স্মার্ট নাগরিক ছাড়া কীভাবে হবে স্মার্ট বাংলাদেশ? সেই ঘাটতি মেটাতে গেমিফিকেশন মডেলে চালু হলো ‘টেনমিনিট স্কুল অনলাইন ব্যাচ’।
বিশ্বে যখন ‘ফ্লিপ ক্লাস’ ধারণা নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে; এর সাত বছর আগেই সেই উদ্ভাবনটি শুরু করে টেনমিনিট স্কুল। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার আইসিটি বিভাগের সম্মেলন কেন্দ্রে এই স্কুলের ষষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণীর অনলাইন ব্যাচের উদ্বোধন করলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। অ্যান্ড্রয়েডের পর আইপ্যাড থেকে এই ব্যাচের উদ্বোধন করেন প্রতিমন্ত্রী।
এসময় তার সঙ্গে ছিলেন ফিন-টেক স্টার্টআপ ডি-মানি সহপ্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া বশির কবির ও স্টার্টআপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ এবং টেনমিনিট স্কুলের ম্যানেজমেন্ট টিমের সদস্যরা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে টেনমিনিট স্কুলের এই উদ্যোগকে ‘সুযোগের বৈষম্য’ ঘুচে ‘ডোমিনো ইফেক্ট’ হিসেবে কাজ করবে বলে মত দেন পলক। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের সাড়ে তিন কোটি মাধ্যমিক শিক্ষার্থী আনন্দের মাধ্যমে স্কুলের পাঠ শিখতে পারবেন বলে মনে করেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে আজকের প্রজন্মকে স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের পালন করতে হবে। সেই লক্ষ্যে আগামী ২২ জানুয়ারি থেকে আমাদের চলনবিলে একটি শিক্ষা উৎসব হবে যেখানে আমরা একটি গণিত, ইংলিশ ও প্রোগ্রামিং ক্যাম্প করবো। এই একই মডেল আমরা সারাদেশে রেপ্লিকেট করতে চাই। এজন্য ৩০০টি সংসদীয় আসনে থাকা স্কুল অব ফিউচারকে কাজে লাগাবো। সেখানে শিক্ষার্থীদের দেয়া হবে এআর বুক। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন অনুযায়ী সোনার মানুষ, স্মার্ট মানুষ গড়তে গ্রাম ও শহরের শিক্ষার বৈষম্য ঘুচে দিতে প্রযুক্তি ও টেন মিনিট স্কুলের প্লাটফর্ম ব্যবহার করতে চাই।
তিনি আরো বলেন, মেট্রোরেল উদ্বোধনের দিনে আমার নেতা জয় ভাই তিনটি নির্দেশনা দিয়েছেন- রিসার্চ ও ইনোভেশনে ফোকাস হতে বলেছেন। প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গবেষণা ও উদ্ভাবনে মনযোগ দিতে বলেছেন। তাই আমি টেনমিনিট স্কুল-কে অনুরোধ করবো একটি ইনোভেটিভ নেশন গড়ে তুলতে ডেইলি লাইফ রুটিন বা এড্যুকেশনের বাইরে তারা যেনো রিসার্চ ও ইনোভেশ ফোকাস কন্টেন্টে জোর দেয়। যাতে করে যার যার গ্রামে বসে একটা বিষয় নিয়ে রিসার্চ করতে পারে। তার যেনো টুলস ও ম্যাটেরিয়ালস টেনমিনিট স্কুল থেকে পায়।
এছাড়াও সরকার এখন অবকাঠামো ব্যয় কমিয়ে সাশ্রয়ী হতে সফট স্কিল ও সফট সল্যুশন উন্নয়নে গুরুত্ব দিচ্ছে জানিয়ে দেশজুড়ে বিস্তৃত ১৩ হাজার স্কুলের আইসিটি শিক্ষকদের জন্য একটি ‘প্রশিক্ষণ কোর্স’ চালু করার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী। পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের প্রতি কোডিং ও প্রোগ্রামিং কোর্স চালুর মাধ্যমে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে ১০ লাখ প্রোগ্রামার তৈরির আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে টেনমিনিট স্কুল অনলাইন ব্যাচ সম্পর্কে ধারণা দিতে টেনমিনিট স্কুল সহপ্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিক জানান, এবার এইচএসসি পরীক্ষার আগে যে লাইভ ক্লাস নেয়া হয়েছিলো যেখানে ২১ হাজার শীক্ষার্থী লাইভে অংশ নেয়। রাত ১২টার মধ্যে দেখে ১২ লাখ শিক্ষার্থী। পরীক্ষার আগ পর্যন্ত তা ১৮ লাখ ছাড়িয়ে যায়। অথচ পরীক্ষার্থী ছিলো ১৩ লাখ। এছাড়াও একটি ক্লাসে কমেন্ট এসেছে এক লাখের বেশি। আর গত বছরে ১০ হাজারের বেশি লাইভ ক্লাসে কোটি শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে।
অনুষ্ঠানে জনে জনে কোচিং থেকে লাইভ ক্লাসে কিভাবে শিক্ষার্থীরা বেশি উপকৃত হতে পারে তার ওপর একটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। অন্যান্যোর মধ্যে বক্তব্য রাখেন এসবিকে টেক ভেঞ্চারস্ এর প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশির কবির, স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ, টেন মিনিট স্কুলের চিফ অপারেটিং অফিসার ও কো-ফাউন্ডার মির্জা সালমান হোসাইন বেগ।