গ্রাহক সেবার পুরোটাই ডিজিটাল রূপান্তর সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)। এর ফলে এখন প্রযুক্তির মাধ্যমে দুই মিনিটেই সেবা পাচ্ছেন এর গ্রাহক। আর সেবার মান উন্নয়নের ফলে এরই মধ্যে বিটিসিএল এর আলাপ অ্যাপ এবং জিপন সেবায় গ্রাহকদের ব্যাপক আগ্রহ বেড়েছে।
বিটিসিএলের ষষ্ঠ গণশুনানিওত এমনটাই জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. রফিকুল মতিন। বিটিসিএলের ফেসবুক পেজে গ্রাহক এবং সাধারণ নাগরিকদের মুখোমুখি হয়ে ৪০ মিনিট সরাসরি অনেক প্রশ্ন, মতামত এবং অভিযোগের জবাব দেয়ার আগে তিনি বলেন, নতুন টেলিফোন বা ইন্টারনেট সংযোগের জন্য আবেদন করা, বিল দেখা, বিল পরিশোধ, অভিযোগ করা ইত্যাদি সেবার জন্য কোনো গ্রাহককে এখন আর বিটিসিএল অফিসে আসতে হয় না। এখন ঘরে বসে কীভাবে এসব সেবা নেওয়া যায়। আমাদের টেলিসেবা অ্যাপ এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনারা এখন দু’ মিনিটেই অ্যাপ্লিকেশন ফরম পূরণ এবং ই-মেইলে ডিমান্ড নোট পেয়ে যাচ্ছেন। এবং আপনি যে কোনো মোবাইল ফাইন্যান্সিং ও ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারছেন। পেমেন্ট রিসিপ আপলোড করে দিলেই আর অফিসে আসতে হচ্ছে। আপনাদের প্রত্যাশা পূরণেই আমরা কাজ করছি। সর্বশেষ আমরা আমাদের সেবায় যুক্ত করেছি ‘প্রিপেইড’ সার্ভিস।
বিটিসিএল এর সবচেয়ে লাভজনক ‘আলাপ’ সেবা বিষয়ে রফিকুল মতিন জানান, এরইমধ্যে ৮ লাখ ২০ হাজার গ্রাহক আলাপ অ্যপা ইনস্টল করে সেবা নিয়েছেন। বিটিআরসি নির্ধারিত সর্বনিম্ন কল চার্জ ৪০ পয়সা মিনিটে অফনেট সেবা থাকলেও আলাপ-টু আলাপ কল চার্জ ফ্রি রাখা হয়েছে। এই অ্যপে বিদেশে কল করার সুবিধা ছাড়াও দেশীয় প্রযুক্তিতে প্রথম অ্যাপের ওয়েব সংস্করণও চালু করা হয়েছে। এছাড়াও দেশের ২২টি জেলায় ১:২ শেয়ার ব্যান্ডউইথ হিসেবে জিপন সেবা দেয়া হচ্ছে। আগামী জুন ২০২৩ সাল নাগাদ এই সেবাটি দেশের ৬৪টি জেলাতেই পৌঁছে যাবে। ১২১৬টি ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে সরকারি সেবা প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার কাজ সহজ করেছে। এই সেবা সাধরণের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে ১২০০ হটস্পট তৈরি করে বিনামল্যে ইন্টারনেট সেবা দেবে বিটিসিএল। এছাড়াও যারা অ্যাপ যারা ব্যবহার করেন না তাদের জন্য ১৬৪০২ কলসেন্টার থেকে ২৪ ঘণ্টাই সেবা দেয়া হয়। পাশাপাশি সর্বাধুনিক নেটওয়ার্ক অপারেশন সেন্টারও স্থাপন করা হয়েছে।
গত ২৫ এপ্রিল দুপুরে ফেসবুক লাইভে অনুষ্ঠিত গণশুনানী বিষয়ে বুধবার বিটিসিএলের জেনারেল ম্যানেজার (মার্কেটিং, জনসংযোগ ও প্রকাশনা) মীর মোহাম্মদ মোরশেদ জানিয়েছেন, ফেসবুক লাইভে গণশুনানির সময় সরাসরি অনুষ্ঠান দেখেছেন ২ হাজার ৩০০ জন। পরদিন ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার জন অনুষ্ঠানটি দেখেছেন এবং এ সময়ে অনুষ্ঠানের রিচ হয়েছে ১৫ হাজার। লাইভে ৬২৩ জন বিভিন্ন প্রশ্ন এবং মতামত জানিয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ৬০ জনের প্রশ্ন এবং মতামতের জবাব দিয়েছেন বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. রফিকুল মতিন।
ফেসবুক লাইভে নাগরিকদের মধ্যে বিটিসিএলের নতুন সার্ভিস ‘প্রিপেইড’ এবং ‘আলাপ’ সম্পর্কে অনেকেই জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং বিভিন্ন এলাকায় জিপন ইন্টারনেট সেবা (গ্রাম পর্যায়সহ) কবে দেওয়া হবে এ বিষয়ে জানতে চান। কম খরচে ইন্টারনেট সেবা দানের জন্য অনেকেই অনুরোধ করেছেন। বিটিসিএলের ‘জিপন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট’ সেবা ব্যবহারকারীদের মধ্যে অনেকেই এ সেবার বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং বিটিসিএলের বিভিন্ন সার্ভিসের ত্রুটির বিষয়ে চার জন অভিযোগ করলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাৎক্ষণিকভাবে ত্রুটি সমাধানের ব্যবস্থা নেন।