নিজেদের উদ্ভবিত অটোমেটিক ওয়াটার ডিস্ট্রিবিউশন ফর প্লান্ট, সলিড ফার্টিলাইজার স্প্রেডার মেশিন, এটমোসফেরিক ১.০, পোর্টেবল ইলেকট্রিক ওয়াটার বোতল এবং মেকানিক্যাল ভেন্টিলেটরের মতো প্রযুক্তি পণ্য প্রদর্শিত হলো যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি)। কোর্সের অংশ হিসেবে এ প্রদর্শনীতে এসব পণ্য উপস্থাপন করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়িারিং (আইপিই) বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। এ সময় আইপিই বিভাগের সকল শিক্ষক প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন।
কৃষকদের নিত্যপ্রয়োজনীয় সমস্যার কথা চিন্তা প্রদর্শনীতে বীজ এবং কঠিন সার ছিটানো যন্ত্র সলিড ফার্টিলাইজার স্প্রেডার মেশিন প্রদর্শন করে এক দল শিক্ষার্থী। তাদের উদ্ভাবিত যন্ত্রটি দিয়ে ক্ষতিকর সার এবং অন্যান্য কঠিন পদার্থগুলো স্বাস্থ্য ঝুঁকি ছাড়াব অল্প সময়ে জমিতে বেশি সার ছিটানো সম্ভব হবে।
মেকানিক্যাল ভেন্টিলেটর তৈরি করা গ্রুপের দলনেতা সাঈদ আনোয়ার বলেন, এটি এমন একটি মেশিন, যেটা ব্যবহার করে শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রাথমিক ও মধ্যম সমস্যা সম্বলিত রোগিদের শ্বাস-প্রশ্বাস কার্যক্রম অব্যাহত রাখা যাবে। মেশিনটিতে মিক্সিং, প্রেসিং এবং কন্ট্রোল ইউনিট নামে তিনটি ইউনিট রয়েছে। মিক্সিং ইউনিটে শুষ্ক অক্সিজেনের সাথে জলীয়বাষ্প সম্বলিত বায়ু মেশানো হয়, যেটা সরাসরি আরডুইনো নিয়ন্ত্রিত ও ডিসপ্লে থেকে সরাসরি দেখা যাবে। যন্ত্রটিতে থাকা মোটর সরাসরি এম্বুব্যাগকে পুশ করবে এবং নির্দিষ্ট আয়তনের ও প্রেশারের বায়ু মাক্সের মাধ্যেমে রোগির দেহে প্রবেশ করবে। এটি সাধারণত ম্যানুয়ালি ব্যাগ প্রেসিং, এ্যাজমা, এনেস্থেসিয়া, সিআরপি রোগীদের জন্য প্রযোজ্য।
বর্তমানে বাজারে থাকা ভেন্টিলেটর থেকে এটির সবচেয়ে বড় পার্থক্য হলো বাজারে থাকা ভেন্টিলেটর মূল্য যেখানে ১-১০ লাখ সেখানে এটির বাজার মূল্য মাত্র আট হাজার টাকা এবং এটি দ্রুত উৎপাদনযোগ্য।
প্রদর্শনীতে বর্তমানে মাত্রারিক্ত বায়ু দূষণের সময়ে বাতাস প্রতিনিয়ত ফুসফুসে জটলা বাধা ক্ষুদ্র ধুলিকণা শনাক্ত করে ব্যবহারকারীকে সতর্ক করতে বিশেষ একটি যন্ত্র উদ্ভাবন করেছে এটমসফেয়ারিক ১.০ গ্রুপের সদস্যরা। এক্ষেত্রে ডাস্ট পারটিকেল ডিটেক্ট করার জন্য GP2Y1010AU0F সেন্সরটি ব্যবহার করেছে উদ্ভাবকেরা। সেন্সরটি সংযুক্ত করা হয়েছে আরডুইনো ন্যানো মাইক্রোকন্ট্রোলার এর সাথে। এর সাথে যুক্ত করা হয়েছে একটি রিচার্জেবল লিথিয়াম আয়ণ ব্যাটারি। চার্জ করার জন্য রয়েছে একটি মাইক্রো ইউএসবি পোর্ট। উদ্ভাবকেরা জানিয়েছে ডিভােইসটির অবাকাঠামো বা কেসিংটি তারা থ্রিডি প্রিন্ট করে বানিয়েছেন। সাথে একটি বিপার ও সংযুক্ত করে দেয়া হয়েছে যা শব্দ করে ব্যবহারকারীকে জানিয়ে দেবে কখন ধুলো বেড়ে গেছে। এর পরে আমরা মাইক্রোকন্ট্র্রেলার এ প্রোগ্রাম করে একটি ভ্যালু ০.২গ্রাম/ঘনমিটার সেট করে দেই যার উপরে ধুলোর রিডিং পেলেই যন্ত্রটি শব্দ করে জানিয়ে দেবে। মজার ব্যাপার হলো যেহেতু এটি ধোয়াও ডিটেক্ট করতে পারে তাই এটি বাসা-বাড়িতে ফায়ার ডিটেক্টর হিসেবেও কাজ করবে। এটি বানাতে খরচ হয় মাত্র ১৫০০ টাকা যা বানিজ্যিক উৎপাদনে গেলে আরো কমানো সম্ভব।
পোর্টেবল ইলেকট্রিক ওয়াটার বোতল তৈরিকারী গ্রুপের সদস্যরা বলেন, এটি একটি স্মার্ট গেজেট। যা দেখতে নরমাল ওয়াটার বোতলের মতো হলেও এর মধ্যে রয়েছে অসাধারণ কিছু ফিচার। যেখানে নরমাল পানি রেখে একটি সুইচ ব্যবহারের মাধ্যমে ঐ পানিকে ঠান্ডা বা গরম করা যায় এবং বোতলের পানির তাপমাত্রা কত আছে তা ডিসপ্লের মাধ্যমে উপরে দেখা যায়। ডিসপ্লেটি সম্পূর্ণ টাচ স্ক্রিন। এই প্রোডাক্টটি তৈরি করতে আমরা ব্যবহার করেছি একটি সাধারণ ওয়াটার বোতল, হিট মডিউম, এলুমিনিয়াম হিট সিংক, কুলিং ফ্যান এবং সম্পূর্ণ সিস্টেমটাকে পাওয়ার অন/অফ করার জন্য ব্যবহার করেছি রিচার্জেবল লিথিয়াম ব্যাটারি। আমাদের এই প্রোডাক্টের অন্যতম একটি সুবিধা হল এটি পোর্টেবল হওয়ার কারণে যে কোন স্থানে নেয়া সম্ভব এবং ব্যবহারকারী তার চাহিদা অনুযায়ী নির্দিষ্ট তাপমাত্রা পানি পান করতে পারবেন।