অনেক আগে থেকেই দেশে প্রযুক্তি ব্যবসায়ীরা পিসি ও প্রিন্টার সহ বেশকিছু পণ্য দেশেই অ্যাসেম্বল করে উল্লেখ করে আমদানি ল্যাপটপের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাটযুক্ত করা মোটেই যৌক্তিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিসিএস সভাপতি সুব্রত সরকার। আর এই সিদ্ধান্তের ফলে রিটার্নের চেয়ে দাম বৃদ্ধির ফলে তা ক্রেতারা ক্রয়ক্ষমতার বাইরে যাচ্ছে যুক্তি টেনে আগামী বাজেটে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
নিজ দাবির পক্ষে যুক্তি টেনে তিনি বলেছেন, অ্যাসেম্বল করে নিজ ব্যান্ড নামে পণ্য বাজারজাত করা ম্যানুফ্যাক্চারিং নয়। ভারতের মতো দেশেও ল্যাপটপ উৎপাদন কারখানা সফল হয়নি। প্রত্যেকেই ওইএম কারখানা থেকে তাদের কিউসি করে বাজারের ল্যাপটপগুলো আমদানি করে। এখন বাংলাদেশে ল্যাপটপ মেনুফ্যাক্চারিংয়ের জন্য এদের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট জুড়ে দেয়া এটার আমার কাছে কোনো যুক্তি আছে বলে মনে হয় না।
‘বাংলাদেশে কোনো প্রিন্টার ম্যানুফ্যাক্চারই হয় না। অ্যাসেম্বল হতে পারে। এটা আমরা আগা গোড়াই আমরা করছি’- যোগ করেন সুব্রত সরকার।
রবিবার বিসিএস ইনোভেশন সেন্টারে তথ্যপ্রযুক্তির গণমাধ্যম কর্মীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত ইফতার অনুষ্ঠানের আগে দেয়া বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
এসময় বিসিএস সভাপতি জানান, ক্রেতাদের অধিকার সুরক্ষায় দেশের তথ্যপ্রযুক্তি পণ্যের বিক্রয়োত্তর সেবা নিশ্চিত করতে ভোক্তা অধিকারে ওয়ারেন্টি নীতিমালা জমা দিয়েছে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি। একইভাবে মূল্য নিয়ে ভোক্তা-বিক্রেতার মধ্যে দূরত্ব কমাতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে চূড়ান্ত করেছে এমআরপি নীতিমালা। অল্পদিনের মধ্যেই বাজারের প্রতিটি আইটি পণ্যে এমরআপি স্টিকার নিশ্চিত করা হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিএস মহাসচিব কামরুজ্জামান ভূঁইয়া। তিনি বলেন, আইসিটি সবার। কিন্তু ভ্যাট-ট্যাক্স এর কারণে বছর ঘুরতেই আইসিটি পণ্যের দাম বেড়েছে ১৫ শতাংশের মতো।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংগঠনের সহ-সভাপতি মো. রাশেদ আলী ভূঁঞা জানালেন, তথ্যপ্রযুক্তির গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে এখন নিয়মিত বৈঠক করবে বিসিএস।
এছাড়াও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সাংবাদিকদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ) সভাপতি নাজনীন নাহার তার বক্তব্যে বলেছেন, টেকনলোজি ইনক্লুশনের যে জায়গায় আমরা এখন আমাদের হার্ডওয়্যার ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়িয়ে আছে, সেটা একদিবে খুবই ভালনারেবল। অন্যদিকে ইনকারেজিংও। এই কঠিন জায়গায় আরো কাজ করতে হবে। কেননা, আমরা এখনো প্রসেসর তৈরি করতে পারছি কি? আমাদের হার্ডওয়্যারের মেনুফ্যাকচারিং প্লান্ট নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে! তাই আমরা বিসিএস এর কাছে কোন হার্ডওয়্যার পণ্যগুলোর কত অংশ বাংলাদেশ তৈরি করছে তার তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবেন। আমরা এসব বিষয় নিয়ে গবেষণা করে বাধা ও উত্তরণের পথ খুঁজতে চাই।
একইভাবে টেকনোলজি মিডিয়া গিল্ড বাংলাদেশ (টিএমজিবি) সভাপতি মোঃ কাউছার উদ্দিন বললেন, আমরা মনে করি আমরা যদি নিজের প্রতি ইনভেস্টমেন্ট করি, একসময় এর রিটার্ন আসবে। তাই আমরা নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে আমাদের আপকামিং প্রযুক্তি বিষয়ে পাঠকের কাছে জনপ্রিয় করতে সাংবাদিকদের ওরিয়েন্টেশন কোর্স করানো যায় কি না বিসিএস সে বিষয়টি ভাববে।
অনুষ্ঠান শেষে বিআইজেএফ এবং টিএমজিবি কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের আনুষ্ঠানিকভাবে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানায় বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি।