২০২৩ সালের মধ্যে আকাশে থাকবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২। লক্ষ্য বাস্তবায়নে পরামর্শক হিসেবে ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান “প্রাইস ওয়াটার হাউজ কুপার্স অ্যাডভাইজরি, এসএএস” এর সাথে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিডেট (বিএসসিএল)। আগামী তিন মাসের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ২ স্যাটেলাইটের ধরন নির্ধারণে পরামর্শ জানাবে প্রতিষ্ঠানটি।
মঙ্গলবার বিএসসিএল-এর প্রধান কার্যালয় থেকে অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয় এই চুক্তিটি। চুক্তিতে বিএসসিএল ব্যবস্থাপনাপরিচালক শাহরীয়ার আহমেদ চৌধুরী এবং পিডব্লিউসি স্পেস এর প্রাকটিস লিডার ড. লুইগি স্ক্যারিয়া চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন।
স্বাক্ষর শেষে চুক্তিপত্রটি পিডব্লিউসির সহযোগী পরিচালক সুপর্ণা রায়ের কাছে হস্তান্তর করেন বিএসসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে যোগদান করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
বিএসসিএল এর চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদের সভাপতিত্বে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মোঃ আফজাল হোসেন এবং বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তি স্বাক্ষর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -২ উৎক্ষেপণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক অভিযাত্রার আজকের দিনটিকে একটি ঐতিহাসিক দিন হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ডিজিটাল সংযুক্তির সক্ষমতা তৈরির জন্য বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -২ জাতীয় জীবনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরও একটি নতুন যুগে পদার্পন করেছে। এর ওপর ভর করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে জ্ঞান ভিত্তিক ডিজিটাল সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম আরও বেগবান ও অর্থবহ হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -২ এর প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করে বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -১ এর ওপর নির্ভর করে আমরা চর ও দ্বীপসহ দুর্গম অঞ্চলের ডিজিটাল কানেকটিভিটি তৈরি করছি। আমরা বেতার ও টিভি চ্যানেলসমূহের সম্প্রচার অব্যাহত রাখছি। দেশের দুর্গম এলাকায় টেলিমেডিসিন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি।
বাংলাদেশ সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীনস্থ দেশের স্যাটেলাইট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল) বর্তমানে দেশের একমাত্র স্যাটেলাইট (বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১) পরিচালনা করছে। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের “ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নপূরণঃ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি” (অনুচ্ছেদ ৩.২১) অধ্যায়ে বর্ণিত দেশের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট (বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২) উৎক্ষেপণের ঘোষণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিএসসিএল ইতিমধ্যেই কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
দেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে স্যাটেলাইট নির্ভর সম্প্রচার ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ স্বনির্ভরতা অর্জন করে। অন্যান্য প্রকৃতি ও ধরনের স্যাটেলাইট প্রযুক্তিতে স্বনির্ভরতা অর্জনের জন্য দেশের এই পরবর্তী স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত ও যুগোপযোগী। এর ফলে স্যাটেলাইটের অন্যান্য খাতেও বাংলাদেশের বিদেশের ওপর নির্ভরতা হ্রাস পাবে। পরবর্তী স্যাটেলাইটের প্রকৃতি ও ধরন নির্ধারণের লক্ষ্যে স্যাটেলাইট নির্মাণ ও উৎক্ষেপণের পূর্বে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য যথাযথ দরপত্র প্রক্রিয়ায় “প্রাইস ওয়াটার হাউজ কুপার্স অ্যাডভাইজরি, এসএএস”-কে নির্বাচন করা হয়।
উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লালিত স্বপ্ন সোনার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে মহাকাশ ও স্যাটেলাইট জগতে বাংলাদেশের স্বনির্ভরতা অর্জনের প্রথম ধাপ বাস্তবায়িত হয়েছে তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জনাব সজীব আহমেদ ওয়াজেদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও নির্দেশনায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর সফল উৎক্ষেপণের মাধ্যমে। এই ধারাবাহিকতায় যথাসময়ে দেশের পরবর্তী স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপিত হলে দেশ স্বনির্ভরতার পথে আরও এগিয়ে যাবে।