এস্তোনিয়ার সাফল্য ও সক্ষমতার অনুপ্রেরণায় দেশটির প্রকৌশল, প্রযুক্তি, ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার, আর্কিটেকচার ও সফটওয়্যার সল্যুশনের অভিজ্ঞতা গ্রহণ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্যে উত্তর ইউরোপের এই দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া –প্রশান্ত মহাসাগর বিভাগের প্রধান মিসেস কৃস্টি কারেলসনের (Kristi Karelsohn) এর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে আইটি পণ্য আমদানি এবং তাদের উৎপাদিত স্মার্ট প্রযুক্তি পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানির করার আগ্রহ ব্যক্ত করেছে এস্তোনিয়া প্রতিনিধি দল। এই দলের অন্য সদস্যরা হলেন, ভারতে এস্তোনিয়ার রাষ্ট্রদূত মার্জি লুপ, বাংলাদেশে এস্তোনিয়ার অনারারি কনস্যুল সৈয়দ ফরহাদ আহমেদ এবং নয়দিল্লীতে এস্তোনিয়া দূতাবাসের ডিসিএম মারগুস সলসন।
সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, বৈঠকে গত ১৫ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ সফলতা তুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে ইউরোপিয় ইউনিয়নের সহযোগিতায় আইসিটি বিভাগের মাধ্যমে শুরু হওয়া ই গভর্নেন্স পাইলট প্রকল্পে এস্তোনিয়ার অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো হচ্ছে সে বিষয়ে আপডেট দেয়া হয়েছে।
পলক আরো জানান, বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশ-এস্তোনিয়া আইটি কানেক্ট নামে শিগগিরই একটি বিজনেস পোর্টাল উদ্বোধন করা হবে। এছাড়াও দুই দেশের মধ্যে একটি ব্যবসায় বিনিয়ম চুক্তি হবে।
পলক বলেন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও সমৃদ্ধ ডাটা ড্রিভেন সার্ভিসের মাধ্যমে নাগরিক সেবা প্রদানে এস্তোনিয়া ইতিমধ্যে বিশ্বের অন্যতম ডিজিটাল সরকার ব্যবস্থা পরিচালনায় বিশ্বব্যাপী সুপরিচিতি লাভ করেছে। নাগরিক সেবা প্রদান ও গ্রহণের জন্য এস্তোনিয়ার যেকোন নাগরিককে কোন তথ্য দ্বিতীয়বার প্রদান করতে হয় না, যেকোন সেবার জন্য একবার তথ্য প্রদান করলেই তা সংরক্ষিত থাকে এবং অটোমেটেড প্রক্রিয়ায় সেটা পরবর্তীতে ব্যবহৃত হয়।
তিনি আরো বলেন, এস্তোনিয়ার সাফল্য ও সক্ষমতার অনুপ্রেরণায় বাংলাদেশ তাদের কিছু কৌশল, প্রযুক্তি, ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার, আর্কিটেকচার ও সফটওয়্যার সল্যুশন আগামীর সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ব্যবহার করতে পারি। যার একটাই লক্ষ্য- সময়, অর্থ ও সম্পদের সাশ্রয় করে দুর্নীতিমুক্ত উপায়ে ফিঙ্গার টিপস এর মাধ্যমে নাগরিক কেন্দ্রিক সেবা মানুষের জন্য সুনিশ্চিত করে স্মার্ট গভর্নমেন্ট সল্যুশন তৈরি করা।
বৈঠকে প্রযুক্তি ও দক্ষতার দিক থেকে অনেক সমৃদ্ধ হলেও তা স্কেল আপ করার সুযোগ কম থাকায় বাংলাদেশ এক্ষেত্রে দিল্লী থেকে আসা এস্তোনিয়ার রাষ্ট্রদূত কৃস্টি কারেলসনকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি এস্তোনিয়ার প্রযুক্তি ও স্টার্টআপগুলো বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারে এবং একইসাথে আমাদের স্টার্টআপ ও প্রতিষ্ঠানগুলোও তাদের সাথে কোলাবোরেশানে নিজেদের ব্যবসা বৃদ্ধি করতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
‘এই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে আমরা এস্তোনিয়ার সাথে আমাদের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে চাই এবং সেটাকে একটা প্রাতিষ্ঠানিকরূপ দিতে চাই, যোগ করে জুনাইদ আহমেদ পলক। জানালেন, পাশাপাশি ই-গভর্নেন্স, স্মার্ট গভর্নমেন্ট সার্ভিস ডেলিভারি, রিসার্চ, ইনোভেশন, ক্যাপাসিটি বিল্ডিং, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং স্টার্টআপ এক্সচেঞ্জ ও সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে একসাথে কাজ করবে বাংলাদেশ ও এস্তোনিয়া।