মেড ইন বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে সরকার এখন দেশে উৎপাদন ও রপ্তানিতে নানা প্রণোদনা দিচ্ছে। শর্ত প্রতিপালনে কম্পিউটার যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা ছাড়াও গত অর্থ বছরে আমদানীকারদের কেউ যদি দেশেই সেই পণ্য উৎপাদন করতে চায় বা বৈশ্বিক ব্র্যান্ড আইটি পণ্যের ওইএম হতে চায় তবে আয়কর ও ১৫ শতাংশ ভ্যাটেও করমুক্ত সুবিধা দেয়া হয়েছে। আগামী অর্থ বছরেও এই ছাড় অব্যাহত থাকবে।
এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের ভ্যাট ও কর সুবিধা নিতে উৎপাদনমুখী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ এবং ভ্যাট এর যুগ্ম কমিশনার মো. তারিক হাসান। তবে এখন যারা প্রযুক্তি ব্যবসা করছেন তাদের ভ্যাট এবং রিটার্ন দিতে হয়। কিন্তু এ বিষয়ে অনেকেই রিটার্ন পূরণ সম্পর্কে খুব কমই ওয়াকিবহাল নয়। সে কারণেই ব্যবসায়িদের জন্য অনলাইনে ভ্যাটের কৌশলটা নিজেদেরেই রপ্ত হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রযুক্তি ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটি বদ্ধমূল ধারণা রয়েছে যে কম্পিউটারের উপর ভ্যাট প্রদান করতে হয় না। তবে কম্পিউটারের সঙ্গে সম্পর্কিত অনেক পণ্য রয়েছে যেগুলোতে ভ্যাট রয়েছে। মূলত সরকারের কোষাগারে ভ্যাট জমা করার দায়িত্ব ব্যবসায়ীদের। তাই ভ্যাটের বিষয়গুলো সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রাখতে হবে। অনলাইনে ভ্যাট প্রদানকে সরকার উৎসাহিত করে। এতে ঝামেলামুক্ত ভ্যাট প্রদান করা যায়। তাই আমাদের এখন থেকেই অনলাইনে ভ্যাট প্রদানে অভ্যস্ত হতে হবে।
আইসিটি বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (আইবিপিসি) এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি’র সদস্যদের অংশগ্রহণে শনিবার বিসিএস ইনোভেশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত ‘অনলাইন ভ্যাট প্রসিডিউর’ শীর্ষক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এসব কথা বলেন তিনি।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইবিপিসি এর নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল খান। তিনি বলেন, আইবিপিসি, বিসিএস এর সঙ্গে প্রতিনিয়ত প্রশিক্ষণ কর্মসূচী/ কর্মশালা পরিচালনা করে আসছে। প্রযুক্তি ব্যবসায়ীদের জন্য অনলাইনে ভ্যাট প্রদান করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই কর্মশালার মাধ্যমে বিসিএস সদস্যরা উপকৃত হবেন বলে আমরা আশাবাদী।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন বিসিএস মহাসচিব কামরুজ্জামান ভূইয়া। তিনি বলেন, বিসিএস সদস্যদের ব্যবসাকে আধুনিক এবং সমসাময়িক বিষয়গুলোর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে বিসিএস বদ্ধ পরিকর। প্রশিক্ষণ কর্মসূচী আমাদের নিত্যনৈমিত্তিক কাজের অংশ। সদস্যদের চাহিদা অনুসারে আমাদের এই কার্যক্রম দক্ষতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।
কর্মশালায় বিসিএস সহ-সভাপতি মো. রাশেদ আলী ভূঁইয়া বলেন, ভ্যাট প্রযুক্তি ব্যবসায়ীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা সবাই ব্যাংকিং লেনদেন থেকে শুরু করে সব বিষয়ে অনলাইনে অভ্যস্থ হচ্ছি। তাই অনলাইন ভ্যাট প্রদানেও আমাদের অভ্যস্ত হতে হবে।
অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বিসিএস সহ-সভাপতি আরো বলেন, বিসিএস তার সদস্যদের জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। বিসিএস এর কার্যক্রমকে দেশব্যাপী বিস্তৃত করতে আমাদের নতুন দুইটি শাখা রংপুর এবং টাঙ্গাইলে কার্যক্রম শুরু করেছে। আমাদের এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচী আমরা রাজধানীর বাইরের শাখাতেও পরিচালনাক করবো। সরকারের আইসিটি ডিভিশন, পোস্ট টেলিকমিউনিকেশন বিভাগ, বিটিআরসিসহ প্রযুক্তিখাতের বৃহৎ সংগঠন হিসেবে বিসিএস অন্যান্য বেসরকারি সংগঠনগুলোর সঙ্গেও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। সঠিকভাবে ভ্যাট প্রদানের নিয়ম কানুন জেনে ভ্যাট প্রদান করে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে আমরাও ভূমিকা রাখবো। প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনেও আমরা ভূমিকা রাখতে পারবো বলে আমি আশাবাদী।
দিনব্যাপী কর্মশালায় চূড়ান্ত রিটার্ন দাখিলের সময় আইনসিদ্ধ সুযোগ এবং সাধারণ ভুল নিয়েও আলোচনা করেন চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ এবং ভ্যাট এর যুগ্ম কমিশনার মো. তারিক হাসান। কর্মশালা শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সনদ প্রদান করা হয়।