৪র্থ বা ৫ম প্রজন্মের নেটওয়ার্কে সীমাবদ্ধ না থেকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার মহাসড়ক তৈরি করছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। প্রযুক্তির মাধ্যমে উন্নত, সমৃদ্ধ ও বৈষম্যহীন একটি দেশ তৈরি করতে প্রতিটি মানুষের দোরগোরায় পৌঁছানোর যে সক্ষমতা ডাক বিভাগের রয়েছে তার ডিজিটাল রূপান্তরে জোর প্রচেষ্টা চলছে। এরই অংশ হিসেবে ডিজিটাল সার্ভিস ডিজাইন ল্যাব (ডিএসডিএল) কর্মশালায় প্রণীত প্রস্তাব ডিজিটাল ডাকঘর প্রতিষ্ঠায় একটি ঐতিহাসিক মাইল ফলক। এর ফলে উৎপাদনমুখী কর্মকান্ডের ডিজিটালাইজেশনের ভিত তৈরি হয়েছে।
ডাক বিভাগের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তৈরি করা এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সহসাই ডাকসেবা কাঙ্খিত মানে উন্নীত হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এজন্য আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং বিভাগের অধীন এটুআই এর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ডাকভবন মিলনায়তনে ডিজিটাল ডাকঘর-এর মহাপরিকল্পনা ও কর্মকৌশল প্রণয়ণের লক্ষ্যে ডাক অধিদপ্তর ও এটুআই প্রোগ্রামের যৌথ উদ্যোগে ডিএসডিএল কর্মকৌশল থেকে প্রস্তুতকৃত চূড়ান্ত প্রতিবেদন ও উন্নয়ন প্রস্তাবনা উপস্থাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এমন অভিব্যক্তি উঠে আসে মন্ত্রীর কণ্ঠে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো: আফজাল হোসেন-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তথ্য ও যোগাযোগ বিভাগের সি: সচিব এন এম জিয়াউল আলম, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো: কামাল হোসেন এবং ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: সিরাজ উদ্দিন বক্তৃতা করেন।
এটুআই- এর চীফ ই- গভর্নেন্স ট্র্যাটেজিস্ট ফরহাদ জাহিদ শেখ অনুষ্ঠানে ডিজিটাল ডাকঘর মহাপরিকল্পনা ও কর্মকৌশল উপস্থাপন করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ডাকঘরের মাধ্যমে জনগণকে সেবা দেওয়ার বিশাল সুযোগ কাজে লাগানোর দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, বিস্তীর্ণ নেটওয়ার্ক, বিশাল অবকাঠামো এবং জনবল ব্যবহার করে প্রত্যন্ত এলাকাসহ দেশের প্রতিটি মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষমতা ডাক বিভাগের আছে। তিনি ডাকঘরকে ডিজিটাল ডাকঘরে রূপান্তরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সহায়তার জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর বপন করা বীজটি চারা গাছে রুপা্ন্তর করেছেন। ২০০৯ সাল থেকে গত ১২ বছরে তা মহিরূহে রূপ নিয়েছে। তবে আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবেই সীমিত না। এর মাধ্যমে আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে উন্নত, বৈষম্যহীন জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করবো।
অনুষ্ঠানে ডাক ঘরের সঙ্গে নিজের আবেগের সম্পর্ক তুলে ধরেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। ডিজিটাল রূপান্তরের উদ্যোগ দ্রুততার সঙ্গে সম্পাদনকে একত্রিত ও সমন্বিত প্রচেষ্টার ফসল হিসেবে অভিহিত করেন তিনি।
দ্রুত সময়ের মধ্যে ডাক বিভাগকে ডিজাল ডাকঘরে রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ৫২টি মন্ত্রণালয় ও ৩৯৪ প্রতিষ্ঠানে তিন হাজারটি ডিজিটাল সেবা চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ডাক অধিদপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ ৮০টি সেবা রয়েছে। ডিজিটাল ইকো সিস্টেমের উপাদান কাজে লাগিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে তা চালু করা সম্ভব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এছাড়াও ডিজিটাল সেবার মান নিশ্চিত করতে শিগগিরি একটি আইন করা হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
সভাপতির বক্তৃতায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো: আফজাল হোসেন বলেন. ডাকঘরকে ডিজিটাল করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার-এর দিক নির্দেশনায় আমরা কাজ করছি। এরই ধারাবাহিকতায় কর্মশালার মাধ্যমে ডিজিটাল ডাকঘর-এর মহাপরিকল্পনা ও কর্মকৌশল প্রণয়ন করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে ডাকঘর নতুন দিগন্তে পৌঁছে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।