ভবিষ্যতে বাংলাদেশে ব্রিটিশ স্পোর্টস কার নির্মাতা মরিস গ্যারেজেসের (এমজি) গাড়ি উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে র্যানকন ব্রিটিশ মোটরস লিমিটেডের। ‘এমজি ফাইভ’ মডেলের সেডান গাড়ি বাংলাদেশে অবমুক্তকরণ অনুষ্ঠানে এমনটাই জানিয়েছেন র্যানকন ব্রিটিশ মোটরস লিমিটেডের প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা এম রশিদ ভূঁইয়া।
এসময় র্যানকন হোল্ডিংস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারহানা করিম, র্যানকন ব্রিটিশ মোটরস লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ মোস্তাফিজুর রশিদ ভূঁইয়া, র্যানকন ব্রিটিশ মোটরস লিমিটেডের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা হুসেন মাসনুর চৌধুরীসহ র্যানকন গ্রুপের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে বাজারজাত শুরু করা দৃষ্টিনন্দন স্টাইল, অ্যারোডাইনামিক ডিজাইন, আকর্ষণীয় ফ্রন্ট অ্যান্ড ফাস্টব্যাক সিলুয়েট, সানরুফ, অনন্য টেইল লাইট, বৈচিত্র্যময় রং আর চাকার নকশা এই সেডান কারকে দিয়েছে অনন্য মাত্রা। কিন্তু স্পোর্টস কার নকশার সেডান ক্যাটাগরির এমজি ফাইভ’ বাংলাদেশের রাস্তার উপযোগী কিনা প্রশ্নের জবাবে র্যানকন ব্রিটিশ মোটরস লিমিটেডের প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা এম রশিদ ভূঁইয়া জানিয়েছেন, তারা প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এমজির সেডান গাড়ি নিয়ে এসেছেন। এমজি ফাইভ সেডান ক্যাটাগরির হলেও মাটি থেকে গাড়িটির উচ্চতা ১৭৫ মিলিমিটার। ফলে দেশের যেকোনো রাস্তায় গাড়িটি অনায়াসে চলতে পারবে। দেশজুড়ে র্যানকন ব্রিটিশ মোটরসের সব আউটলেটেই এই গাড়ির টেস্ট ড্রাইভের পাশাপাশি কেনার সুযোগ থাকছে।
তিনি বলেছেন, ‘এমজি ফাইভ’ বর্তমান প্রজন্মের সবচেয়ে জনপ্রিয় সেডানগুলোর একটি। সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি ও নান্দনিক ডিজাইনের অত্যাধুনিক এই গাড়ি দৈনন্দিন ব্যবহার কিংবা আনন্দভ্রমণের জন্য গাড়িপ্রেমীদের প্রথম পছন্দ। তাই বাংলাদেশের রাজপথে ‘এমজি ফাইভ’ অচিরেই রাজত্ব করবে বলে আমাদের বিশ্বাস’।
এসময় মনের সুপ্ত বাসনা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমরা বাংলাদেশে এমজি গাড়ি উৎপাদন করব।’
রাজধানীর গুলশান-তেজগাঁও লিংক রোডে এমজি বাংলাদেশ বিক্রয়কেন্দ্রে ১৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এমজি ফাইভ নন-টার্বোর মূল্য ৩৬ লাখ টাকা এবং টার্বো ইঞ্জিনে গাড়িটির মূল্য ৩৯ লাখ টাকা। গাড়িটিতে বাম্পার টু বাম্পার পাঁচ বছর বা এক লাখ কিলোমিটার (যেটা আগে আসে) বিক্রয়োত্তর সেবা এবং ১০ বার বিনা মূল্যে সার্ভিসিং সুবিধা রয়েছে। হলুদ, লাল, নীল, সাদা, ধূসর ও কালো রঙে গাড়িটি দেশের বাজারে পাওয়া যাবে। স্পোর্টস কারের আকৃতির এ গাড়ির পেছনে এলইডি টেললাইট, এমজি লোগো এবং রিয়ার সেন্সরের সঙ্গে রয়েছে ডুয়েল এক্সস্ট। গাড়িটির দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা যথাক্রমে ৪৬৭৫, ১৮৪২ ও ১৪৭৩ মিলিমিটার। ১৭ ইঞ্চি অ্যালয় হুইলসহ গাড়িটির চাকার পরিধি ১৬৮০ মিলিমিটার। টার্বো ধরন গাড়িটির ওজন ১৩১৮ কেজি এবং নন-টার্বো ১২৬০ কেজি।
গাড়ির স্পেক অনুযায়ী, ১৪৯৮ সিসি বা ১.৫ লিটারের এনএফওয়ান ইনলাইন ৪ সিরিজের টার্বো এবং নন-টার্বো ক্যাটাগরির এমজি ফাইভ গাড়ির সামনে রয়েছে ফগ লাইটের হাউজিং এবং এলইডি হেডলাইট। নন-টার্বো মডেলে গাড়িটির সর্বোচ্চ অশ্বশক্তি ৬ হাজার আরপিএম এ ১১৩ অশ্বশক্তি (এইচপি) এবং টার্বো মডেলে ৩ থেকে ৪ হাজার আরপিএম এ ১৬০ এইচপি। সর্বোচ্চ ১৫০ ও ২৫০ নিউটন মিটার টর্ক উৎপন্ন করতে সক্ষম গাড়িটি মাত্র ৭.৭ সেকেন্ডে শূন্য থেকে ১০০ কিলোমিটার গতি তুলতে পারে। এমজি ফাইভের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার। ইউরো ফাইভ মানের জ্বালানি সাশ্রয়ী এ গাড়িতে যথাক্রমে ৮ ও ৭ গতির গিয়ারবক্স ব্যবহার করা হয়েছে।
সেডান আকৃতির এ গাড়িতে সানরুফ, ছয়টি এয়ারব্যাগ, এবিএস, অটোনোমাস ইমার্জেন্সি ব্রেকিং (এইবি), ইমার্জেন্সি ব্রেক অ্যাসিস্ট (ইবিএ), হিল হোল্ড কন্ট্রোল, স্বয়ংক্রিয় দরজা এবং বুট লকিং সিস্টেম, ক্রুইজ কন্ট্রোল, ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা, কিলেস এন্ট্রি, পুশ স্টার্ট, অ্যাপল কারপ্লে এবং অ্যান্ড্রয়েড অটোসমৃদ্ধ ১০ ইঞ্চি স্পর্শনির্ভর পর্দা, স্যাটেলাইট নেভিগেশন, ডিজিটাল স্পিডোমিটার, টায়ার প্রেশার মনিটরিং সিস্টেম (টিপিএমএস), সানগ্লাস বক্সসহ বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে।