খাবার উপযোগী লবণ পাওয়া গেছে সৌরমণ্ডলের বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতির একটি উপগ্রহে। ইউরোপা নামক ওই উপগ্রহটি নিয়ে বেশ অনেকদিন থেকেই গবেষণা করে আসছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, ওই চাঁদটিতে আমাদের পৃথিবীর মতোই পানির উৎস রয়েছে। হতে পারে সেগুলো বড় বড় সাগর এবং মহাসাগর। বরফে ঢাকা এসব সাগরে লবণের উপস্থিতি রয়েছে বলে মনে করছেন গবেষকরা। তারা ওই লবনে সোডিয়াম আয়নের উপস্থিতি আছে বলেও জানিয়েছেন।
গত বুধবার আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী সায়েন্স অ্যাডভান্সেস-এ একটি গবেষণা পত্রে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
মহাকাশ বিজ্ঞানীদের পুরনো একটি ধারণা হলো, বৃহস্পতির উপগ্রহ ইউরোপা অনেকটাই তালের শাঁসের মতো। এর ভেতরের অংশে রয়েছে বিশাল বিশাল সাগর এবং মহাসাগর। বিজ্ঞানীদের কাছে সবসময়ই মুখিয়ে থাকেন এইসব সাগর মহাসগরে কী আছে সে রহস্য উন্মোচন করতে। কেউ কেউ ধারণা করতেন এই সাগরগুলো তরল পানিতে সমৃদ্ধ। আবার কারো ধারণা এগুলো মিথেন বা ইথেন জাতীয় তরল গ্যাসে পরিপূর্ণ।
কিন্তু এই গবেষণাপত্রে যা বলা হয়েছে তার ফলে এইসব ধোঁয়াশার অনেকখানিই কেটে গেছে। এর ফলে জানা গেছে এই উপগ্রহটিতে পৃথিবীর মতোই পানির উপস্থিতি রয়েছে বিপুল পরিমাণে। এর কারণ হিসেবে গবেষকরা বলছেন আমাদের গ্রহের পানিতে যে লবণ রয়েছে তাতেও যথেষ্ট পরিমাণ সোডিয়াম ক্লোরাইড রয়েছে।
বিভিন্ন দৃশ্যমান আলোর বর্ণালি বিশ্লেষণ করার পর ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং পাসাডোনায় নাসার জেট প্রপালসসান ল্যাবের বিজ্ঞানীরা এই তথ্য উদঘাটন করতে পেরেছেন। তারা বলছেন, মাঝারি আকারের এই উপগ্রহটির পৃষ্ঠে যে হলুদ ছোপ দৃশ্যমান তা আসলে খাবার লবণ। সোডিয়াম ক্লোরাইড সমৃদ্ধ এই জায়গাটির নাম দেয়া হয়েছে তারা রেজিও।
গবেষকদের একজন ডক্টর গৌতম চট্টোপাধ্যায় দিয়েছেন আরও চমকপ্রদ এক তথ্য। নাসার জেট প্রপালসান ল্যাবের এই বিজ্ঞানী জানান, ‘ইউরোপায় যে সাগর বা মহাসাগর রয়েছে তা সত্যি পানিতে পূর্ণ। কিন্তু এগুলোর বয়স খুব বেশি না। এখানে সব বরফে আবৃত হয়ে আছে। এটি কয়েকশো কোটি বছরের পুরনো না হলেও দ্রুতই এটি বদলে যাচ্ছ। এতে করে ধারণা করা যায় এই উপগ্রহটি সজীব হয়ে উঠতে পারে।‘