কিশোরগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ এবার দেশের ৩২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা হবে ৩টি গুচ্ছে। তবে ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি নিয়ে সিদ্ধান্ত জানা যাবে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভা শেষে।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার প্রযুক্তি গুচ্ছে একসঙ্গে পরীক্ষা হবে ১৩টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শুধু এই তালিকায় নেই বুয়েট।
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে উপাচার্যদের সঙ্গে ইউজিসির এক সভায় প্রাথমিকভাবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ইউজিসির চেয়ারম্যান (রুটিন দায়িত্ব) দিল আফরোজা বেগমের সভাপতিত্বে সভায় কমিশনের সদস্য মুহাম্মদ আলমগীর, বিশ্বজিৎ চন্দ, মো. আবু তাহের, কমিশনের সচিব ফেরেস জামান, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভায় ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও তাদের মনোনীত প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভর্তি পরীক্ষা ও শিক্ষার্থীদের পছন্দ অনুযায়ী কেন্দ্রীয়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করে দেওয়া ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মাইগ্রেশন শেষ করা এবং ভর্তিতে কেবল যে বিশ্ববিদ্যালয়ে চূড়ান্তভাবে ভর্তি হবে। সেখানকার জন্য টাকা নেওয়া, ভর্তি ফি যৌক্তিক হারে নির্ধারণ করাসহ কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছে ইউজিসি। সভায় আলোচনা হয়েছে, এ বছর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরেও বিভিন্ন কলেজে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে গুচ্ছের বাইরে থাকা আটটি বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের মতো ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করবে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চলতি দায়িত্বে থাকা চেয়ারম্যান অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগম ভর্তি পরীক্ষার ফি থেকে শিক্ষক ও প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের প্রচুর পরিমাণে টাকা নেওয়ার সমালোচনা করলে বৈঠকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখালেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, তাঁর প্রকল্পের প্রস্তাবের টাকা আটকে আছে। ফাইলটি তিন মাস ধরে মন্ত্রণালয়ে পড়ে আছে। কারণ তাঁর কাছে কোনো একটা চাকরি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু দিতে পারেননি। কারণ, ওই প্রার্থী ৫০–এর মধ্যে মাত্র ১০ পেয়েছে। এ বিষয়টি তিনি শিক্ষামন্ত্রীকে জানাবেন।
দিল আফরোজা বেগমের উদ্দেশে উপাচার্য বলেন, ‘এভাবে আপনারা অনেক কথা বলেন, কয়টা টাকা দিয়েছেন বলেন? আপনারা, মন্ত্রীরা সব জায়গায় বড় বড় কথা বলে ফেলেন এবং আমাদের শিক্ষকেরা সেটা শুনে ফেলেন, তার ফলে উপাচার্যদের যে অবস্থা হয়, আপনারা এটা কল্পনা করতে পারবেন না।’
সূত্রমতে, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হাজার ৭০৩টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞান শাখায় ১ হাজার ২১০টি, মানবিকে ৩১০টি এবং বাণিজ্য শাখায় ৮৩টি।
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই হাজার ৫টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞানে ১ হাজার ৩৬০টি, মানবিকে ৩৬৫টি এবং বাণিজ্য শাখায় ২৮০ টি।
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৮১৫টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞানে ৭৩৩টি, মানবিকে ২৮টি এবং বাণিজ্য শাখায় ৫৪টি।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হাজার ২৮৫টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞানে ৯৭০টি, মানবিকে ১৮৬টি এবং বাণিজ্য শাখায় ১২৯টি।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯১০টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞান শাখায় ৬৮৫টি মানবিকে ১০০টি এবং বাণিজ্য শাখায় ১৪০টি।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯২০টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞানে ৬৫০টি, মানবিকে ১৪৫টি এবং বাণিজ্য শাখায় ১২৫টি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মোট দুই হাজার ৭৪৫টি আসনের মধ্যে এবার এক হাজার ৬০০ আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করবে। আগের হিসেব অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বিজ্ঞান শাখায় এক হাজার ৪৬০টি মানবিকে ৩৮৫টি, বাণিজ্য শাখায় ৩১০টি এবং সম্মিলিত (সব বিভাগের জন্য) ৫৯০টি আসন রয়েছে।
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫০টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞান শাখায় ৭৫টি এবং বাণিজ্য শাখায় ৭৫টি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি একশটি আসন রয়েছে। এর মধ্যে সবগুলোই বিজ্ঞান শাখার জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মানবিক শাখা ও নেই বাণিজ্য শাখায় আসন নেই।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫০টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞান শাখায় ৯০টি মানবিক শাখায় ৩০টি এবং বাণিজ্য শাখায় ৩০টি।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট আসন সংখ্যা ৭৩০ টি। আসন বিন্যাসের তথ্য জানা যায়নি।