ভারতের আসাম রাজ্যের রাজ্য সরকারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান আসাম ইলেক্ট্রনিকস ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড বাংলাদেশ থেকে ৩০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ আমদানি করা নিশ্চিত করেছে।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ও ভারতের একটি প্রতিনিধিদলের মধ্যে বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রীর দপ্তরে এক বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ রপ্তানির বিষয় নীতিগত ভাবে চূড়ান্ত হয়। বৈঠকে আগামী নভেম্বরের মধ্যে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর এই বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরসহ রপ্তানির বিষয়টি চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে এ বিষয়ে ঢাকায় কোম্পানির প্রতিনিধির সাথে প্রাথমিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
মেঘালয় রাজ্য সরকারের যুগ্মসচিব (আইটি) কুমবামুট লাং ননগরি (kumbamut lang Nongbri) বৈঠকে অসমীয়া প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। বৈঠকে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: সাহাব উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী প্রতিনিধিদলকে আশ্বস্ত করে বলেন, আমাদের ব্যান্ডউইথ রফতানির বিষয়ে কোনও সমস্যা নেই, আমাদের নিজস্ব চাহিদা মেটানোর পরও হাতে যথেষ্ট পরিমান ব্যান্ডউইথ আছে ও থাকবে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, দেশে নেটওয়ার্কের বর্ধিত চাহিদা মিটিয়ে সৌদি আরব ও ভারতে ব্যান্ডউইথ রফতানি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগের কাজ শুরু করেছে। তৃতীয় সাবমেরিন সংযোগ সম্পন্ন হলে অতিরিক্ত আরও প্রায় ১৩২০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ সংযুক্ত হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এছাড়াও প্রথম সাবমেরিন ক্যাবলে আরও ৩৮০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ সংযুক্ত হচ্ছে অর্থাৎ বর্তমানে বিদ্যমান ক্যাপাসিটির চেয়ে প্রায় ৫ গুণ বেশি। আসামে ব্যান্ডউইথ রফতানির যথাযথ প্রক্রিয়া গ্রহণের জন্য মন্ত্রী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে সিলেটের তামাবিল থেকে মেঘালয়ের ডাউকি হয়ে গুয়াহাটিতে আসাম নিজস্ব ব্যয়ে ক্যাবল সংযোগ স্থাপন করবে। এজন্য বাংলাদেশ তামাবিল পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ নিশ্চিত করতে বিকল্প লাইন স্থাপন করবে বলে মন্ত্রী প্রতিনিধিকে আশ্বস্ত করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ইন্টারনেটকে ডিজিটাল বাংলাদেশের মহাসড়ক আখ্যায়িত করে দেশের মানুষের ডিজিটাল জীবনধারা নিশ্চিত করতে প্রতিটি অঞ্চলে নেটওয়ার্ক সুবিধা পৌঁছে দিতে সরকারের গৃহীত কর্মসূচি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে দেশে মাত্র সাড়ে সাত জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহৃত হতো। ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৮ লাখ। ২০২০ সালে কোভিড শুরুর প্রাক্কালে দেশে ১ হাজার জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে তা বেড়ে ৩৮০০ জিবিপিএসে উন্নীত হয়েছে। ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১৩ কোটিতে উন্নীত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা‘র ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
প্রতিনিধিদলের অপর সদস্যরা হলেন আসাম ইলেক্ট্রনিকস ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের ম্যানেজার শ্যামল সরকার, আসাম ইলেক্ট্রনিকস ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের কনসালটেন্ট সিআর ডেকা, দীপংকর চৌধুরী। প্রসঙ্গত, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য বাংলাদেশ থেকে ২০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ আমদানি করে। ১০ জিবিপিএস দিয়ে আমদানি শুরু করলেও সম্প্রতি তা বেড়ে ২০ জিবিপিএসে উন্নীত হয়েছে।