ডিজিটাল বা স্মার্ট আইডি কার্ড পেতে শুরু যাচ্ছেন জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা। আর যেসব মুক্তিযোদ্ধা মারা গেছেন, তাদের পরিবার পাচ্ছে ডিজিটাল সনদ। এ স্মার্ট আইডি কার্ডের মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধারা সরকারি যানবাহনে বিনামূল্যে চলাচলের সুবিধা পাবেন। সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবাও পাবেন। চিকিৎসাসেবার আওতায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে- সবধরনের ডাক্তারি সেবা, শৈল্য চিকিৎসা, ওষুধ ক্রয় ও সরবরাহ, বেডভাড়া, খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ এবং সেবিকার সেবা।
প্রধম ধাপে প্রাথমিকভাবে ১৭ জেলার মোট ২৪ হাজার ৭৬১ জন মুক্তিযোদ্ধা স্মার্ট আইডি কার্ড এবং ৪৬ হাজার ৮০৩ জন ডিজিটাল সার্টিফিকেট পাচ্ছেন। বাকি ৪৭টি জেলার ডিজিটাল সার্টিফিকেট এবং স্মার্ট আইডি কার্ডের প্রিন্টিংয়ের কাজ শেষ হতে আরও দেড় মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
বৃহস্পতিবার মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করে মন্ত্রী বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মহানগরের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। প্রথমে কিশোরগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর, নড়াইল, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, ঢাকা, শরীয়তপুর, মেহেরপুর, নারায়ণগঞ্জ-এই ১৭ জেলার মুক্তিযোদ্ধারা এই কার্ড পাবেন। ক্রমান্বয়ে দেশের অন্য জেলাগুলোতেও এই ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড দেয়া হবে।
জেলাভিত্তিক স্মার্ট আইডি কার্ড ও ডিজিটাল সার্টিফিকেটধারীর সংখ্যা
কিশোরগঞ্জে ১ হাজার ৭৫৫ স্মার্ট আইডি কার্ড ও ৩ হাজার ৫২২ ডিজিটাল সার্টিফিকেট, গোপালগঞ্জে ২ হাজার ৭৪৫ স্মার্ট আইডি কার্ড ও ৫ হাজার ২৫০ ডিজিটাল সার্টিফিকেট, গাজীপুরে ১ হাজার ৭৩৪ স্মার্ট আইডি কার্ড ও ৩ হাজার ৫৫ ডিজিটাল সার্টিফিকেট, মাদারীপুরে ১ হাজার ৪৬০ স্মার্ট আইডি কার্ড ও ২ হাজার ৫৬৬ ডিজিটাল সার্টিফিকেট, নড়াইলে ১ হাজার ২৪০ স্মার্ট আইডি কার্ড ও ২ হাজার ৩২৪ ডিজিটাল সার্টিফিকেট, মৌলভীবাজারে ৬৪৪ স্মার্ট আইডি কার্ড ও ১ হাজার ৪৭১ ডিজিটাল সার্টিফিকেট, হবিগঞ্জে ৯২৮ স্মার্ট আইডি কার্ড ও ২ হাজার ৪৭ ডিজিটাল সার্টিফিকেট, সুনামগঞ্জে ১ হাজার ৭১১ স্মার্ট আইডি কার্ড ও ৩ হাজার ৯৬৭ ডিজিটাল সার্টিফিকেট বিতরণ করা হবে।বাগেরহাটে ২ হাজার ৩২৪ স্মার্ট আইডি কার্ড ও ৪ হাজার ৩৬২ ডিজিটাল সার্টিফিকেট, সাতক্ষীরায় ১ হাজার ২৩১ স্মার্ট আইডি কার্ড ও ২ হাজার ১৩১ ডিজিটাল সার্টিফিকেট, যশোরে ১ হাজার ৪৮৪ স্মার্ট আইডি কার্ড ২ হাজার ৭০৬ ডিজিটাল সার্টিফিকেট, ঝিনাইদহে ১ হাজার ১১৯ স্মার্ট আইডি কার্ড ও ২ হাজার ৭৪ ডিজিটাল সার্টিফিকেট, মাগুরায় ৯১৭ স্মার্ট আইডি কার্ড ও ১ হাজার ৬১৬ ডিজিটাল সার্টিফিকেট, ঢাকায় ২ হাজার ৫১৬ স্মার্ট আইডি কার্ড ও ৪ হাজার ২৫৫ ডিজিটাল সার্টিফিকেট, শরিয়তপুরে ১ হাজার ৩০৯ স্মার্ট আইডি কার্ড ও ২ হাজার ৩১০ ডিজিটাল সার্টিফিকেট, মেহেরপুরে ৪৫২ স্মার্ট আইডি কার্ড ও ৮৬৪ ডিজিটাল সার্টিফিকেট এবং নারায়ণগঞ্জে ১ হাজার ১৯২ স্মার্ট আইডি কার্ড ও ২ হাজার ২৮৩ ডিজিটাল সার্টিফিকেট বিতরণ করা হবে।
জেলাভিত্তিক ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড সর্বশেষ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সমন্বিত তালিকা যাচাই করে বিতরণ করতে হবে।
জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মহানগরের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। জেলাভিত্তিক ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড সর্বশেষ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সমন্বিত তালিকা যাচাই করে বিতরণ করতে হবে।’
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে প্রকাশিত সমন্বিত তালিকায় নাম না থাকলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে প্রেরিত ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড বিতরণ স্থগিত রাখতে হবে। সমন্বিত তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত হয়নি এমন বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সমন্বিত তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড দেয়া হবে।
সচিব জানান, ‘যাদের নাম সমন্বিত তালিকায় থাকা সত্ত্বেও ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড প্রিন্ট হয়নি তাদের এমআইএস নম্বরসহ নামের তালিকা উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠানোর পর পরবর্তীতে তাদের নামে ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড পাঠানো হবে।
কোনো মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে শুনানির জন্য থাকলে তার কার্ড বিতরণ বন্ধ রাখা হবে বলেও জানান তিনি।