দেশের ভ্যাট ব্যবস্থাকে রাজস্ব ও ব্যবসা বান্ধব করে গড়ে তুলতে এর সহজীকরণের তাগিদ দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি স্মার্ট ভ্যাট কাঠামো দাবি করেছে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট নিয়ে কাজ করা পেশাজীবীদের সংগঠন বাংলাদেশ ভ্যাট প্রফেশনাল ফোরাম (ভ্যাট ফোরাম)। সংগঠনটি মনে করে, বিদ্যমান ব্যবস্থায় নয়, ভ্যাট ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নের মাধ্যমে এ খাতের উন্নয়ন সম্ভব হবে। আর এজন্য প্রয়োজন স্মার্ট ভ্যাট কাঠামো, যেখানে তথ্যপ্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
ভ্যাট দেওয়ার সংস্কৃতি তৈরি করা ও ভ্যাট গ্রহণকারীদের মধ্যে সুশাসন নিশ্চিত করে স্মার্ট ভ্যাট কাঠামো বাস্তবায়নে ১১৬টি প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) এসব প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
এসব প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে- ২০১২ সালের ভ্যাট আইনের একাধিক বিধি ও ধারা সংশোধনের প্রস্তাব। এছাড়া সর্বোচ্চ রাজস্ব প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে আইবাসের সঙ্গে ইন্টিগ্রেট করার প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি। বাথরুম ও কিচেন ফিটিংস উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ করা, উৎসে কর্তিত মূসক সমন্বয় করা, অভিন্ন মূল্যে বিক্রয় সংক্রান্ত বিধান আইনে অন্তর্ভুক্ত করা, কেন্দ্রীয় নিবন্ধনের ক্ষেত্রে আর্থিক সীমা নির্ধারণ করা ও রপ্তানি সংক্রান্ত সব প্রজ্ঞাপন জারি করা ইত্যাদি।
সংগঠনটি তাদের প্রস্তাবে জানায়, অভিন্ন মূল্যে বিক্রয় সংক্রান্ত বিধান আইনে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার। ১৯৯১ সালের ভ্যাট আইনে এরূপ বিধান অন্তর্ভুক্ত ছিল। আইনের মূল উদ্দেশ্য হলো ভ্যাট আদায় করা। যে কোনোভাবে যদি ভ্যাট আদায় করা সহজ হয়, সে পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়। তাছাড়া, যেহেতু এরূপ বিধান আগে প্র্যাকটিস হয়েছে, তাই অনেকে এরূপ বিধানের সঙ্গে অভ্যস্ত। তাই, এরূপ বিধান প্রবর্তন করলে অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে ভ্যাট আহরণ করা সহজ হবে।
এছাড়া বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ) কমিশনারেটের আওতাধীন ১১১টি প্রতিষ্ঠান স্থানীয়ভাবে আহরিত রাজস্বের প্রায় ৫৫ শতাংশ প্রদান করে। সর্বোচ্চ ভ্যাট প্রদানকারী সারাদেশে ৫০০টি প্রতিষ্ঠান স্থানীয়ভাবে আহরিত মোট রাজস্বের প্রায় ৮০ শতাংশ প্রদান করে। সর্বোচ্চ ভ্যাট প্রদানকারী সারাদেশে ১ হাজারটি প্রতিষ্ঠান বিবেচনায় নিলে এ স্বল্পসংখ্যক প্রতিষ্ঠানগুলো স্থানীয়ভাবে আহরিত মোট রাজস্বের প্রায় ৯৫ শতাংশ প্রদান করে।
এ প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্রমে সেন্ট্রাল সিস্টেমে ইনটিগ্রেট করার বিষয় আইনে নিয়ে আসার এবং সে অনুযায়ী দ্রুত কার্যক্রম গ্রহণ করা গেলে ভ্যাট ফাঁকি রোধ এবং ভ্যাট আহরণ বাড়বে।