প্রতিনিয়ত প্রযুক্তি বিশ্বে দুর্বার হয়ে উঠছে গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম বা জিপিএস। সামরিক কাজের জন্য শুরু হলেও এখন তা বদলে দিচ্ছে বেসামরিক জীবন যাপনকেও। প্রভাব ফেলছে প্রযুক্তি ও মনের ওপর। আর এই অবস্থাটিকে নিয়ে শঙ্কায় আছেন প্রাজ্ঞ জনেরা।
এই যেমন পিনপয়েন্ট বইয়ের লেখক গ্রেগ মিলনার বলেছেন, কিভাবে জিপিএস বিশ্বকে পরিবর্তন করলো এমন প্রশ্ন করলে বলতে হবে মানুষের শরীরের রেসপিরেটরি সিস্টেমের জন্য অক্সিজেন যতটা মূল্যবান, বিশ্বের জন্য জিপিএস সে রকম।
বস্তুতপক্ষে জিপিএস একমাত্র গ্লোবাল নেভিগ্যাশনাল স্যাটেলাইট সিস্টেম নয়। রাশিয়ারও এ ধরণের একটি পদ্ধতি আছে যার নাম গ্লোনাস। যদিও এটা খুব একটা ভালো মানের নয়। চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও নিজস্ব প্রকল্প আছে। জাপান ও ভারতও এগুলো নিয়ে কাজ করছে।
এসব বিকল্প স্যাটেলাইট জিপিএসের সমস্যা নিরসনে সহায়তা করতে পারে। তবে এটি সামরিক সংঘাতও বাড়াতে পারে। জন্ম দিতে পারে নতুন একটি স্পেস ওয়ারের।
স্যাটেলাইট পরিচালনায় ভূমি ভিত্তিক বিকল্পও আছে। এর প্রধানটির নাম ইলোরান। কিন্তু এটি সারা বিশ্বে কাজ করে না। তাব এগুলোর উদ্বেগজনক কাজে ব্যবহার কিভাবে কমানো যায় সে বিষয়েও আগামীতে সোচ্চার হওয়ার পরামর্শ মানবতাবাদীদের।
প্রসঙ্গত, জিপিএস চব্বিশটি স্যাটেলাইটের সমন্বয়ে করা একটি পদ্ধতি। এগুলোর সাথে ঘড়ির সময় মেলানো বা সিন্ক্রোনাইজ করা। যখন আপনার স্মার্ট ফোন জিপিএস ব্যবহার করে আপনার অবস্থান ম্যাপে খুঁজে বের করে, তখন এটা আসলে কোনো একটি স্যাটেলাইট থেকে সিগন্যাল গ্রহণ করে এবং সিগন্যাল পাঠানোর সময়ের ভিত্তিতে হিসাব করে। ফলে এক সেকেন্ডের এক লাখ ভাগের এক ভাগের হেরফেরেও ঘটাতে পারে বড় বিপত্তি। ব্যাংক পেমেন্ট, স্টক মার্কেট, বিদ্যুতের গ্রিড, ডিজিটাল টেলিভিশন-সবই নির্ভর করে বিভিন্ন জায়গায় সময়ের ওপর। আর জিপিএস এগুলোতে কাজ করতে ব্যর্থ হলে এর পরিণতি কতটা ব্যাপক হবে তা আসলে এখন কেউ ধারণাও করতে পারেনা। জিপিএসকে এখন বলা হয় অদৃশ্য সেবা। এর ডলার মূল্য নিরুপন অসম্ভব।
ডিজিবাংলা/আএইচ