মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানোর প্রথম প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছে যুক্তরাজ্য। পশ্চিম ইউরোপ থেকে উৎক্ষেপণের পরপরই রকেটটি একটি সমস্যায় পড়ে লঞ্চারওয়ানের’ উৎক্ষেপণ। ফলে মহাকাশ কক্ষপথে সফলভাবে স্যাটেলাইটগুলো স্থাপন করতে পারেনি। মাঝ পথেই সেগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে।
এর মধ্যে দিয়ে মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে ব্রিটেনের প্রথম ইউরোপীয় হওয়ার প্রচেষ্টা হতাশার মধ্যদিয়ে শেষ হলো। যুক্তরাজ্যের ভূমি থেকে সর্বপ্রথম রকেট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করেছিল এর নির্মাতা ভার্জিন অরবিট। এ ছাড়া, পশ্চিম ইউরোপ থেকে মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানোরও প্রথম ঘটনা হতো এটি।
যুক্তরাজ্যর স্পেস এজেন্সি এবং ব্রিটিশ এয়ারলাইন টাইকুন রিচার্ড ব্র্যানসন কনসোর্টিয়ামের মালিকানাধীন ভার্জিন অরবিট বোয়িং ৭৪৭ এয়ারক্রাফটকে রুপান্তরিত করে নয়টি ছোট স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠানোর চেষ্টা করছিল।
উৎক্ষেপণ মিশনটি দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ডের উপকূলীয় শহর নিউকুয়ে থেকে স্থানীয় সময় সোমবার রাত আটটায় ‘কসমিক গার্ল’ নামে পরিচিত ‘৭৪৭’ বিমান রকেটকে সাথে নিয়ে কর্নওয়াল এয়ারপোর্ট নিউকি-এর নতুন লঞ্চস্টেশন থেকে উৎক্ষেপণ হয়।
উৎক্ষেপণ পরিচালনাকারী কোম্পানি ভার্জিন অববিট বলছে, আমাদের একটা অসঙ্গতি রয়েছে, যা আমাদেরকে কক্ষপথে পৌঁছাতে ব্যর্থ করেছে বলে মনে হচ্ছে। কসমিক গার্ল নির্ভুল ভাবে লঞ্চার ওয়ানকে বহন করে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত নিয়ে যায়। ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট পর রকেটটি কসমিক গার্ল থেকে আলাদা হয়ে যায়। সেই সময়ই ব্যতিক্রমী ঘটনার জেরে তা কক্ষচ্যুত হয়ে হারিয়ে যায়। এছাড়াও ব্যর্থতার কারণ বিশ্লেষণ করছেন বলেও জানান কোম্পানিটি।
কোম্পানির অফিসিয়াল লাইভ স্ট্রিমেও একই ধরনের ঘোষণা এসেছে। এতে মিশন নিয়ন্ত্রকদের রকেটে ‘অসংগতি’র বিষয়টি ঘোষণা দিতে দেখা গেলেও পরবর্তীতে এই বিষয়ে তারা কোনো তথ্য দেয়নি ও এর সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়।
যুক্তরাজ্যের মহাকাশ শিল্পে ৪৭ হাজার লোকবল রয়েছে। কিন্তু দেশটি উৎপাদিত স্যাটেলাইটের সংখ্যার দিক দিয়ে এখনো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরের অবস্থানে। তারপরও তাদের দীর্ঘকাল ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কাজাখিস্তানের মতো দেশগুলির দ্বারা পরিচালিত বিদেশি মহাকাশ বন্দরের মাধ্যমে স্যাটেলাইট পাঠাতে হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে ব্রিটিশ উদ্যোক্তা রিচার্ড ব্র্যানসনের বাণিজ্যিক স্পেস কোম্পানি ‘ভার্জিন গ্যালাকটিক’ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর, গত বছর এটি শেয়ারবাজারে নাম লেখায়। তবে, এর পর থেকেই কোম্পানির শেয়ারের দাম ৮০ শতাংশ কমে যায়। ফলে, এর আর্থিক অবস্থা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কার কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্যইন্ডিপেন্ডেন্ট।