চারটি স্তম্ভকে ভিত্তি করে টেকসই ই-কমার্স ইকো সিস্টেম গড়ে তুলতে ইতিমধ্যেই সবার জন্য সাশ্রয়ী ইন্টারনেট, পেমেন্ট সল্যুশন ও লজিস্টিক অবকাঠামো ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন করেছে সরকার। এই অবকাঠামো থেকে ফলদায়ক করতে ই-কমার্স খাতে ‘ক্রেতার বিশ্বাস ও আস্থা’ অর্জনে গুরুত্বারোপ করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। একই সঙ্গে কেবল ওয়েবসাইট প্লাটফর্ম বা মোবাইল অ্যাপের ওপর নির্ভর না করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো ফ্রন্টিয়ার টেকনলোজিতে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী।
রাজধানীর হোটেল রেডিসনে দেশের প্রথম বৈশ্বিক হালাল ব্র্যান্ড বিউটি ও স্কিন কেয়ার পণ্যের ই-কমার্স পোর্টাল ওহ সো গো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, ১৩ বছর আগে একটি পণ্য ঢাকা থেকে গ্রামে পাঠানো ছিলো খুবই দুঃস্কর। কিন্তু এখন আপনি যে কোনো সময়, আপনার পণ্য দেশের যে কোনো প্রান্তে এমনকি দ্বীপাঞ্চল বা পাহাড়ি এলাকা ছাড়াও দেশের বাইরেও পাঠাতে পারেন। কেননা, এখন দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন-গ্রাম আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুক্ত। এ কারণে দেশের ই-কমার্স এতো দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। এবার ঈদেও প্রায় ৩৮৭০০০ কোরবানির পশু অনলাইনে বিক্রি হয়েছে। এই কেনা-বেচায় ডিজিটালি লেনদেন হয়েছে ২৭ হাজার কোটি টাকা।
সাম্প্রতিক সময়ে বিকাশমান এই ই-কমার্স খাতে কিছু বিপজ্জনক পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়েছে জানিয়ে পলক বলেন, গ্রাহকের আস্থা ফিরিয়ে আনতে আইসিটি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরণের ই-কমার্স-এফ কমার্স ব্যবসায়ির জন্য ডিজিটাল বিজনেস আইডি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় অভিযোগ নিষ্পত্তিতে সিসিএমএস প্লাটফর্ম, সেন্ট্রাল লজিস্টিক ট্রাকিং প্লাটফর্ম সিএলটিপি ও ইন্টার অপারেবল ডিজিটাল ট্রাঞ্জেকশন প্লাটফর্ম (আইডিটিপি) বিনিময় প্রস্তুত করা হয়েছে। এ বছরের শেষ নাগাদ সিসিএমএস ও সিএলটিপি উদ্বোধন করা হবে।
বিনিময় উদ্বোধন করা হলে লেনদেনে বহুমাত্রিক সুবিধার পাশাপাশি ডিজিটাল ক্রেডিট রেটিং এর মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও কুটির উদ্যোক্তারা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সহজেই ঋণ সুবিধা ভোগ করবে বলেও জানান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী। এসময় ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে বাংলাদেশ ৪র্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব দেবে এমন দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করেন পলক।
তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে এই নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় সরকারি-বেসরকারি যৌশ অংশীদারিত্বে আমাদের স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি এবং স্মার্ট সমাজ গড়ে তুলতে হবে।
মঙ্গলবার রাতে এই অনুষ্ঠানে ওহসোগো শুভেচ্ছা দূত মাশরাফি বিন মুরতজা, অভিনেত্রী মেহজাবিন চৌধুরী ও মোঃ সাখাওয়াত হোসেন নিরব উপস্থিত ছিলেন।
অন্যান্যের মধ্যে ঔষধ প্রশাসনের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ ইউসুফ, অ্যাডভোকেট নাহিদা সুলতানা যুথি, ওহসোগো গ্লোবাল সিইও মি. আঙ্কিত, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সার্বেস নেভাতিয়া, গ্লোবাল বিজনেস হেড মি. সৌভিক, ভেঞ্চুরি পার্টনার্স ম্যানেজিং ডিরেক্টর ঋষিকেশ চন্দন, ওহসোগো বাংলাদেশের সিইও আফরোজ হোসেন আরেফিন, ই-ক্যাব ইনভেস্টমেন্ট কমিটির প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারহা মাহমুদ তৃণা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গত এপ্রিলে শতভাগ অথেনটিক পণ্য ও সবচেয়ে দ্রুত সময়ে পণ্য ডেলিভারির প্রতিশ্রুতি নিয়ে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে ওহসোগো। মেয়েদের প্রসাধনী সরবরাহে তারা মেয়েদের দিয়েই গড়ে তুলেছে একটি ডেলিভারি টিম। একইসঙ্গে নগদ ওয়ালেটে পেমেন্টে মূল্য পরিশোধে ঘোষণা দেয়া হয় ১০ শতাংশ ছাড়।