বনের পাখির মতো স্বভাব ছিলো তার। হাসি-কান্নায় মিলে মিশে ছিলো একই সুর। যে সুর গ্রাম-শহরকে বেঁধেছে পাকা রাস্তায়। বানের জল থামাতে দেখিয়েছে নিজস্ব উদ্ভাবন- রাবার ড্যাম। উড়াল রেলের অন্তরালেও জড়িয়ে আছেন তিনি। তাইতো উদ্ভাবন-উন্নয়নে বারে বারে ফিরে আসে তার নাম।
তিনি কামরুল ইসলাম সিদ্দিক। মুক্তিযোদ্ধা থেকে দক্ষ প্রশাসক। দুর্বিনীত সময়েও নিষ্ঠাবান, নিবেদিতপ্রাণ ও নিরলস কর্মী। তাঁর প্রাণের ছোঁয়ায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে ফুটেছে রঙবেরঙের ফুল। ২০ জানুয়ারি ৭৮তম জন্মবার্ষিকী তাঁর। তারুণ্যের ভরা ভাদরে পদ্মা-ভাগীরথীর মতো খরাস্রতা ছিলো তাঁর জীবন। অমৃত্যু মেঘমুক্ত সূর্যের মতো প্রদীপ্ত ছিলেন তিনি।
কর্মজীবনে এলজিইডি-এর মতো প্রতিষ্ঠান গড়ে এখনো তিনি কিংবদন্তী তুল্য। গণপূর্ত, পিডিবি, ডিটিসিবি, প্রাইভেটাইজেশন কমিশন, কোথায় নেই তার ছোঁয়া।
ঝাকড়া চুল। সুগভীর দৃষ্টি। ঠোঁট জোড়া স্মিত হাসি। আচরণে ছিল না উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার ঠাঁট-বাট। স্মার্ট ব্যক্তিত্ব গুণে ‘বড় স্যার’ খ্যাত এই ক্ষণজন্মা। ‘৪৫ এর মন্বন্তরে কুষ্টিয়ার কৃষি উন্নয়ন সংগ্রামী মরহুম নুরুল ইসলাম সিদ্দিক ও সমাজ সেবী রত্নগর্ভা মা হামিদা সিদ্দিকের কোল জুড়ে আলো জ্বেলে পৃথিবীতে এসেছিলেন তিনি। তারপর যেনো ঠিক এলেন আর জয় করলেন। দিগ্বিজয়ীর মতো তিনি এখনো তারার মতো জ্বলছেন সময়ের পরতে পরতে, স্মৃতির বাঁকে বাঁকে।
সুফি সাধক কাজী আবু মোকাররম ফজলুল বারীর কন্যা সাবেরা সিদ্দিকের সঙ্গে ঘর বাঁধেন ১৯৭৩ সালে। কিন্তু ঘরের চার দেয়ালে বাঁধা পড়েননি কখনোই। আবার উন্নাসিকও ছিলেন না স্বপ্নবাজ এই প্রত্যয়ী পুরুষ। আদর্শ মানুষ হতে আমৃত্যু প্রেরণা যুগিয়েছেন চার সন্তানকেই। নিজের সন্তানদের মতোই অপত্য স্নেহের বাঁধনে বেধেছেন জুনিয়র সহকর্মীদের। সঙ্গীরাই এখনো তাঁকে স্মরণ করেন প্রতি জন্মদিনে। শুভ জন্মদিন হে দীপ্তমান।