গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রাজধানীর গুলশান থানার মামলায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল এবং প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিচার শুরু হয়েছে।
বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) ঢাকা মহানগর হাকিম মেহেদী হাসানের আদালত তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার কাজ শুরু হলো। এসময় মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন আদালত।
বিচার কাজ শুরু হলে সকালেই কারাগারে আটক আসামি রাসেলকে আদালতে হাজির করা হয়। তবে জামিনে থাকা আসামি শামীমা নাসরিন উপস্থিত না হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে সময়ের আবেদন করেন। আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। একই সঙ্গে আসামি রাসেলের উপস্থিতিতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
মামলার আসামি ইভ্যালির আরেক কর্মকর্তা মইনুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের কোনো উপাদান না পাওয়ায় মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বাসিন্দা আরিফ বাকের গুলশান থানায় এই মামলা করেন। মামলার এজাহারে তিনি অভিযোগ করেন, ৩ লাখ ১০ হাজার ৫৯৭ টাকার পণ্য অর্ডার করেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা পাননি তিনি। এ মামলার তদন্ত শেষে তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির উপপুলিশ পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম গত ২৯ অগাস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
কয়েক বছর আগে ই-কমার্স ব্যবসার রমরমার শুরুতে গাড়ি, মোটরসাইকেল, গৃহস্থালির আসবাবপত্র, স্মার্ট টিভি, ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিনসহ বিভিন্ন পণ্য অর্ধেক দামে বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকদের নজরে এসেছিল ইভ্যালি। তাদের চমকদার অফারের ‘প্রলোভনে’ অনেকেই বিপুল অংকের টাকা অগ্রিম দিয়ে পণ্যের অর্ডার করেছিলেন, কিন্তু মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও তাদের অনেকে পণ্য বুঝে পাননি; ইভ্যালি অগ্রিম হিসেবে নেওয়া টাকাও ফেরত দেয়নি। এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার মধ্যে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে ইভ্যালিসহ আরও বেশ কিছু ই কমার্স কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বিক্ষোভে নামে গ্রাহকরা। তখন বেশ কিছু মামলাও হয়।
এরকমই এক গ্রাহকের করা মামলায় গত বছর ১৬ সেপ্টেম্বর রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। রিমান্ডে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। এরপর থেকে এই দম্পতির বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হচ্ছে।
আট মাস কারাবাসের পর সবগুলো মামলায় জামিন পেয়ে গত ৬ এপ্রিল কারামুক্ত হন ইভ্যালির সাবেক চেয়ারম্যান শামীমা। তবে তার স্বামী ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা রাসেল এখনও কারাগারেই আছেন।