বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় রাজস্ব ৯ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধির ওপর ভর করে তৃতীয় প্রান্তিকে ৩৮ কোটি ৯ লাখ টাকা মুনাফা করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ফোন অপারেটর রবি। তৃতীয় প্রান্তিকে রবির রাজস্ব বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৩৪ কোটি টাকায়।
চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে ৭৭ দশমিক ০৬ শতাংশ কার্যকর কর সত্ত্বেও এই সময় রবি ১১৬ কোটি টাকা মুনাফা নিশ্চিত করেছে। এটি কোম্পানিটির দুর্দান্ত পরিচালন দক্ষতারই প্রতিফলন। তবে নূন্যতম ২ শতাংশ টার্নওভার ট্যাক্স না থাকলে এই মুনাফার চিত্র আরো ইতিবাচক হতো বলে অভিমত রবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহতাব উদ্দিন আহমেদের।
বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) তৃতীয় প্রান্তিকে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ নিয়ে আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে রবির সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা ৫ কোটি ১ লাখ যা দেশের মোট মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর ৩০ শতাংশ। এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় তৃতীয় প্রান্তিকে সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে- দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর মধ্যে এই হার সর্বোচ্চ। ৫ কোটি ১ লাখ সক্রিয় গ্রাহকের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যাবহারকারীর গ্রাহকের সংখ্যা ৩ কোটি ৪৭ লাখ যা মোট গ্রাহকের ৬৯ দশমিক ২ শতাংশ।
এক নজরে তৃতীয় প্রান্তিক:
· সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা ৫ কোটি ১ লাখ যা দেশের মোট মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর ৩০ শতাংশ
· ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা ৩ কোটি ৪৭ লাখ যা মোট গ্রাহকের ৬৯ দশমিক ২ শতাংশ
· রাজস্বের পরিমাণ ১ হাজার ৯৩৪ কোটি টাকা
· ইবিআইটিডিএ ৭৮৮ কোটি টাকা
· মূলধনী বিনিয়োগ ৩৬২ দশমিক ৫ কোটি টাকা
· কর পরবর্তী মুনাফা ৩৮ দশমিক ৯ কোটি টাকা
· রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা ৮৭৫ দশমিক ১ কোটি টাকা যা তৃতীয় প্রান্তিকের মোট রাজস্বের ৪৫ দশমিক ৩ শতাংশ
সংবাদ সম্মেলনে রবি’র চিফ স্ট্র্যাটেজি অফিসার ও অ্যাক্টিং সিএফও রুহুল আমিন আর্থিক প্রতিবেদন তুলে ধরে জানিয়েছেন, গত প্রান্তিকের তুলনায় এই প্রান্তিকে ভয়েস সেবায় রাজস্বের হার ১২ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা টাকার অঙ্কে ৯৭২ কোটি টাকা। তবে গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় এই প্রান্তিকে এ খাতে রাজস্ব ৮ দশমিক ২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। করোনা মহামারীর কারণে টুজি-ভিত্তিক ভয়েস কল সেবায় নেতিবাচক প্রভাবই এর কারণ।
গত প্রান্তিকের তুলনায় ডাটা সেবায় রাজস্ব ৬ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৬৮৪ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ডাটা খাতে রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে ২২ শতাংশ।
গত প্রান্তিকের তুলনায় রবির রাজস্ব ৯ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও কোম্পানির ইবিআইটিডিএ এবং কর পরবর্তী মুনাফা যথাক্রমে ১০ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ৩৩ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি এবং দ্রুত নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের জন্য নেয়া জোর পদক্ষেপের কারণে এমনটি হয়েছে, যা এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে লকডাউনের সময় স্তিমিত হয়ে পড়েছিল।
এ বছরের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) রবির মোট রাজস্বের পরিমাণ ৫ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) রাজস্ব বৃদ্ধির হার ১ শতাংশ। এ বছরের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) রবি’র ইবিআইটিডিএ এবং কর পরবর্তী মুনাফা যথাক্রমে ২ হাজার ৪৫৮ কোটি এবং ১১৬ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ের (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) তুলনায় এ বছরের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) ইবিআইটিডিএ এবং কর পরবর্তী মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে যথাক্রমে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ১ দশমিক ৯ শতাংশ।
চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে রবি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়েছে ৮৭৫ দশমিক ১ কোটি টাকা যা এই প্রান্তিকের মোট রাজস্বের ৪৫ দশমিক ৩ শতাংশ। এ বছরের প্রথম নয় মাসে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়েছে ২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা। এই প্রান্তিকে রবি মূলধনী বিনিয়োগ করেছে ৩৬২ দশমিক ৫ কোটি টাকা। এর ফলে চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে রবি’র মোট বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়াল ১ হাজার ৪৪১ কোটি টাকায়।
সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন রবির চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স শাহেদ আলম।