বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দ্বিতীয় দিনের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে শিক্ষার্থীরা। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তলা হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
মঙ্গলবার সকাল নয়টা থেকে চুয়েট ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনের কাপ্তাই সড়কে গাছ ফেলে অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শত শত শিক্ষার্থী সড়কে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি সড়কে বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভের কারণে কাপ্তাই সড়কে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।
পলাতক চালক ও তার সহযোগীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থাসহ লিখিত সাত দফা দাবিতে চুয়েটের সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। বাকি ছয়টি দাবির মধ্যে রয়েছে- সব সুযোগ–সুবিধাসংবলিত ক্যাম্পাসে আধুনিক চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন, আধুনিক সরঞ্জামসহ অ্যাম্বুলেন্স–সুবিধা দেওয়া, রাস্তার মাথা এলাকা থেকে কাপ্তাই পর্যন্ত চার লেন মহাসড়ক করা, প্রতিটি বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার কাগজপত্র ও চালকদের লাইসেন্স নিয়মিত যাচাই করা, ছাত্রকল্যাণ পরিষদকে জবাবদিহির আওতায় আনা এবং ছাত্র প্রতিনিধিদল গঠন করা, নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া।
আন্দোলনের পাশাপাশি আজ দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে নিহত শিক্ষার্থীদের গায়েবানা জানাজা এবং বেলা তিনটায় শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেবেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কাপ্তাই সেলিনা কাদের চৌধুরী কলেজ সংলগ্ন এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন শান্ত সাহা ও তৌফিক হোসেন। তারা দুজনই মোটরসাইকেলের আরোহী ছিলেন।
নিহত শান্ত সাহা পুরকৌশল বিভাগের ’২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী (আইডি-২০০১১০০)। তিনি নরসিংদীর কাজল সাহার ছেলে। তৌফিক হোসেন একই বিভাগের ’২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী (আইডি-২১০১০০৬)। তিনি নোয়াখালী সুধারামের নিউ কলেজ রোডের মোহাম্মদ দেলোয়ারের সন্তান।
এ ঘটনায় আহত হন জাকারিয়া হিমু। তিনি চুয়েটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সেসময় চুয়েটের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) ফজলুর রহমান জানিয়েছিলেনন, দুর্ঘটনায় নিহত শান্ত সাহার মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং তৌফিকের মরদেহ এভারকেয়ার হসপিটালে আছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে সোমবার সন্ধ্যায় দুই সহপাঠীর মৃত্যুর খবর ক্যাম্পাসে এসে পৌঁছালে শিক্ষার্থীরা সঙ্গে সঙ্গে ক্যাম্পাসের সামনে চট্টগ্রাম–কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তিনটি বাস ভাঙচুর ও একটি বাসে আগুন দেন। ক্ষতিগ্রস্ত চারটি বাসই শাহ আমানত পরিবহনের।