প্রিমিয়াম কোয়ালিটিতে এই মুহূর্তে দেশে হুয়াওয়ের নোভা ফাইভটি, স্যামসাংয়ের এস ১০ই, অপো রেনো এবং শাওমি কে ২০ প্রো’র নাম উচ্চারিত হচ্ছে জোরো শোরে। কিন্তু এদের মধ্যে কোনটি সেরা তা জানতে হলে ফিচার ও দামের মধ্যে তুলনাই সহজ উপায়।
তাই কেনার আগেই আসুন জেনে নেয়া যাক এদের মধ্যে কোনটি আপনার জন্য যুতসই। একইসঙ্গে কতটা টেকসই ও ব্যবহার বান্ধব। অবশ্যই বাজেট বান্ধব কি না তাও এখান থেকেই জেনে নেয়া যাবে।
ক্যামেরা:
স্মার্টফোনে ক্যামেরা ফিচারটি এখন গ্রাহকদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোও ফোনগুলোতে প্রফেশনাল ক্যামেরা ফিচার রাখছে। স্মার্টফোনেই ওয়াইড অ্যাঙ্গেলের ছবি তোলার সুবিধা দিতে একাধিক ক্যামেরা জুড়ে দেয়া হচ্ছে। সবমিলিয়ে ক্যামেরা হয়ে দাঁড়িয়েছে স্মার্টফোন পছন্দ করার অন্যতম নিয়ামক।
দেশের বাজারে আলোচনায় থাকা ৪টি ফ্লাগশিপ ফোনের মধ্যে হুয়াওয়ে নোভা ফাইভটি ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে পাঁচটি এআই ক্যামেরা। ৩২ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরাসহ ফোনটির পিছনে রয়েছে ৪৮ মেগাপিক্সেল, ১৬ মেগাপিক্সেল, ২ মেগাপিক্সেল ও ২ মেগাপিক্সেলের চারটি ক্যামেরা। পেছনের ক্যামেরায় ব্যবহার করা হয়েছে ওয়াইড লেন্স, আল্ট্রা ওয়াইড লেন্স, ম্যাক্রো ও বোকেহ লেন্স।
অন্যদিকে স্যামসাং এস ১০ ই ফোনটিতে ১০ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরাসহ ব্যবহার করা হয়েছে ১২ মেগাপিক্সেল ও ১৬ মেগাপিক্সেলের দু’টি রিয়ার ক্যামেরা। রিয়ার ক্যামেরায় রয়েছে ওয়াইড ও আল্ট্রা ওয়াইড অ্যাঙ্গেলের দু’টি লেন্স।
এছাড়া অপো রেনোতে ব্যবহার করা হয়েছে ১৬ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা। এছাড়াও রয়েছে ৪৮ মেগাপিক্সেল ও ৫ মেগাপিক্সেলের দু’টি রিয়ার ক্যামেরা। এ ক্যামেরাগুলোতে রয়েছে ওয়াইড ও বোকেহ লেন্স।
আর শাওমির কে ২০ প্রো এই স্মার্টফোনটিতে ২০ মেগাপিক্সেলের একটি পপআপ সেলফি ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে। রিয়ার ক্যামেরায় দেওয়া হয়েছে ৪৮ মেগাপিক্সেল, ৮ মেগাপিক্সেল ও ১৩ মেগাপিক্সেলের তিনটি ক্যামেরা।
র্যাম, রম ও প্রসেসর:
স্যামসাং এস ১০ ই ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৮ ন্যানোমিটারের এক্সিনোস ৯৮২০ চিপসেট। ৬ জিবি র্যামসহ রয়েছে ১২৮ জিবি রম। এছাড়াও এতে রয়েছে মালি জি-৭৬ এমপি ১২ জিপিইউ প্রযুক্তি।
অন্যদিকে হুয়াওয়ে নোভা ফাইভটি ফোনটিতে ৭ ন্যানোমিটারের কিরিন ৯৮০ চিপসেটসহ ব্যবহার করা হয়েছে ৮ জিবি র্যাম। এছাড়াও ব্যবহার করা হয়েছে ১২৮ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ সুবিধা। পারফরমেন্স বাড়াতে এটিতে ব্যবহার করা হয়েছে মালি জি-৭৬ এমপি ১০ জিপিইউ প্রযুক্তি।
এছাড়া অপো রেনোতে ব্যবহার করা হয়েছে ১০ ন্যানোমিটারের স্ন্যাপড্রাগন ৭১০ চিপসেট। ৮ জিবি র্যামসহ রয়েছে ১২৮ জিবি রম ও অ্যাডরেনো ৬১৬ জিপিইউ প্রযুক্তি।
আর শাওমি কে২০ প্রোতে রয়েছে ৭ ন্যানোমিটারের স্ন্যাপড্রাগন ৮৫৫ চিপসেট। ৮ জিবি র্যামসহ ব্যবহার করা হয়েছে ২৫৬ জিবি রম।
ডিসপ্লে ও ব্যাটারি:
হুয়াওয়ে নোভা ফাইভটিতে ৬.২৬ ইঞ্চির আইপিএস এলসিডি ডিসপ্লে। ২২.৫ ওয়াট হুয়াওয়ে সুপার চার্জিং সুবিধাসহ এতে ব্যবহার করা হয়েছে ৩৭৫০ এমএএইচ ব্যাটারি।
অন্যদিকে ৫.৮ ইঞ্চির সুপার অ্যামলয়েড ডিসপ্লের স্যামসাং এস ১০ই ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ১৫ ওয়াট সুপারচার্জ সুবিধাসহ ৩১০০ এমএএইচের ব্যাটারি।
আর অপো রেনো ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৬.৪ ইঞ্চির অ্যামলয়েড ডিসপ্লে। ২০ ওয়াটের সুপার চার্জ সুবিধাসহ এতে ব্যবহার করা হয়েছে ৩৭৬৫ এমএএইচের ব্যাটারি।
এছাড়া শাওমি কে ২০ প্রো ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৬.৩৯ ইঞ্চির সুপার-অ্যামলয়েড ডিসপ্লে। এছাড়াও এতে রয়েছে ২৭ ওয়াটের সুপারচার্জ সুবিধাসহ ৪০০০ এমএএইচের ব্যাটারি।
দাম:
বাংলাদেশের বাজারে হুয়াওয়ে নোভা ফাইভটি ফোনটি পাওয়া যাচ্ছে ৪৯ হাজার ৯৯৯ টাকায়। স্যামসাংয়ের এস ১০ ই ফোনটি মিলছে ৭৪ হাজার ৯০০ টাকায়। এছাড়াও অপো রেনো ও শাওমি কে২০ প্রো এ স্মার্টফোন দু’টিও পাওয়া যাচ্ছে ৪৯ হাজার ৯৯০ ও ৪৯ হাজার ৯৯৯ টাকায়।
ফিচারের সঙ্গে দামের তুল্যমূল্য বিবেচনায় আপনার কাছে বাজেটবান্ধব মনে হবে আমরা সেটিকেই সেরা ফোন হিসেবে বেছে নিতে পারি। তাই ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা না পাওয়ার আগে এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো মন্তব্য করছি না। তবে এক্ষেত্রে ব্যান্ডভ্যালু এবং বিক্রয়োত্তর সেবা-কে গুরুত্ব দিলে কেনার পরে আপসোস করতে হবে না।