রবিবার আগারগাঁওস্থ আইসিটি টাওয়ারে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাই কমিশনার সারাহ ক্যাথেরিন কুক ও ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুঁই এর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বৈঠকে ফ্রান্স ফ্রান্স বাংলাদেশে শিক্ষা, প্রযুক্তি, বাণিজ্যিক উন্নয়ন, এবং গবেষণার ক্ষেত্রে সহযোগিতায় এবং ব্রিটেন তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং সাইবার সুরক্ষায় বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
মাসদুপুঁই এর সঙ্গে আলোচনা বিষয়ে তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ এবং ফ্রান্সের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করতে শিক্ষা, প্রযুক্তি, স্টার্টআপ, দক্ষতা উন্নয়নের মতো বিষয়গুলো আজকের আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে।
তিনি বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা মহাকাশে আমাদের নিজেদের আর্থ অবজারভেটরি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। যাতে দেশের সকল তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, কৃষিজ উৎপাদনসহ অন্যান্য নিরাপত্তাসহ সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য নিজস্ব স্যাটেলাইট প্রয়োজন। এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একইসাথে সাইবার সিকিউরিটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদ ব্রিফিং-এ প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, বৈঠকে ভবিষ্যতেও বাংলাদেশ-ব্রিটেন একসাথে আইটি সেক্টরে বিজনেস বাড়ানো, সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিত এবং দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করবে বলেও আলোচনা হয়েছে। এছাড়াও ব্রিটিশ কাউন্সিলের সাথে দেশের তরুণ প্রজন্মের ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ কমিউনিকেটিং স্কিল বাড়ানোর জন্য আলোচনা হয়েছে। এতে আমাদের ফ্রিল্যান্সার, সফটওয়্যার, ইঞ্জিনিয়াররা লাভবান হতে পারবে।
পলক বলেন বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক। ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান থেকে দেশে ফেরার সময় লন্ডনে অবস্থান করেন। ওই সময় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার অ্যাডওয়ার্ড হিথের সঙ্গে বৈঠক করেন বঙ্গবন্ধু। সেই বৈঠক থেকেই দুই দেশের সম্পর্কের শুভ সূচনা হয়। এটাকে আমরা চলমান রাখতে চাই।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য ভিশন-২০৪১ ঘোষণা করেছেন এবং বৃটিশ সরকারও তাদের ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট স্ট্র্যাটেজি ঘোষণা করেছে। স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি পিলার; স্মার্ট গভর্নমেন্ট, স্মার্ট ইকোনোমি, স্মার্ট সিটিজেন, এবং স্মার্ট সোসাইটির সাথে বৃটেনের ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট স্ট্র্যাটেজির সাথে অনেকটাই মিল রয়েছে।
অপরদিকে যুক্তরাজ্যের হাই কমিশনার সারাহ ক্যাথেরিন কুক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতের উন্নয়নে প্রসংশা করে বলেন, অল্প সময়ে বাংলাদেশের আইসিটি খাতসহ বিভিন্ন খাতের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতে আরো এগিয়ে যাবে।
সারাহ কুক আগামীদিনে বাংলাদেশ ও বৃটেনের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আরও গভীরতর হওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক রনজিত কুমার, এটুআই নীতি উপদেষ্টা আনীর চৌধুরী, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জি এস এম জাফরউল্লাহ, ডিএসএর মহাপরিচালক আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান, বাংলাদেশ ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রোগ্রামস ডিরেক্টর ডেভিড নক্সসহ দু’দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।