স্থানীয় সংসদ সদস্য বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অফ ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি (SHIFT)-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বুধবার সকালে মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর ইউনিয়নের কেশবপুরে পায়রা উড়িয়ে ও গাছ লাগিয়ে ভবিষ্যতমুখী মানবসম্পদ তৈরির এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রতিমন্ত্রী।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধান্ত্রীর বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমন এফ রহমান, সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ, জেলা প্রশাসক ড.রহিমা খাতুন, শিফট প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ জহুরুল ইসলাম (যুগ্ম সচিব) প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচন করেন। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর দেয়া বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে যে স্মার্ট সিটিজেন দরকার সেই নাগরিক তৈরি করতেই একটি লাইফ লং লার্নিং এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের জন্য আমরা এই উদ্ভাবনী প্রযুক্তি পার্ক তৈরি করছি। ভবিষ্যত মাইক্রোসফট, গুগল প্রতিষ্ঠাতারা গড়ে উঠবে এখান থেকেই। এছাড়াও ৪১তলা ভিশন ২৪১ টাওয়ার স্থাপন করা হবে। এজন্য ২০ একর জায়গা সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে।
শিফট থেকেই আগামীতে বিশ্বজয়ী অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের মতো প্রযুক্তিবিদ তৈরি হবে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, শিফট হবে বাংলাদেশের এমআইটি। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য বাংলাদেশের ভবিষ্যত প্রজন্মকে তৈরি করতেই এই প্রকল্প। এখান থেকেই স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট নেতা তৈরি হবে।
পলক বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের মূল স্তম্ভ হলো স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট এবং স্মার্ট সোসাইটি। এর মাধ্যমে আমরা গঠন করবো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে স্বপ্নের সোনার বাংলার আধুনিক রূপ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধিদীপ্ত, জ্ঞানভিত্তিক, প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত অর্থনীতির স্মার্ট বাংলাদেশ।
এসময় নূর ই আলম চৌধুরী বলেন, পদ্মাসেতু আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তির সেতু। এই শিফটের পেছনে এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় মুজিব সেন্টার স্থাপন করতে যাচ্ছি। এছাড়াও আজ আমরা স্মার্ট শিবচরের প্রকল্প উদ্বোধন করবো।
এর আগে হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর ঠিক পাশেই মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলায় প্রায় ৭০.৩৪ একর জায়গা জুড়ে “লার্নিং বাই ডুইং” বা “এক্সপেরিয়েনশিয়াল লার্নিং শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করে লার্নিং কমিউনিটিভিত্তিক ইনোভেশন কালচার চর্চার পাশাপাশি দেশের প্রথম জিরো ওয়েস্ট ও এনভায়রনমেন্টালি সাস্টেইনেবল ক্যাম্পাস হিসেবে শিফটকে প্রতিষ্ঠা করা হবে। আমাদের মেধাবীদের প্রস্তুত করবার জন্য শেখ হাসিনা ইন্সটিটিউট অফ ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজিতে যে সকল বিষয়ে গুরুত্ব প্রদান করা হবে সেগুলোর মধ্যে বায়োটেকনোলজি, ন্যানোটেকনোলজি, নিউরোটেকনোলজি, সাইবার সিকিউরিটি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ইন্টারনেট অফ রোবোটিক্স থিংস, ব্লক চেইন, ডেটা সায়েন্স, হাইপার অটোমেশন, টেকনোলজিক্যাল এথিক্স, বিহেভিয়ার এন্ড এক্সপেরিয়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ইনোভেশন ও অন্ট্রাপ্রেনরশীপ অন্যতম।
প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ জহুরুল ইসলাম (যুগ্ম সচিব) জানান, ছয়তলা গবেষণা ভবন, চারতলা একাডেমিক ভবন, তিনতলা প্রশাসনিক ভবন, শিক্ষক-ছাত্রদের জন্য ডরমেটরি ভবন, ছয়টি বিশেষায়িত ল্যাব শিফটের আওতায় নির্মাণাধীন প্রধান অবকাঠামো। শিফটের পরিকল্পনা করা হয়েছে ভবিষ্যৎ প্রযুক্তিভিত্তিক পুরো বিশ্বের একটি একাডেমিক রোল মডেল হিসেবে। সকল শিক্ষার্থীদের মধ্যে লিডারশীপ স্কিল গড়ে তুলবার উদ্দেশ্যে প্রত্যেকের জন্য পছন্দের যে কোনো বিষয়ে বাৎসরিক একটি ক্লাস পরিচালনা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এক্টিভ লার্নিং এনভারোমেন্ট নিশ্চিত করবার লক্ষ্যে ভার্ব ও নোড ক্লাসরুম প্রযুক্তির অনুরূপ এর্গোনমিক ফার্নিচারস এন্ড টুলস এর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।