নিরাপদ বাইকিং ও জরুরী সহায়তায় উদ্ভাবনী সল্যুশন দিয়ে দেশের বাইকার কমিউনিটিতে আলো ছড়াচ্ছে গাড়ির অনলাইন সার্ভিস প্লাটফর্ম যান্ত্রিক। মাঝ রাস্তায় নষ্ট গাড়ি সারানো বা যান্ত্রিক ত্রুটি দূরের অ্যাপ সেবা দিয়ে এর মধ্যে একটি নিজেদের একটি স্বতন্ত্র্য অবস্থান তৈরি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এবার নতুন আরেকটি সেবা ‘ডিজিটাল ড্রাইভার’ নিয়ে বিশ্বে উদ্ভাবনী বাংলাদেশের নতুন নিশান ওড়াতে যাচ্ছে যান্ত্রিক টিম।
গবেষণা ও উন্নয়নের পর সঙ্গপনেই গুগল প্লে স্টোরে অবমুক্ত করা হয় ব্যতিক্রমী এই সল্যুশনটি। শুরুতে অ্যান্ড্রয়েড প্লাটফর্মের জন্য করা হলেও অল্পদিনের মধ্যে আইওএস সংস্করণও আসবে বলে জানাগেছে। সূত্রমতে, গত ২৫ জুলাই নিজেদের ফেসবুক পেজে একটি লিংক দিয়ে অ্যাপটি ৩০ দিন ফ্রি ব্যাবহারের সুযোগ দেয় যান্ত্রিক কর্তৃপক্ষ। তবে প্রথম দিনেই স্মার্ট এই সেবাটি ব্যবহারের বায়না আসে ৫০০ জন থেকে। নাটকীয় ভাবে তার পরদিন আবেদন আড়াইগুণের বেশি বেড়ে ছাড়িয়ে যায় ১৩০০।
এমন সাড়াকে অভাবনীয় উল্লেখ করে যান্ত্রিক সিইও শুভ আল ফারুক ‘এই প্রোডাক্টটাকে দেশে সফল করার চেষ্টা করার পাশাপাশি এবার লক্ষ্য গ্লোবাল মার্কেটে নিয়ে যাবার জন্য’ চেষ্টা করছেন। তার ভাষায় “যতদূর জানি, এরকম কোন কিছু আমরাই প্রথম বানিয়েছি, পৃথিবীতে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার “Digital Driver” অ্যাপ পকেটে রাখা স্মার্টফোনে ব্যবহার করে আপনি একদিকে যেমন অনেক নিরাপদ বোধ করবেন, তেমনি অপরদিকে নিয়ম মেনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বস্তিতে ড্রাইভ করতে পারবেন রাস্তায়।”
ডিজিটাল ড্রাইভার (বাইক) এর বেটা সংস্করণের অ্যাপটিতে রয়েছে ৫টি ফিচার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে এর এমার্জেন্সি হেল্প। এই হেল্প বাটনের মাধ্যমে বাইকের তেল ফুরিয়ে গেলে নিকটবর্তী যে কোনো বাইকারের কাছে অ্যাপ থেকেই সাহয্য চাওয়া যায়। এছাড়াও অন্যান্য ফিচারের মধ্যে ওভার স্পিড এলার্ট, ট্রাফিক সার্জেন্ট এলার্ট, স্পিড ব্রেকার/গর্ত এলার্ট এবং ভয়েস কমান্ড দিয়ে ফোন গ্রহণ সুবিধা প্রতিটি বাইকারের কাছেই অ্যাপটিকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
তবে প্রথম থেকেই আলোচনায় এসেছে অ্যাপের একটি ফিচার। সেটি হলো বাইক চালানোর সময় ভয়েস কমান্ড ব্যবহার করে ট্রাফিক এলার্ট। স্পিডব্রেকার এলার্টকে স্বাগত জানালেও অ্যাপটি টিজারে ‘সামনে ট্রাফিক’ বলে গতি কমাতে সতর্ক করার বিষয়টি ট্রাফিককে ফাঁকি দেওয়ার পথ বাতলে দেবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। যান্ত্রিক এর ফেসবুক পেজেই এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।
ব্যবহারকারীদের ভাষায় “এটি একটি যুগান্তকারী ও যুগোপযোগী প্রোডাক্ট। এ ব্যপারে কোন সন্দেহর অবকাশ নেই। কিন্তু সামনে ট্রাফিক সার্জেন্ট থাকলে আগে থেকেই এলার্ট করবে এটি যুক্তিসংগত মনে হয়নি। ট্রাফিক সার্জেন্ট সামনে থাকলে নিয়ম মানতে হবে আর না থাকলে মানতে হবেনা সেটি অঘোষিত ভাবে উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে এমন মনে হচ্ছে। এছাড়া ক্রিমিনাল এক্টিভিতে এই ফিচারটি কিছুটা সহযোগিতার অংশ হতে পারে৷ শুধুমাত্র এই ফিচার টি বাদে সবগুলো ফিচার ই খুব ই দারুণ।”
সূত্রমতে, যান্ত্রিকের এই অ্যাপটির স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজে স্লিপ অ্যালার্ট, ওভারস্পিড অ্যালার্ট, লাইভ ট্র্যাকিং, ডিজিটাল রিফ্যুয়েল, ট্রিপ হিস্টোরি, ড্রাইভার পরফরমেন্স হিস্টোরি, ভিডিও ক্লিপ রেকর্ড এবং স্পিড ব্রেকার এলার্ট পেতে ব্যবহারকারীকে বছরে গুণতে হবে ৮৪০০ টাকা।