সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্যতম আমিরাত দুবাইয়ে চলমান ৫ দিনের জিটেক্স ওয়ার্ল্ড সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে অংশ নিয়েছে ই-ক্যাব ও বেসিস। সম্মেলনের মধ্যভাগে, বৃহস্পতিবার দুবাইয়ের বাজারে বাংলাদেশী ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে পথ দেখাতে দিয়েরার ল্যান্ডমার্ক গ্র্যান্ড হোটেলে ‘দুবাই ই-কমার্স রোড শো’ করেছে সংগঠনটি।
ই-ক্যাব সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মাদ আব্দুল ওয়াহেদ তমালের সভাপতিত্বে তিনটি শেসনে অনুষ্ঠিত এই রোড-শোতে অংশ নেয় ই-ক্যাবের ৩৮টি সদস্য প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৭০ জন ব্যবসায়ী।
এসব শেসন থেকে দুবাইয়ের বাজারে বাংলাদেশী ই-কমার্স ব্যবসায় এবং মানবসম্পদের চাহিদা এবং দুবাইয়ের বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জগুলো উঠে আসে। সক্ষমতা থাকার পরও কেবল ব্র্যান্ডিং ইস্যুতে প্রতিবেশী ভারত থেকে পিছিয়ে আছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন বোদ্ধারা।
প্রথম সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুবাইয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের বিজনেস কনসুলার জামাল হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ যেমন অমিত সম্ভাবনার দেশে তেমনি দুবাই এখন বিশ্বের অন্যতম ব্যবসাকেন্দ্র। আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে যে ৫ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অর্জনের জন্য আমাদেরকে বাংলাদেশের বাইরে বিশেষত দুবাই এর মতো জায়গায় ব্যবসায়িক বিস্তৃতি ঘটাতে হবে। এখানে আমাদের অমিত সম্ভাবনা রয়েছে।
ডেজার্ড এক্সপার্ট সিইও মোঃ বোরহান উদ্দিনের সঞ্চালনায় এই সেশনে স্বাগত বক্তব্য দেন ই-ক্যাব যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসিমা আক্তার নিশা।
ই-ক্যাবের সহ-সভাপতি সাহাব উদ্দীন শিপনের পরিচালনায় দ্বিতীয় সেশনের প্রধান অতিথি স্টার্টআপ বাংলাদেশ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের স্টার্টআপ সংস্কৃদি এখন বিস্তৃত হচ্ছে। বিভিন্ন আন্তজাতিক অঙ্গনে দেশীয় স্টার্টআপদের অংশগ্রহণ আমাদের দেশকে নতুন করে পরিচিত করছে। স্টাটআপদের দক্ষতা ও তাদের যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃতি করতে এ ধরনের আরো অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রয়োজন রয়েছে।
এই সেশনে বাংলাদেশী ই-কমার্সের মাধ্যমে পণ্য ও সেবা রপ্তানির সম্ভাবনা নিয়ে তথ্যভিত্তিক উপস্থাপনা তুলে ধরেন এটুআই ই-কমার্স প্রধান রেজওয়ানুল হক জামি।
বিশেষ অতিথি ছিলেন দুবাই-এ বাংলাদেশের কনসুলেটের কমার্সিয়াল কাউন্সিলর আশীষ কুমার সরকার। এছাড়ও প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল দুবাই-এর মহাসচিব মোঃ সাইফুদ্দিন আহমেদ, রয়এক্স টেকনোলজিস সিইও রাজীব রায় এবং ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউটের সিইও মনির হোসাইন।
এই সেশনে মোহাম্মদ সাহাব উদ্দীন শিপন বলেন, ই-কমার্সে বেশ কিছু ইতিবাচক উন্নতি রয়েছে। নানাবিধ সমস্যা থাকা সত্বেও আমাদের তরুনেরা বিদেশ থেকে বিনিয়োগ পাচ্ছে। এটা আশা ব্যঞ্জক। প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনী ব্যবসায়িক ধারণার মধ্য দিয়ে এ ধরনের অর্জন আরো বাড়ানোর জন্য আমরা কাজ করছি। তবে এক্ষেত্রে আমাদের কান্ট্রি ব্যান্ডিংয়ে সবাইকে বেশি বেশি মনোযোগ দিতে হবে।
রোড-শো আহ্বায়ক এবং ই-ক্যাবের অর্থ সম্পাদক আসিফ আহনাফের পরিচালনায় দিনব্যাপী রোড-শো’র শেষ শেসনটিতে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ফসল, খাসফুড এবং চিকিৎসা তাদের উদ্যোগের বিষয়টি তুলে ধরে। এরপরের প্যানেল আলোচনাটি ছিলো স্বপ্নবাজ উদ্যোক্তাদের উদ্যোগ বাস্তবায়নের বিনিয়োগ ও ব্যবসায় সম্ভাবনা নিয়ে। এই সেশনটিতেও প্রধান অতিথি ছিলেন স্টার্টআপ বাংলাদেশ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ। সহ-সভাপতি মোহাম্মাদ সাহাব উদ্দিন শিপনের পরিচালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন ই-ক্যাব সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মাদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল। প্যানেল আলোচক ছিলেন ক্যান্ডেলস্টোন ইনভেস্টমেন্ট পার্টনার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহেদুল আরেফিন, জেডএ ক্যাপিটাল অ্যাডভাইসরি প্রতিষ্ঠাতা সুদর্শন শুভাশীষ দাস এবং চালডাল সিইও ওয়াসিম আলিম।
তিনটি সেশনের সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, আমরা প্রথমবারের মতো এ ধরনের আন্তজাতিক কর্মসূচী বাস্তবায়ন করেছি। যেহেতু এটি সফল বাস্তবায়ন হয়েছে। আমরা অন্যান্য দেশেও আমাদের তরুন ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন নতুন দ্বার উন্মোচনের চেষ্টা করবো।
রোড শো-তে আই-মেশ লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর শাহেদ আলী, ক্লাউড টেকনোলজিস লিমিটেডের পরিচালক রুবাইয়াত বিন আরিফ,স্মার্ট ফিল্ড সার্ভিস সহ-প্রতিষ্ঠাতা তানবির চৌধুরী, আমার পে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইশতিয়াক সারোয়ার, স্টার্টআপ চট্টগ্রাম সহ-প্রতিষ্ঠাতা আরাফাতুল ইসলাম, এসটিআইটিবিডি’র হেড অব মার্কেটিং মোঃ হায়দার হোসাইন, খাসফুড ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুল মোস্তাফা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।