বছরব্যাপী পাইলট প্রকল্প সফলভাবে শেষ করার পর দেশে প্রথমবারের মতো জামানতবিহীন ইনস্ট্যান্ট ডিজিটাল ন্যানো লোন নিয়ে এলো সিটি ব্যাংক। মেবাইলে আর্থিক লেনদেন সেবা- বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে এই ঋণ পাবেন বিকাশ গ্রাহকেরা। এই ঋণের আওতায়, ঋণ প্রাপ্তির যোগ্যতা সাপেক্ষে গ্রাহক তাৎক্ষণিকভাবে বিকাশ অ্যাকাউন্টে ৫০০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত সিটি ব্যাংকের জামানতবিহীন ডিজিটাল ন্যানো লোন পাবেন। বার্ষিক ৯% ইন্টারেস্টে ৩টি মাসিক ইনস্টলমেন্টে বিকাশ অ্যাপ থেকেই ঋণ পরিশোধও করতে পারবেন ঋণগ্রহীতারা।
বুধবার রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত হোটেল শেরাটনে এই ডিজিটাল ঋণ সেবা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মোঃ নাছের ও সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার। সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মাসরুর আরেফিন এবং বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীর, সিটি ব্যাংকের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস-এর প্রধান মোঃ জাফরুল হাসান, বিকাশ-এর চিফ কমার্শিয়াল অফিসার আলী আহম্মেদসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিকাশের মাধ্যমে গ্রহণ ও পরিশোধযোগ্য সিটি ব্যাংকের এই জামানতবিহীন ইনস্ট্যান্ট ডিজিটাল ন্যানো লোন দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে একটি যুগান্তকারী সংযোজন। এর ফলে ব্যাংকিং সেবার বাইরে থাকা একটি বিশাল জনগোষ্ঠী কাগজবিহীন ডিজিটাল পদ্ধতিতে ঋণ প্রাপ্তির যোগ্যতা বিবেচনায় তাৎক্ষণিক ঋণ পাওয়ার সুযোগ পেলেন। যেকোনো স্থান থেকে যেকোনো সময় মোবাইল অ্যাপ দিয়েই একটি প্রতিষ্ঠিত বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছে ঋণের আবেদন করা এবং মোবাইল অ্যাপেই ঋণ পাওয়া, অপেক্ষাকৃত কম ইন্টারেস্টে ঋণ পরিশোধ ও ঋণ সম্পর্কিত তথ্য পাওয়ার সুযোগ গ্রাহককে সত্যিকার অর্থেই আর্থিক লেনদেনে আরো স্বাধীনতা ও সক্ষমতা এনে দিলো। এই উদ্যোগ বাংলাদেশ সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ভিশন বাস্তবায়নের পথেও একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।
গ্রাহকের বিকাশ লেনদেন এবং সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট পলিসির উপর ভিত্তি করে ঋণ পাওয়ার উপযুক্ততা এবং ঋণের পরিমান নির্ধারিত হবে। ডিজিটাল ন্যানো লোন চালু উপলক্ষে সিটি ব্যাংক ঋণগ্রহীতাদের কাছে থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত কোনো প্রসেসিং ফি নেবে না।
প্রযুক্তি সহায়তায় সিটি ব্যাংকের ডিজিটাল ন্যানো লোনের ক্ষেত্রে দৈনিক হারে ইন্টারেস্ট নির্ধারিত হবে। ফলে একজন ঋণগ্রহীতা মেয়াদ পূর্তির আগেও ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন এবং সেক্ষেত্রে তাকে শুধুমাত্র সেই ক’দিনের জন্যই সুদ বহন করতে হবে। অগ্রীম নিষ্পত্তির জন্যও কোনো বাড়তি খরচ হবে না। ঋণগ্রহীতাদের নোটিফিকেশন-এর মাধ্যমে ঋণ পরিশোধের নির্দিষ্ট তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।
সিটি ব্যাংকের ডিজিটাল ন্যানো লোন-এর মতো উদ্ভাবনী সেবা আনার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে বিকাশ ও এর কৌশলগত অংশীদার অ্যান্ট গ্রুপ। ঋণ নেয়ার জন্য উপযোগী গ্রাহককে তাদের বিকাশ অ্যাপের ‘ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লোন’ আইকনে ট্যাপ করতে হবে। পরবর্তী ধাপে সিটি ব্যাংক অনুমোদিত সীমার মধ্যে কাঙ্খিত ঋণের পরিমাণ লিখতে হবে এবং শর্তাবলীতে সম্মতি দিতে হবে। এরপর বিকাশ পিন দিলে সাথে সাথেই-অবশ্যই ঋণপ্রাপ্তির যোগ্যতাসাপেক্ষে-বিকাশ অ্যাকাউন্টে ঋণের টাকা পেয়ে যাবেন গ্রাহক।