‘দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্বের জন্য মানুষকে ক্ষমতায়িত করতে আগামী দিনের প্রযুক্তি উন্মোচিত হোক আজ’ স্লোগানে ‘যান্ত্রিকতা নয় যন্ত্রের সঙ্গে মানুষের মানবিক সম্পর্ক’ প্রতিষ্ঠার অভিলক্ষ্ বাস্তাবায়নে স্পেনের বার্সেলোনা শহরে শুরু হয়েছে ওয়ার্ল্ড মোবাইল কংগ্রেস-২০২৩। আগামী ৩ মার্চ শেষ হবে পাঁচ দিনের এই প্রযুক্তির মহাসম্মেলন। দুই কিলোমিটার বিস্তৃত সম্মেলন প্রাঙ্গনে রয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানের প্যাভিলিয়ন।
বিশ্বের ১৫২টি দেশের দেড় লাখেরও বেশি মানুষের এই মহাসম্মিলনে প্রথমবার অংশ নিয়ে ‘ক্যামেলিয়ন কালার চেঞ্জিং প্রযুক্তি’ উন্মোচন করেছে টেকনো। রঙ-পরিবর্তনের এই প্রযুক্তি স্মার্টফোন মার্কেটে নতুন ধারণা না হলেও টেকনোর ব্যবহারকারীরা এই বিশেষ প্রযুক্তিতে সাব-মাইক্রোন প্রিজম বিন্যাসকে ম্যানিপুলেট করে মোট ১৬০০টি ভিন্ন রঙ থেকে ম্যানুয়ালি নির্বাচন করতে পারেন। ব্যাটারির লেভেল, মিউজিক বা নোটিফিকেশনের ওপর ভিত্তি করে ২০ লক্ষ বার পর্যন্ত রঙ স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিবর্তিত হবে।
প্রযুক্তি উদ্ভাবক এবং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর এই ভোলোসিটিতে মোটোরোলা তাদের ব্র্যান্ড-নিউ রেজর রোলিং স্মার্টফোনটি প্রদর্শন করেছে। এখানে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে মটোরোলার ভাঁজ প্রযুক্তি। ৫ ইঞ্চি পর্দার ফোনটি ওপরের দিকে ওঠাতেই বেড়ে যায় আরো এক ইঞ্চি। অর্থাৎ পকেটে ফোনটি স্বাচ্ছন্দে রাখার পাশাপাশি কাজের সময় মাল্টিটাস্ক করতে এর পর্দাও প্রশস্ত হয়। ফোনটি এখনো কনস্পেট ধাপেই রয়েছে।
এদিকে চলতি মোবাইল কংগ্রেসে নতুন এআর চশমা প্রকাশ করেছে শাওমি। এই ওয়্যারলেস অগমেন্টেড রিয়েলিটি চশমায় সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে চিনা সংস্থা। যদিও এখনও পুরোদমে এর উত্পাদন শুরু হয়নি। এই কনসেপ্ট ডিভাইস এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে ব্যবহারকারীরা স্মার্টফোন ব্যবহার না করেই এই চশমার এমবেডেড ক্যামেরার মাধ্যমে সব কাজ সারতে পারেন। চশমা পরেই ব্যবহারকারীরা কোনও অ্যাপ খোলা, পেজ সোয়াইপ করা এবং ইত্যাদি সমস্ত নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। তবে শাওমির এই কনসেপ্ট ভার্সানের ওজন সাধারণ চশমার তুলনায় বেশি। সাধারণ চশমার ওজন ২০-২৫ গ্রাম হয়। তবে শাওমি-র ওয়্যারলেস এআর গ্লাসের ওজন ১২৬ গ্রাম (৪.৪ আউন্স)।
এর বাইরে হুয়াওয়ের নতুন স্মার্টফোন মেট ৫০ প্রো পরখ করে দেখছেন দর্শনার্থীরা। অনেকরই আগ্রহ আবার হুয়ওয়ের ভাঁজ করা নতুন স্মার্টফোন মেট এক্সএস–২-এ। মেলায় ক্লাউড প্রযুক্তিতে সচল প্রাণীর মতো দেখতে এক রোবটও দেখাচ্ছে হুয়াওয়ের মোবাইল আর্টস।
এছাড়াও স্যামসাংয়ের প্রদর্শনী কেন্দ্রে উপস্থাপন করা হয়েছে তাদের সর্বশেষ মডেলের স্মার্টফোন এস টোয়েন্টি-৩ তৈরির পুরো উৎপাদন প্রক্রিয়া। ইনটেল দেখিয়েছে আগামী প্রজন্মের কম্পিউটারের সম্ভাব্য প্রসেসর। অরেঞ্জ দেখিয়েছে অদূর ভবিষ্যতের স্মার্ট প্রযুক্তির সঙ্গে মানুষের আবেগ কীভাবে মিশে যাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জাদুস্পর্শে। পুরো একটা স্মার্ট সিটি যেনো হাজির করেছে জেডটিই। এছাড়াও চালকহীন হেলিকপ্টারের পাশাপাশি ফাইভজি কতটা বদলে দেবে বিশ্বকে, সেই আবহ তুলে ধরা হয়েছে জার্মানির টি-মোবাইলের স্টলে।
প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ার স্টার্স্টআপ পেটনাউয়ের এনেছে পোষা প্রাণী শনাক্তের একটি অ্যাপ। শনাক্ত করার জন্য আগে থেকে পোষা প্রাণীর মুখ স্ক্যান করে নেওয়া হয় অ্যাপে। পেটনাউয়ের মাইক্রোচিপ বসানো কলার পরা থাকলে সেই প্রাণীর চলাচলও পর্যবেক্ষণ করা যায়।
এবার মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সঙ্গে যৌথভাবে চন্দ্রপৃষ্ঠে ডেটা নেটওয়ার্ক স্থাপন করতে চাইছে ফিনল্যান্ডের মোবাইল টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান নকিয়া। আর সেটাই প্রদর্শন করা হচ্ছে এমডব্লিউসিতে। নকিয়ার তথ্যমতে, মহাকাশে নভোচারীদের একজনের সঙ্গে অন্যজনের যোগাযোগের প্রয়োজন পড়ে। কথা বলা ও বার্তা আদান–প্রদান করার জন্য মুঠোফোনের প্রয়োজনও তাঁদের রয়েছে। এ ছাড়া হাই–ডেফিনেশন ভিডিও স্ট্রিমিং, দূর নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন যন্ত্রের সেন্সরসহ নানা প্রযুক্তির সুবিধা পেতে নকিয়া ও নাসা চাঁদে নেটওয়ার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।
নকিয়ার মতো ষষ্ঠ প্রজন্মের বেতার কেন্দ্র থেকে ফাইভ–জি নেটওয়ার্কে চলা স্বয়ংক্রিয় যান দেখাচ্ছে এরিকসন। রোলেবল ডিভাইস অবমুক্ত করেছে লোনোভো। এই প্রযুক্তিতে পিসির স্কৃন পেচিয়ে গুছিয়ে রাখা যায় ল্যাপটপের ভেতর। আর ফোনের স্কৃন ক্লিক করা মাত্র বেরিয়ে আসে ভেতর থেকে।
উদ্ভাবনের মেলায় স্পেনের প্রতিষ্ঠান অ্যাবল হিউম্যান মোশনের তৈরি এক্সোস্কেলেটন যন্ত্রটি মোবাইল অ্যাপ দিয়ে চালানো যায়। এই যন্ত্র ব্যবহার করে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী মানুষ চলাচল করতে পারবেন।
শুধুকি তাই মোবাইল কংগ্রেসে আসা অনেক দর্শকই কুকুরের মতো দেখতে গো–১ রোবট ছুঁয়ে দেখছেন। এই রোবট বানিয়েছে ইউনিট্রি। জাপানের ই–স্পোর্ট প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান হাদোর তৈরি অগমেন্টেড রিয়েলিটির চশমা পরে ভবিষ্যম স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র-মানব সভ্যতার অভিজ্ঞতা নিচ্ছেন দর্শক।
‘দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্বের জন্য মানুষকে ক্ষমতায়িত করতে আগামী দিনের প্রযুক্তি উন্মোচিত হোক আজ’ স্লোগানে ‘যান্ত্রিকতা নয় যন্ত্রের সঙ্গে মানুষের মানবিক সম্পর্ক’ প্রতিষ্ঠার অভিলক্ষ্ বাস্তাবায়নে স্পেনের বার্সেলোনা শহরে শুরু হয়েছে ওয়ার্ল্ড মোবাইল কংগ্রেস-২০২৩। আগামী ৩ মার্চ শেষ হবে পাঁচ দিনের এই প্রযুক্তির মহাসম্মেলন। সম্মেলন প্রাঙ্গনের দুই কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানের প্যাভিলিয়ন।
এসব প্যাভিলিয়নে নতুন ধরনের ডিভাইস, নতুন ধরনের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, এমনকি আগামীতে কী ধরনের প্রযুক্তি আসছে, সে বিষয়গুলোও তুলে ধরা হয়েছে। অংশ নিয়েছে স্যামসাং, জেডটিই, হুয়াওয়ে, শাওমি, অপো, অরেঞ্জ, টি মোবাইল, ইনটেল, মাইক্রোসফট, অ্যাপল, এরিকসনের মতো শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিধিরা অংশ নিলেও অংশ নেয়নি কোনো প্রতিষ্ঠান।
বিশ্বের ১৫২টি দেশের দেড় লাখেরও বেশি মানুষের এই মহাসম্মিলনে প্রথমবার অংশ নিয়ে ‘ক্যামেলিয়ন কালার চেঞ্জিং প্রযুক্তি’ উন্মোচন করেছে টেকনো। রঙ-পরিবর্তনের এই প্রযুক্তি স্মার্টফোন মার্কেটে কোনও নতুন ধারণা নয়। অনেক হ্যান্ডসেটই বর্তমানে কালার-চেঞ্জিং ব্যাক সহ বাজারে বিদ্যমান। এমনকি টেকনোরই Camon 19 Pro Mondrian Edition-এর একটি বিশেষ সংস্করণ রয়েছে যা সূর্যের আলোর সংস্পর্শে এলে রঙ পরিবর্তন করে। তবে এই প্যানেলগুলির অসুবিধা হল যে খুব কম কালার অপশন রয়েছে এবং সেগুলি পছন্দমতো বা ম্যানুয়ালি পরিবর্তন করা যায় না। তবে টেকনোর ব্যবহারকারীরা এই বিশেষ প্রযুক্তি সমন্বিত ডিভাইসের সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে সাব-মাইক্রোন প্রিজম বিন্যাসকে ম্যানিপুলেট করতে মোট ১৬০০টি ভিন্ন রঙ থেকে ম্যানুয়ালি নির্বাচন করতে পারেন, অথবা এটি ব্যাটারির লেভেল, মিউজিক বা নোটিফিকেশনের ওপর ভিত্তি করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিবর্তিত হতে পারে। এই পদ্ধতিতে ২০ লক্ষ বার পর্যন্ত রঙ পরিবর্তন করা যেতে পারে, যা এটিকে অত্যন্ত টেকসই করে তোলে।
প্রযুক্তি উদ্ভাবক এবং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর এই ভোলোসিটিতে মোটোরোলা তাদের ব্র্যান্ড-নিউ রেজর রোলিং স্মার্টফোনটি প্রদর্শন করেছে। এখানে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে মটোরোলার ভাঁজ প্রযুক্তি। ৫ ইঞ্জি পর্দার ফোনটি ওপরের দিকে ওঠাতেই বেড়ে যায় আরো এক ইঞ্চি। অর্থাৎ পকেটে ফোনটি স্বাচ্ছন্দে রাখার পাশঅপাশি কাজের সময় মাল্টিটাস্ক করতে এর পর্দাও বড় হয়ে যায়। ফোনটি এখনো কনস্পেট ধাপেই রয়েছে।
এদিকে চলতি মোবাইল কংগ্রেসে নতুন এআর চশমা প্রকাশ করেছে শাওমি। এই ওয়্যারলেস অগমেন্টেড রিয়েলিটি চশমায় সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে চিনা সংস্থা। যদিও এখনও পুরোদমে এর উত্পাদন শুরু হয়নি। এই কনসেপ্ট ডিভাইস এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে ব্যবহারকারীরা স্মার্টফোন ব্যবহার না করেই এই চশমার এমবেডেড ক্যামেরার মাধ্যমে সব কাজ সারতে পারেন। চশমা পরেই ব্যবহারকারীরা কোনও অ্যাপ খোলা, পেজ সোয়াইপ করা এবং ইত্যাদি সমস্ত নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। তবে শাওমির এই কনসেপ্ট ভার্সানের ওজন সাধারণ চশমার তুলনায় বেশি। সাধারণ চশমার ওজন ২০-২৫ গ্রাম হয়। তবে শাওমি-র ওয়্যারলেস এআর গ্লাসের ওজন ১২৬ গ্রাম (৪.৪ আউন্স)।
এছাড়াও মেলায় স্যামসাংয়ের প্রদর্শনী কেন্দ্রে উপস্থাপন করা হয়েছে তাদের সর্বশেষ মডেলের স্মার্টফোন এস টোয়েন্টি-৩ তৈরির পুরো উৎপাদন প্রক্রিয়া। ইনটেল দেখিয়েছে আগামী প্রজন্মের কম্পিউটারের সম্ভাব্য প্রসেসর। অরেঞ্জ দেখিয়েছে অদূর ভবিষ্যতের স্মার্ট প্রযুক্তির সঙ্গে মানুষের আবেগ কীভাবে মিশে যাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জাদুস্পর্শে। পুরো একটা স্মার্ট সিটি যেনো হাজির করেছে জেডটিই। এছাড়াও চালকহীন হেলিকপ্টারের পাশাপাশি ফাইভজি কতটা বদলে দেবে বিশ্বকে, সেই আবহ তুলে ধরা হয়েছে জার্মানির টি-মোবাইলের স্টলে।
এর আগে সোমবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় স্পেনের রাজা ফিলিপে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। এ সময় স্পেনের প্রেসিডেন্ট প্রেডো সানচেজসহ অনুষ্ঠানে বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ সেবাদাতা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সংগঠন জিএসএমএর চেয়ারম্যান হোসে মারিয়া আলভারেজ প্যালেট লোপেজসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।