ডিজিটাল প্রযুক্তি জীবনকে সহজ করলেও কিছু ঝুঁকিও তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে ডেটার ক্যাটাগরি নির্ধারণের মাধ্যমে ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক বিনিময়যোগ্যতা এবং গোপনীয়তার বিষয়টি নির্ধারণের পরামর্শ দিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। ডেটার বিষয়ে সকলকেই সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, আমরা সবাই কোনো না কোনো ভাবে হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছি।
তিনি আরো বলেছেন, আমরা যদি ডেটার ক্যাটাগরি নির্ধারণ করে দেই তবে আমাদের ১০ কোটি যে ডিজিটাল আইডি আছে সেই আইডির কোন কোন তথ্য আমরা প্রাইভেট কোম্পানিকে দিতে পারবো, আর কোনো তথ্য প্রাইভেসির কারণে কারো কাছে শেয়ার করতে পারবো না এ বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট গাইড লাইন থাকা দরকার। সে কারণেই ব্লকচেইন ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স, রোবটিকস নিয়ে একটি স্ট্রাটেজি বা পলিসি ইতোমধ্যেই আমরা প্রণয়ন করেছি। মাননীয় উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ভাইয়ের নির্দেশনায় আমরা একটি ডেটা প্রাইভেসি অ্যান্ড লোকালাইজেশন ল’ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটি এখন খসড়া পর্যায়ে রয়েছে। অল্পদিনের মধ্যে বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামসহ যেসব প্লটফর্ম রয়েছে তাদেরকে নিয়ে বসে গণমাধ্যমসহ বিশেষজ্ঞ মত নিয়ে সংসদে উত্থাপন করা হবে।
আইনজীবি হিসেবে পেশাজীবন শুরু করা জুনাইদ আহমেদ পলক আরো বলেন, ১৭ কোটি মানুষের এই দেশে ১১ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে। প্রতি মিনিটেই আমরা বিপুল পরিমাণ তথ্য তৈরি করছি। আমাদের ৫৮টি ব্যাংক, ই-নথি, ৯ কোটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল ওয়ালেট রয়েছে। এগুলোতে থাকা গ্রাহকের অনেক তথ্যই বাইরের কোনো দেশে সংরক্ষণ করা হলে (হোস্ট করলে) তাহলে সেটা অবশ্যই আমাদের নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় একটি হুমকী হয়ে দাঁড়াতে পারে।
শুক্রবার (৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের (বিআইজিএফ) পঞ্চদশ বার্ষিক সাধারণ সভার ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), ব্লকচেইন, ইন্টারনেট অফ থিংস (আইওটি) এবং ডেটা প্রাইভেসি’ বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম ঘোষিত ইয়াং গ্লোবাল লিডার জুনাইদ আহমেদ পলক।
বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের সভাপতি ও সংসদ সদস্য হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে সেমিনারে আরো আলোচনা করেন বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের ডিরেক্টর জেনারেল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তফা কামাল, ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির মহাপরিচালক মো. রেজাউল করিম, বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর এবং ন্যাশনাল ডাটা সেন্টার বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ডিরেক্টর তারেক এম বরকতউল্লাহ।
বিএনএনআরসি এর প্রধান নির্বাহী এইচ এম বজলুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে উন্নত ও জ্ঞান সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হতে হলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কী কী বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে তা তুলে ধরেন গবেষক তামজিদুর রহমান। এছাড়াও আরেকটি উপস্থাপনায় বিগডেটার বাজার বিশ্লেষণ তুলে ধরেন ফারজানা আফরিন।
অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন বিআইজিএফ মহাসচিব মোহাম্মাদ আব্দুল হক অনু।