ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়া দেশকে স্মার্ট করতে নাগরিকদের স্মার্টনেস হওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, বলেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশে পরিণত হতে যাচ্ছি। এই উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে শিক্ষা।
এক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০২১ থেকে ২০২২ সালে মাত্র ১ বছরে গ্লোবাল নলেজ ইন্ড্রাস্টিতে ১৪ ধাপ এগিয়েছে মন্তব্য করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি,বাংলাদেশ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বলেছেন আমি মনে করি এটি আমরাদের জন্য একটি যুগান্তকারী অর্জন।
শনিবার (১৪ জানুয়ারি,২০২৩) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপহার বিতরণ এবং একুশ শতকের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্রসমাজের করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তারা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, আমাদের কারিগরি শিক্ষাকে অনেক বেশি গুরুত্ব ও সম্মান দিতে হবে। কারিগরি শিক্ষা থেকে উচ্চশিক্ষায় যাওয়ার পথে যে বাধা আমরা তা নিরসনে কাজ করছি। আমরা মাদরাসা শিক্ষার আধুনিকায়নের জন্য কাজ করছি। মাদরাসা শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় যে বিষয়গুলো আছে সেসব যেমন ভালোভাবে শিখবে তেমনি নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে আধুনিক শিক্ষাও নেবে। মাদরাসা শিক্ষার্থীরা মূলধারার শিক্ষার্থীদের থেকে ২০০ নম্বর বেশিতে পরীক্ষা দেয়। নতুন শিক্ষাক্রমে তা সামনে নিয়ে আসার কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, তাদের ভাষা শিক্ষার ব্যাপারে আমরা অনেক জোর দিচ্ছি। আগে তারা কেবল কোরআনের ভাষাটাই শিখতো কিন্তু এখন তারা আরবি সাহিত্যের ভাষাও শিখছে। দেশে বিদেশে স্টাবলিশ হওয়ার জন্য তাদের আরবি ও ইংরেজি ভাষা শেখানোর পাশাপাশি প্রযুক্তির সব সুবিধা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা একটি সময়োপযোগী শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করেছি। কারণ আমাদের সামনে ২০৩০ এর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে যা আমাদের আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার। এই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় ১৭ টি অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রার ৪ নম্বরে অর্থাৎ কেন্দ্রে অবস্থান করছে শিক্ষা। সেই শিক্ষায় যদি আমরা মান অর্জন করতে পারি, শিক্ষাকে যদি আমরা জীবনব্যাপী করতে পারি এবং সেই শিক্ষা যদি হয় অন্তর্ভুক্তিমূলক তাহলে তাহলে বাকি যে ১৬ টি লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তা আমরা সহজেই অর্জন করতে পারবো।
সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি,বাংলাদেশ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের পর বাংলাদেশকে তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করতে সময় পেয়েছিলেন মাত্র সাড়ে তিন বছর। এই স্বল্প সময়ে জাতির পিতা বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টরে সফল ভাবে অবদান রেখেছেন।আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশের সূত্রপাতও হয়েছিলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর হাতে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়ন শুরু করেছেন গ্রাম থেকে। একমাত্র বঙ্গবন্ধু কন্যা ছাড়া বিশ্বের অন্য কোন নেতা এখনো বুঝতে পারেননি যে, উন্নয়ন গ্রাম থেকে শুরু করতে হয়। তিনি বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছেন এবং দেশের প্রত্যেকটি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন,১০০ টির বেশি হাইটেক পার্ক স্থাপন করেছেন এবং দেশের প্রত্যেকটি জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিয়েছেন। যার কারণে প্রত্যন্ত অঞ্চলের একজন নাগরিকও ইন্টারনেটের মাধ্যমে আউটসোর্সিং করে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন এবং সাধানরণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।
অনুষ্ঠানে নীলক্ষেত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উদয়ন স্কুল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপহার বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ এর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।