রমজানের প্রথম সন্ধ্যায় সূর্য ডুবতেই এক দুর্দান্ত দৃশ্যের সাক্ষী হয়েছেন অনেকেই। পশ্চিমের আকাশে তখন এক ফালি চাঁদের ঠিক নিচেই জ্বলজ্বল করেছে শুকতারা। সন্ধ্যা প্রায় ৬টা পর্যন্ত দেখা গেছে চাঁদের নিচে জ্বলজ্বল বিন্দুর ওই অদ্ভুত দৃশ্য। আসলে ওই বিন্দুটি ছিলো শুক্র গ্রহ। দেখতে ছিলো আরবি ‘বা’ হরফের মতো।
শুক্রবার (২৪ মার্চ) শুক্র চাঁদের কাছাকাছি চলে আসায় কাস্তের মতো পাতলা এক চিলতে চাঁদ যেন আরও বেশি লালচে দেখাচ্ছিলো। আলোকিত ছিলো মাত্র ৬ শতাংশ। চাঁদের ঠিক সামান্য নিচেই দেখাচ্ছিল রুপালি-সোনালি রঙের শুক্র গ্রহ-কে। দুই মহাজাগতিক বস্তু এদিন প্রায় ৬.৫ ডিগ্রির ব্যবধানে ছিল।
রাতের আকাশের এই দৃশ্যটি এত মনোমুগ্ধকর ও বিরল ছিলো যে মুহূর্তেই এই দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। নিজেদের হ্যান্ডেলে এ নিয়ে প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন অনেকেই। সেই ছবি দেখে আরও বেশি মানুষ হয়েছেন রোমাঞ্চিত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই সময়ে চাঁদের ওপর দিয়ে শুক্র পার হয়ে গেছে। এর অবস্থান ছিলো চাঁদের উত্তর দিকে। শনিবার অবশ্য এই অবস্থান কিছুটা পরিবর্তিত হয়। চাঁদ সামান্য অর্থাৎ ১২ শতাংশ প্রশস্ত হয়ে শুক্রের আরও উপরে এবং সামান্য বাদিকে সরে যায়। ফলে রাত গড়াতেই চাঁদ-শুক্রের এতো কাছাকাছি দেখার সুযোগ আর পাওয়া যায়নি।
এদিকে শুক্র ধীরে ধীরে চাঁদের অন্ধকার প্রান্তের পিছনে অদৃশ্য হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, যদিও শুক্র সন্ধ্যার আকাশে সবচেয়ে উজ্জ্বল বস্তুগুলির মধ্যে একটি, তবে কাছাকাছি চলে আসায় চাঁদ তার উজ্জ্বলতা প্রায় ২৫০ গুণ বাড়িয়ে দেবে।
অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি ইন্ডিয়া আউটরিচ অ্যান্ড এডুকেশন একটি টুইটে জানিয়েছে, চাঁদ এখন অমাবস্যার পর্যায়ে রয়েছে এবং চাঁদের পৃষ্ঠের মাত্র ৯ শতাংশই দৃশ্যমান হবে। এই পর্যায়টি চাঁদের দৃশ্যমান পৃষ্ঠের অর্ধেক আলোকিত না হওয়া পর্যন্ত স্থায়ী হয়। সময় এবং তারিখ অনুযায়ী, সূর্য ও পৃথিবী চাঁদের বিপরীত দিকে থাকাকালীন অমাবস্যার সংমিশ্রণের পরে চাঁদ আবার দৃশ্যমান হওয়ার সাথে সাথে অর্ধচন্দ্র আকৃতি নেওয়া শুরু হবে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি কেবল শুক্রই নয়, যা-ই সন্ধ্যার আকাশে থাকবে, তার ক্ষেত্রেই এমনটা ঘটবে। মার্চের শেষে পৃথিবী থেকে আকাশের যতটা দেখা যাবে, তার মধ্যে পাঁচটি গ্রহের সারিবদ্ধ অবস্থান পরিবর্তন সেখানে ধরা পড়বে। ২৫ মার্চ থেকে ৩০ মার্চের মধ্যে পাঁচটি গ্রহ সারিবদ্ধ হতে চলেছে। কারণ, পৃথিবী বিষুব-এ প্রবেশ করেছে। বৃহস্পতি, বুধ, শুক্র, ইউরেনাস এবং মঙ্গল আকাশে সারিবদ্ধ হয়ে একটি বিরল দৃশ্য তৈরি করবে।