লন্ডন ভিত্তিক এনজিও সিআই (কঞ্জুমার্স ইন্টারন্যাশনাল) এর উদ্যোগে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ি ভোক্তার স্বার্থে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করি’ প্রতিপাদ্যে শুক্রবার (১৫ মার্চ) দেশ ব্যাপী বিশ্ব ভোক্তা দিবস পালন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর। উৎসব উপলক্ষ্যে বরাবরের মতো সিআই সদস্য সংগঠন হিসেবে যৌথভাবে দিবসটি পালন করে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
তবে এই প্রতিপাদ্যটি বাংলাদেশের ভোক্তাদের জন্য সময় উপযোগী নয় ও তামাশা বলে মনে করে টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তি সেবায় নিয়োজিত সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন। একইসঙ্গে আগামী ৬ এপ্রিল বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে এই দিবসটি পালনের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। এর যুক্তি হিসেবে ২০০৯ সালের এই দিনটিতে অর্থাৎ জাতির জনকের জন্ম দিবসে সেদিন সংসদে জাতীয় ভোক্তা অধিকার আইন পাস হয়। তাই প্রতিবেশী দেশ ভারতের মতোই একদিনের পরিবর্তে মাস বা সপ্তাহ ব্যাপরী ভোক্তা দিবস পালন করার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
ঘোষিত ভোক্তা দিবস প্রতিপালনের একদিন আগে বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশে ভোক্তার স্বার্থ চরমভাবে লঙ্ঘিত। রমজানের তৃতীয় দিন অতিবাহিত হচ্ছে অথচ ভোক্তা অধিদপ্তর ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা গত প্রায় একমাস ধরে বাজারে অভিযানও সংকুচিত করেছে। অথচ রমজানের আজ তিনদিন অতিবাহিত হতে যাচ্ছে। খেজুরের দাম যখন ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকা, সরকারি জ্বালানির দাম উর্ধ্বগতি, বাজারে মাছ মাংস তরি তরকারি, মাছ, মাংস, শাকসবজি, ফলমূল, মসলা, এমনকি ঔষধ ভোক্তাদের সাধ্যের বাইরে তখন তাদেরকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখানো হাস্যকর ছাড়া কিছুই না।
‘সিআই একটি এনজিও; বিধায় তাদের প্রতিপাদ্য কখনো জাতীয় দিবস হতে পারে না’- যোগ করেন তিনি ।
মহিউদ্দিন বলেন, বিশ্ব ভোক্তা দিবস আমাদের জাতীয় দিবস নয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় অ্যামাজন, আলিবাবা, উবার ছাড়াও বেশ কিছু আন্তর্জাতিক বড় জায়ান্ট্র বিনিয়োগ করেছে। এর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে বিশ্বের বরেণ্য প্রযুক্তিবিদরা বিবৃতি দিয়ে বলছেন- এআই হবে মানব সভ্যতা ধ্বংসের অন্যতম হাতিয়ার। হলিউডের চিত্রনাট্যকার এবং লেখকরা এর বিরুদ্ধে মানববন্ধন পর্যন্ত বা ধর্মঘট করেছে। আমরা যদি লক্ষ্য করি, উচ্চতর ক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটার, রোবট ও অন্যান্য যন্ত্র এর অন্তর্ভুক্ত। ১৯৫৫ সালে প্রথম জন ম্যাক্যাথি সর্বপ্রথম এ আই যাকে আমরা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বলে থাকি। আমাদের দেশে ইতিমধ্যে এআই প্রযুক্তির ব্যবহার করে অপরাধ করার দায়ে ডিবি একজনকে গ্রেফতার করেছিল। অনেকের শ্রীলতা হানির অভিযোগও পাওয়া গিয়েছে। আমরা এটাও জানি, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তি সেবায় প্রতারিত হওয়ার কোন অভিযোগ গ্রহণ বা নিষ্পত্তি করেন না। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে এক দিকে এ আই ব্যবহার করতে বলবেন আবার অন্যদিকে প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ গ্রহণ করবেন না এটা সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।