ফেসবুকের পর সামাজিক যোগাযোগের ভার্চুয়াল মাধ্যম টিকটকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করেছেন এর মডারেটররা। এরা হলেন তৃতীয় পক্ষীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে টিকটকের কনটেন্ট মডারেশনে নিয়োজিত শলি ভেলেজ এবং রিস ইয়াং।
তাদের উভয়েরই অভিযোগ, দৈনিক ১২ ঘণ্টা করে তাদের “জঘন্য এবং আপত্তিকর কনটেন্ট” রিভিউ করতে বাধ্য করলেও, মানসিক স্বাস্থ্যের উপর এর প্রভাব ঠেকাতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি টিকটক। এর মধ্যে সবচেয়ে বাজে নেতিবাচক কনটেন্টের মধ্যে পশু-পাখির প্রতি নিষ্ঠুরতা, শিশু নিপীড়ন, পর্নোগ্রাফি এবং খুনের ভিডিও ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই মামলায়।
অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, টিকটক এবং এর মূল প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স কর্মীদের মানসিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে যথেষ্ট পদক্ষেপ না নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার শ্রম আইন ভঙ্গ করেছে।
প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেট জানিয়েছে, মামলায় যে ধরনের কনটেন্টের কথা বলা হয়েছে, ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মটিকে তেমন কনটেন্ট থেকে মুক্ত রাখতে কম-বেশি ১০ হাজার মডারেটর আছেন টিকটকে। আর টিকটকের বিরুদ্ধ মামলাকারী দু’জনই আলাদা দুটি প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করতেন। কিন্তু তাদের দৈনন্দিন কাজ সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করতো টিকটক। কী পরিমাণ কনটেন্ট রিভিউ করছেন তার উপর নির্ভর করতো তাদের বেতন এবং কঠিন কোটা পূরণের জন্য চাপে ফেলা হতো তাদের। প্রতিদিন যে কনটেন্টে দেখতে হয় সে বিষয়ে অন্যদের সঙ্গে যেন আলাপ করতে না পারেন, সে জন্য তাদের তথ্য গোপন রাখার চুক্তিতে স্বাক্ষর করতেও বাধ্য করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন ভেলেজ ও ইয়াং।
সিনেট এ প্রসঙ্গে টিকটকের মন্তব্য জানতে চাইলেও তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।
এর আগে ২০২০ সালে প্রায় একই রকমের একটি মামলার সমঝোতায় একদল মডারেটরকে পাঁচ কোটি ২০ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ দিয়েছিল ফেসবুক। ২০১৮ সালে মামলাটি করেছিলেন তারা। মডারেটরদের অভিযোগ ছিল, “আপত্তিকর কনটেন্ট দেখার কারণে মানসিক আঘাত পেয়েছিলেন তারা।”
টিকটকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় ক্ষতিপূরণ এবং আইনি প্রক্রিয়ার খরচ দাবি করেছেন সাবেক মডারেটররা। পাশাপাশি, নিজেদের এবং ভুক্তভোগী অন্য কেউ মামলার বাদী হিসেবে যোগদান করলে তাদের চিকিৎসা ব্যয় বহনের দাবিও করেছেন তারা।
চীনের প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন অ্যাপটির নিয়মিত ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন একশ কোটিরও বেশি, প্রতিদিন প্লাটফর্মটিতে আপলোড করা হয় কয়েক লাখ ভিডিও।