যদি ৪১ সাল বা তার আগেই সবার কাছে ইন্টারনেট ফ্রি হয়? এটুআই নীতি উপদেষ্টা আনীর চৌধুরির মুখ থেকে প্রশ্নটা আসা মাত্রই যেনো ছক্কা হাঁকালেন চট্টগ্রামের বাগমনিরাম আব্দুর রশীদ সিটি করপোরেশন বয়েজ হাইস্কুলের শিক্ষিকা রুমিলা বড়ুয়া। বললেন, তাহলে ব্লেডিং পদ্ধতিতে খুলে যাবে স্মার্ট শিক্ষা’র স্বপ্নের দুয়ার।
কিন্তু পরক্ষণেই একটি বাচ্চা যখন পড়াশোনা বিমুখ হচ্ছে কিংবা ঝড়ে পড়তে যাচ্ছে সে বিষয়ে অনলাইনের সীমাবদ্ধতার বিষয় উঠে আসে তার কণ্ঠে। এই হতাশার সমাধান হিসেবে টেন মিনিটস স্কুলের সিইও আয়মান সাদিক বললেন, এআই মাথায় হাত বুলাতে না পারলেও যেই শিক্ষক যত বেটার গল্প বলতে পারবে সে তার স্টুডেন্টদের ততো উজ্জীবিত করতে পারবে।
ডিজিটাল ও ইনপারসন শিক্ষকের কথা শুনে ঢাকার সিদ্ধেস্বরি গার্লস স্কুলের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী তাসনিম জাহরা বললেন, ক্লাসরুম এখন আর টেক্টবুকে সীমাবদ্ধ নেই, পুরো বিশ্বটাই ক্লাসরুমে পরিণত হচ্ছে। মোহাম্মাদপুরের বসিলা প্রিপারেটরি হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণীর দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আয়েশা বললেন, আমি ব্রেইল ও মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে পড়ি। কিন্তু নতুন প্রযুক্তি আসায় আমার জন্য ডিফিকাল্টি হয়ে পড়ছে। কেননা নতুন কারিক্যুলামের গ্র্যাফগুলো-চিত্র আমরা দেখতে পারি না।
পরক্ষণেই ভিজ্যুয়ালি ইমপায়র্ড পিপল’স সোসাইটির দক্ষতা উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আরিফ হোসেন বললেন, নতুন কারিকুলামে ইমেজের অল্টারনেটিভ এর মাল্টিমিডিয়া টকিং বুকের মাধ্যমে যে পরিবর্তন হচ্ছে তা ইতিবাচক।
৪১ সালের স্মার্ট শিক্ষা ব্যবস্থা কেমন হবে? সেখানে স্মার্ট শিক্ষার্থীরা কী স্কুলে যাবে? না কি ইন্টারনেটে যাবে? বাজার ভিত্তিক দক্ষতা কীভাবে অর্জিত হবে? সঞ্চালকের এসব প্রশ্নের জবাবে বিডিজবস সিইও ফাহিম মাশরুর বললেন, আমাদের প্রতিযোগিতা এখন আর দেশের মধ্যে নেই। পুরো বিশ্বের সঙ্গে। তই সনদ নির্ভরতা থেকে আগামীতে সেল্ফলার্নিংয়ের দিকে যাবে। আগে অনেকে পাবলিক লাইব্রেরিতে যাওয়ার বদলে এখন তারা বেশি স্ক্রিন টাইমে অনেক কিছু পড়ে। তবে কোনোটারই ডিপে ঢুকছে না। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে সার্টিফিকেট তাকে শুধু গেট পাস দেবে। সোসাইটি ও বিশ্ব থেকে সেল্ফ লার্নিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থী কতটা সল্যুশন বের করতে পারছে তাই হবে তার যোগ্যতার মাপকাঠি। কেননা এখন আমাকে মেশিনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হবে।
টেন মিনিটস স্কুলের সিইও আয়মান সাদিকের ভাষায়, এমন একটা ব্লেন্ডেন্ড এড্যুকেশন হবে যেখানে অনলাইনের সুবিধা সবাই নিতে পারবে। প্রযুক্তির সুবিধায় ঠিক ঠাক যেনে নেয়া যাবে কোন কোন শিক্ষার্থী ঠিক কোথায় আটকাচ্ছে। তার কোন সাপোর্ট দরকার। শিক্ষকরাও সুবিধা পাবে।
এভাবেই স্বপ্নের-সম্ভাবনার কথায় মঙ্গলবার রাত ৯টায় প্রচারিত হলো দেশীয় ঐতিহ্যবাহী ওটিটি প্লাটফর্ম আয়না-তে। একযোগে প্রচারিত হয় অন্যান্য ওটিটি প্লাটফর্মেও। বুধবার একইসময়ে আয়না-তে দেখা যাবে মিশন ২০৪১: আমিই সল্যুশন এর ২য় পর্ব। ‘স্মার্ট কৃষি’ নিয়ে এই পর্বে শরীয়তপুর জাজিরার মূলা ইউনিয়ন ও পালের চর ইউনিয়নের স্মার্ট কৃষির আদ্যপান্ত তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে দেখা যাবে দোয়েল ডি২৩’র সিক্রেট মিশন। দেখানো হবে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউটের ‘রাইস সল্যুশন’ মোবাইল অ্যাপের কারিশমা। উঠে আসে কচুরিপানা থেকে চারা উৎপাদন এবং নারকেলের ছোবরা মধ্যে মধ্যে মাচাং করে ফুলকপি, বাধাকপি উৎপাদনের বাংলাদেশী স্মার্ট কৃষক; এমনকি থ্রিডি প্রিন্টারে বার্গার রিভিউয়ের গল্প। কৃষকদের উদ্ভাবন ও স্মার্ট কৃষি নিয়ে ভবিষ্যতের সমাধান দেবেন ময়মনিসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এম এ সাত্তার মণ্ডল, আইফার্মার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহাদ ইফাজ, কৃষিকথা-কৃষকের কথা পরিচালক মারুফা এনিন এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটর ফারহিন জান্নাত ফাহিজা।