‘এক বিশ্ব, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’ স্লোগানে ভারতে বসেছে ২০ দেশের অর্থনৈতিক জোট জি-২০ এর বার্ষিক সম্মেলন। শনিবার সকালে ভারতের ব্যাঙ্গালুরে হোটেল তাজ ওয়েস্ট ইন্ডে শুরু হওয়া সম্মেলনে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশসহ ৮টি দেশ। প্রত্যেক দেশের সমান অংশীদারিত্ব অটুট রাখতে প্রতিযোগিতার পরিবর্তে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে সহযাত্রী হিসেবে একসঙ্গে এগিয়ে যেতে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী জোটভুক্ত দেশগুলোর নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
“ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার” (ডিপিআই) বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের এই বৈঠকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সমাজ বিনির্মাণে সফরে এনপিসিআই, আরবিআই, ইঃগভ ফাউন্ডেশন একটেক এবং অন্তর্ভূক্তি মূলক প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্ষমতায়ন নিয়ে একটি নতুন প্রকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকের কথা তুলে ধরেন পলক। বলেছেন, ডিজিটাল জন অবকাঠামো উন্নয়নে ভারতের ব্যবহৃত টুলগুলো ব্যবহার করতে আগ্রহী বাংলাদেশ।
সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী আরো বলেছেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও ডিজিটাল অর্থনীতি ও সমাজ গড়ে তুলতে ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্টাকচার অথবা ডিপিআই-কে সক্ষমতার চাবিকাঠি হিসেবে ব্যবহার করছে। গত ১৪ বছরে ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনবদ্য নেতৃত্বে এরই মধ্যে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করেছে। বস্তুত, সুলভ ও সহজলভ্য ইন্টারনেট, ডিজিটাল যাচাইযোগ্য পেমেন্ট প্লাটফর্ম, স্মার্ট ভেরিফাইয়েবল আইডি এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডিজিটাল আক্টিটেক্চার নিশ্চিত করা হয়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহারে নাগরিক সচেতনতা তৈরি করায় দেশে এখন ১৩ লাখ মানুষ ইন্টারনেট সংযুক্ত। লক্ষাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৮০ হাজার সরকারি অফিসে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ৫২ হাজার ওয়েবসাইট তৈরি এবং একটি মাত্র মোবাইল গভঃ অ্যাপ থেকে এসব সেবা মিলছে। এছাড়াও সরকারের ৮৩ ধরণের সেবা উপভোগ করতে পারছেন ১২ কোটি স্মার্ট আইডি কার্ডধারী।
পলক বলেন, ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ স্থাপনের সিদ্ধান্ত দেয়ার পর এখন দেশে ৭১ মিলিয়ন মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল ওয়ালেট সৃষ্টি হয়েছে। একইভাবে আন্তঃলেনদেনের প্লাটফর্ম ‘বিনিময়’ স্থাপনের পর এখন সব ধরণের পেমেন্ট গেটওয়ে ও অ্যাকাউন্টের মধ্যে আন্তঃলেনদেন ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দেশের সবগুলো সরকারি সংস্থাগুলো এখন ন্যাশনাল ডিজিটাল আর্কিটেকচার অনুসরণ করে সংশ্লিষ্ট প্লাটফর্ম ‘মিয়াবাস’ ব্যবহার করছে।
ভারতের ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সভাপতিত্বে মন্ত্রীপরিষদ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন মিশরের যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী ড. ওমর এস তালাত, মরিশাস এর তথ্যপ্রযুক্তি, যোগাযোগ ও উদ্ভাবন বিষয়ক মন্ত্রী দর্শনান্দ বালগোবিন, নেদারল্যান্ডস এর স্টেট সেক্রেটারি আলেকজান্দ্রা কার্লাভ্যান হাফেলেন, নাইজেরিয়ার পার্লামেন্ট সেক্রেটারি ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ড. উইলিয়াম আলো, ওমানের আন্ডার সেক্রেটারি ড. আলি আমুর আল শিদানি, সিঙ্গাপুরের যোগাযোগ ও তথ্য মন্ত্রী জোসেফিনে তিও এবং আরব আমিরাতের আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স, ডিজিটাল ইকোনোমি ও রিমোট ওয়ার্ক অ্যাপলিকেশন্স মন্ত্রী ওমর আল ওলামা।