তিন দিনের ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলায় ভিআর ও ফাইভজি প্রযুক্তিকে ছাড়িয়ে দর্শনার্থী থেকে পর্যবেক্ষক সবারই চোখ ধাঁধিয়েছে দেশীয় উদ্ভাবন। সীমিত পরিসরে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও স্টার্টআপগুলোর মধ্য থেকে মেলায় অংশ নিয়েছিলো অর্ধশতাধিক উদ্ভবন। এর মধ্য থেকে পুরস্কৃত করা হয় সেরা তিনটি উদ্ভাবনকে। সার্বিক মূল্যায়ণে প্রথম হয়েছে ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্স শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবন সেল্ফ ব্যালান্সিং রোবট ও ব্যালান্সিং কিউব ।
মেলায় উদ্ভাবনে সেরা মনোনীত হয়ে উদ্ভাবক দলের প্রধান মুহাম্মদ আরিফুল হক শুহান-কে সঙ্গে নিয়ে সম্মাননা গ্রহণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান শায়েক মো. বুলান্দ তসলিম। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক সানজিদা মুশফিক নোভা ছাড়াও এই গবেষণা ও উদ্ভাবনে তার সহযোগী ছিলেন একই বিভাগের আরো চার শিক্ষার্থী। এরা হলেন- আফরান হোসেন রেজা, মাহফুজুর রহমান মিতুল, ইসমাইল শেখ নয়ন এবং আব্দুল্লাহ আল মুতাসিম।
উদ্ভাবন সম্পর্কে ডিজিবাংলা-কে শায়েক মো. বুলান্দ তসলিম জানিয়েছেন, ইনভার্টার পেন্ডুলাম ফিজিক্সকে কেন্দ্র করেই তাদের এই উদ্ভাবন। এই উদ্ভাবনটির মাধ্যমে তারা এমন একটি অ্যাপ্লিকেশন নকশা করেন যেটি ব্যবহার করলে গতিশীল কোনো দ্বিচক্র যান নিজে থেকেই ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে। প্রযুক্তিটি বিমান বন্দরেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানের শনিবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে এই উদ্ভাবকের হাতেই পুরস্কার তুলে দেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রদর্শন করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ আয়োজিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা-২০২৩’-তে উদ্ভাবন ক্যাটাগরিতে দ্বিতীয় হয়েছে স্বয়ংক্রিয় ভাবে বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জিং স্টেশন। আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া এই উদ্ভাবকেরা হলেন- আরিফা আক্তার, মোহাম্মদ শাহেদ হোসাইন, মো: তৌহিদুল ইসলাম ও সৈয়দ আশফাকুল জামী। আট মাস ধরে হাইব্রিড চার্জিং স্টেশনের আইডিয়া নিয়ে কাজ করছেন তারা। কিছু যন্ত্রপাতির সংযোজন ছাড়া প্রটোটাইপ প্রজেক্ট নিয়ে অংশ নিয়েছিলেন মেলায়।
গবেষক দলের সদস্য আরিফা জানিয়েছেন, এই চার্জিং স্টেশনটি পরিবেশ বান্ধব ও টেকসই মডেলের। মডেলটি তৈরিতে খরচ করছেন ৫০ হাজার টাকা। আর এই চার্জিং স্টেশন থেকে ৩৫ মিনিটের মধ্যে একটি গাড়ি চার্জ দেয়া যায়।
উদ্ভাবনে তৃতীয় হয়েছে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবন ‘অ্যাডভাইজার বাংলাদেশ’ প্রকল্প।
আগ্রহীরা তাদের নিকটস্থ অর্থনৈতিক বিষয়ের পরামর্শক সেবা নিতে পারবেন এই ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনটির মাধ্যমে। ‘ল্যাম্প টেক্স’ নামের স্টর্টআপ প্রতিষ্ঠানের এই উদ্ভাবকরা হলেন কাজী ইমদাদুল হক, সৈয়দ শাহাবুদ্দিন ও কাজী মজিবুল হক। ইমদাদ জানান, যদি কারো ট্যাক্স, হিসাব নিরীক্ষণের মতো সহায়তা চান তবে তারা তাদের অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে সহজেই নিকটতম পরমার্শকের সঙ্গে এনক্রিপ্টেড যোগাযোগের মাধ্যমে সেবা পেতে পারবেন সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে।