অপর স্বতন্ত্র সদস্য নাটোর-১ আসনের সাংসদ আবুল কালাম আজাদে সম্পূরক প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী পলকের কাছে প্রশ্ন রাখেন- ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের জন্য যে ভালো কাজ হচ্ছে এর মধ্যে কিছু দুষ্ট লোক হ্যাকারদের মাধ্যমে রাতের বেলা শত শত কোটি টাকা লুট করে নিচ্ছে। এই প্রক্রিয়াটি কি? তারা এটা কীভাবে করছে? মামলা দিয়েও রোধ করা যাচ্ছে না। হ্যাকার ও জুয়াড়িরা যেন সাধারণ মানুষকে যেন কষ্ট দিতে না পারে তার জন্য আপনার কী প্রযুক্তি বা পদ্ধতি আছে?
জবাবে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের যত অগ্রগতি হচ্ছে সাইবার জগতে অপরাধ প্রবণতা এবং ঝুঁকি ততই বাড়ছে। ২০০৮ সালের আগে অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন শুরু করার আগে আমাদের আর্থিক লেনদেন অথবা সরকারি সেবা বলতে গেলে এমন কোনো কার্যক্রম ছিল না, যার ফলে সাইবার ঝুঁকিটাও কম ছিল। যত দ্রুত আমরা ডিজিটাইজেশন করেছি তত বেশি কিন্তু… এ উপাত্তের সুরক্ষা প্রয়োজনীয় হয়ে দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা ২০১৮ সালে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সংসদে পাস করেছিলাম। তার পরে সময়ের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনের তাগিদে এখন নতুন আইন সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০২৩ এটি প্রণয়ন করা হয়েছে। তারই আলোকে আমরা চারটি মূল স্তম্ভ নিয়ে কাজ করছি। প্রথমত প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি কাউন্সিল রয়েছে। সেইখান থেকে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সকল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং অন্যান্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন। দ্বিতীয় আমাদের যে ফরেন্সিক ল্যাব সেখানেও কাজ হচ্ছে। কোনো অপরাধ যদি সংগঠিত হয় তাহলে সেই অপরাধকে চিহ্নিত করা, অপরাধীদের চিহ্নিত করা এবং তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ, যাচাই-বাছাই করার জন্য সেই ডিজিটাল ফরেন্সিক ল্যাব কাজ করছে।
তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের সাইবার রেসপন্স টিম, কাউন্টার টেরোরিজম এবং ইনটেলিজেন্স এজেন্সিসহ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে। ইতোমধ্যে আমরা ২৩ হাজার জুয়ার সাইট, পর্নোগ্রাফি সাইট, এই ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রমে যে প্ল্যাটফর্মগুলো যুক্ত ছিল, সেগুলোকে আমরা ব্লক করেছি। প্রতিনিয়ত, প্রতিদিন ২৪ ঘন্টা আমাদের বেশ কয়েকটি টিম কাজ করছে। ফলে আমরা অনেক অপরাধ প্রতিরোধ করতে পারছি। কিন্তু এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া, এটা চলমান থাকবে। সে ক্ষেত্রে আমাদের যে ৩৩৩ একটা কল স্টোর আছে, সেখানে আমরা দেশবাসীকে অনুরোধ করব, তারা যেন কল করে তাদের কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রয়োজন হলে বা কোনো উপদেশের প্রয়োজন হলে বা অভিযোগ জানাতে হলে তারা করতে পারেন। ৯৯৯ আছে এখানে পুলিশকে তারা অভিযোগ জানাতে পারেন। সচেতনতা জন্য তৈরি ডিজিটাল লিটারেসি ডট গভ ডট বিডি ওয়েব সাইট থেকে এরই মধ্যে ১০ লাখ শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণ নিয়েছে। আমরা সবাইকে এটি ভিজিট করে সচেতন হওয়ার অনুরোধ করছি। আমরা প্রযুক্তিগত অনেক প্রতিরোধ মূলক পদক্ষেপ নিয়েছি। সাথে কঠোর আইন প্রয়োগের ব্যবস্থা করছি এবং আন্তর্জাতিক ভাবে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছি যেন আমাদের অর্থ এবং উপাত্ত সুরক্ষিত রাখতে পারি।
এছাড়াও চট্টগ্রাম-১১ আসনের এম আব্দুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ডাক অধিদফতরের লোকসান ৭৫২ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এ অর্থবছরে আয় ছিল ২০১ কোটি ৫ লাখ ও ব্যয় হয়েছে ৯৫৪ কোটি টাকা।
মন্ত্রী জানান, সঞ্চয়পত্র বিক্রির কমিশন ডাক অধিদফতরের বড় আয়ের উৎস। সরকারের সিদ্ধান্তে ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে সঞ্চয়পত্রের কমিশন শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক শূন্য ৫ করার ফলে আয় ৯০ শতাংশের বেশি কমে গেছে। ফলে ডাক বিভাগের আয় ব্যাপক হারে কমেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে আয় ছিল ১৩০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আয় হয়েছে ৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
ময়মনসিংহ-৩ আসনের সংসদ সদস্য নীলুফার আঞ্জুম এর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে পলক বলেন, প্রাথমিক ভাবে পাইলট প্রকল্পের অধীনে গৌরিপুর উপজেলায় ১০০ জনকে কর্মসংস্থানের জন্য ৩৫ দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। প্রশিক্ষণ বিনামূল্যে দেয়া হলেও তাদের কোনো ভাতা দেয়া হয় না। তবে প্রশিক্ষণ শেষে পরীক্ষায় যে ভালো করবে তাকে একটি করে ল্যাপটপ দেয়া হবে। ভবিষ্যতে সেখানে একটি জয় সার্ভিস ইমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করবো।
তারকা চিহ্নিত প্রশ্ন ২০১ এর জবাবে আইসিটি ও টেলিকম প্রতিমন্ত্রী জানান, নীলফামারি জেলার জলঢাকা উপজেলায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের অধীনে ১টি শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউচার সহ মোট ২৫টি স্কুলে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ১টি শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউচার সহ মোট ১৮টি স্কুলে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। আগামীতে নীলফামারি-৩ জলঢাকা সংসদীয় আসনে ইডিসি প্রকল্পের অধীনে আরো ২৫টি স্কুলে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হবে।
ঢাকার সংসদ সদস্য সাঈদ খোকনের সম্পূরক প্রশ্নে জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, আপনার নির্বাচনী এলকায় স্টাবলিশিং ডিজিটাল কানেক্টিভিটি প্রকল্পের আওতায় নতুন করে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব ও স্কুল অব ফিউচার প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে আরো ১০ হাজার এবং প্রাথমিকে ৫ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হবে।
ঠাকুরগাঁও-৩ এর সংসদ সদস্য হাফিজুদ্দিন আহমেদের প্রশ্নের জবাবে পলক জানান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের নিষেধজ্ঞার কারণে গত অর্থ বছরে আমরা নতুন কোনো কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করতে পারিনি। এই অর্থবছরের আগামী জুনের মধ্যে আমরা ২ হাজারের মতো কম্পিউটার ল্যাবের প্রকিউরমেন্ট শুরু করবো। এরমধ্যে অল্পদিনের মধ্যেই আপনার আসনে ৫টি ল্যাব স্থাপন করা সম্ভব হবে বলে আশ্বস্ত করছি।
ব্রহ্মণবাড়িয়া ৬ আসনের সংসদ সদস্য ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলামের জবাবে ভবিষ্যত স্মার্ট নাগরিক তৈরিতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী।