৭ম নারী গণিত অলিম্পিয়াড-২০২৩ এ প্রথম স্থান হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবিহা তাসমিন এবং বুয়েটের শিক্ষার্থী শ্রাবনী শিকদার। শনিবার সন্ধ্যায় বিজয়ী প্রতিযোগীদের মাঝে সনদ, ক্রেস্ট ও প্রাইজ মানি তুলে দেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
এসময় তিনি বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী শিক্ষা সম্প্রসারণে বাংলাদেশ পৃথিবীর অনুকরণীয় দেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমাদের মেয়েরা শিল্প বাণিজ্যে অনন্য ভূমিকা পালন করছে।
তিনি জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে মন্ত্রী বিজ্ঞান চর্চা উৎসাহিত করতে গণিত প্রতিযোগিতাকে অত্যন্ত কার্যকর একটি উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, গণিত হচ্ছে বিজ্ঞানের ভিত্তি। আমাদের মেয়েরাও এখন জ্ঞান বিজ্ঞানের সকল শাখায় অনেক সক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে। তারা এখন গণিত অধ্যয়নই কেবল করছে না প্রতিযোগিতায়ও অংশ নিচ্ছে- জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার তারা অর্জন করছে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন. আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নিজেদের ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে তৈরি করতে হবে। ডিজিটাল যন্ত্র প্রয়োগ করার সক্ষমতা অর্জন করার জন্য নিজের প্রচেষ্টা থাকলেই যথেষ্ট এ জন্য কম্পিউটার বিজ্ঞানী হওয়ারও প্রয়োজন নেই বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী আরো বলেন, সমাজ ও রাষ্ট্রের অগ্রগতিতে নারীরা বহুমুখী ভূমিকা পালন করে। তারা কেবল রান্না বান্না, সন্তান মানুষ করা ও বাসন ধোয়ার কাজ করেনা তাদের ওপর দায়িত্ব থাকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সঠিক পথে পরিচালনা করার। তিনি নারীদেরকে নিজেদেরকে ডিজিটাল মাধ্যমে হয়রানি থেকে বাচিয়ে রাখার কৌশল জানান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করার ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ন্ত্রণ করার উপায় জানান।
তিনি বলেন, ডিজিটাল জগতে বিশেষত নারীদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সরকার সর্বোচ্চ দৃষ্টি দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে নারী গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির উদ্যোগে এবং এ এফ মুজিবুর রহমান ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগ এবং ফলিত গণিত বিভাগ সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পর্যায়ের ছাত্রীদের মধ্যে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ উইমেন্স ম্যাথমেটিক্স অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মোহাম্মদ সামাদ. বিজ্ঞান বিভাগের ডিন ড. মোহাম্মদ আব্দুস ছামাদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, নারী নেত্রী খুশি কবির এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো: শহীদুল ইসলাম বক্তৃতা করেন।
উপ- উপাচার্য ডঃ মোহাম্মদ সামাদ বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ এই অঞ্চলের অগ্রগামি দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। তিনি বলেন, গণিত অলিম্পিয়াডের মতো একটি প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণ আমাদের জন্য অত্যন্ত উৎসাহ ব্যাঞ্জক। তিনি বলেন, প্রযুক্তি ধারণ করতে হয়। চেষ্টা থাকলে বিজ্ঞানী না হয়েও মানব কল্যাণে উদ্ভাবন করা যায়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বাংলার ছাত্র হয়েও দেশের মুদ্রণ শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটিয়েছেন।
ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। তাদের পিছিয়ে রেখে এগিয়ে যাওয়া যাবে না।
খুশী কবির বলেন, মেয়েরা গণিত চর্চায় অতীতের তুলনায় অনেক বেশি এগিয়ে এসেছে এবং ভাল করছে। তিনি গণিত চর্চা উৎসাহিত করতে এই ধরণের প্রতিযোগিতা ফলপ্রসূ অবদান রাখবে বলে উল্লেখ করেন।