ড্রাইভার বিহীন গাড়ী কিংবা কর্মী রোবট নয়, মানবিক দিকটিকে গুরুত্ব দিয়েই দেশে ফাইভজি প্রযুক্তির নিশ্চিত করা হবে। এক্ষেত্রে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ঢাকায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) মিলনায়তনে বিটিআরসি আয়োজিত ফাইভজি প্রবর্তনের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধির মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন অভিমত ব্যক্ত করেন মন্ত্রী। সভায় খসড়া ফাইভজি নীতিমালা এবং গাইড লাইন প্রণয়ণ, নেটওয়ার্ক ও তরঙ্গ ব্যবস্থাপনাসহ পথনকশা তুলে ধরা হয়।
তিনি বলেন, অতীতের তিনটি শিল্প বিপ্লবে অংশ নিতে না পারায় শিল্পোন্নত বিশ্বের সঙ্গে আমাদের বিশাল ব্যবধান তৈরি হয়েছে। তবে ফাইভজি প্রযুক্তি দিয়েই আমরা উন্নত দেশের সঙ্গে ব্যবধান ঘোচাতে সহায়ক শক্তি হিসেবে ব্যবহার করবো।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ফাইভজি প্রযুক্তি কেবল মোবাইলে কথা বলা কিংবা ইন্টারনেট বা ফেসবুক ব্রাউজ করার প্রযুক্তি নয়। এই প্রযুক্তি চতুর্থ শিল্পবিপ্লব বা পঞ্চম শিল্পবিপ্লবের মহাসড়ক। ফলে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক বিবেচনায় উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার প্রয়োজনে ফাইভজির প্রয়োগিক দিকটি নিশ্চিত করা হবে।
তিনি বলেন, শিল্প, বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, মৎস্যসহ বিভিন্ন সেক্টরে রোবটিক্স, আইওটি, এআই, ব্লকচেইন কিংবা বিগডেটার প্রয়োগের মাধ্যমে চমকে দেয়ার প্রযুক্তি হচ্ছে ফাইভজি। ফাইভজির প্রয়োগ আর্থ-সামাজিক ও জনসম্পদের বিবেচনায় পৃথিবীর নানা দেশে নানা রকম হতে পারে।
এসময় ড্রাইভার বিহীন গাড়ী জাপানের জন্য আনন্দের হলেও লাখ লাখ ড্রাইভার বেকার হওয়ার বিষয়টি অমানবিক উল্লেখ করে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, একই কারণে রোবটিক্স প্রযুক্তির বিকাশে শ্রমিকবিহীন গার্মেন্টস শিল্প আমাদের কাম্য হতে পারে না।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হকের সভাপতিত্বে সভায় ফাইভজি বিষয়ক গবেষণার বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত তুলে ধরেন বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ডিজিটাল ডেভলপমেন্ট স্পেশালিস্ট রাজেন্দ্র সিংহ।
এসময় শহর এবং গ্রামের মধ্যে ডিজিটাল বৈষ্যম্য কমিয়ে আনতে ব্যান্ডউইথ সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্ব দেন বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি রাজেন্দ্র সিংহ। ডিজিটার পদ্ধতিতে জনসাধারণের মধ্যে সরকারি সেবা পৌঁছে দেয়া, দারিদ্র্য বিমোচনসহ ডিজিটাল দুনিয়ায় বাংলাদেশের অগ্রগতি অর্জন করেছে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি। তিনি বলেন, ফাইভ জি কেবল একটি প্রযুক্তি নয় এটি একটি উন্নয়নের সহায়ক পরিবেশ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ফাইভ জি প্রযুক্তি চালু করতে প্রয়োজনে বিশ্বব্যাংক কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে প্রস্তুত।