উন্নত, আধুনিক ও মানবিক সিংড়া গড়ে তুলতে খৃষ্টিয় ২০২২ সালের শেষ দিন ব্যক্তিগত উদ্যোগে এক হাজার ব্যক্তির মধ্যে কম্বল বিতরণ করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য জুনাইদ আহেমদ পলক। এই কাজে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যুক্ত করেন নিজের তিন সন্তান অপূর্ব জুনাইদ, অর্জন জুনাইদ ও অনির্বাণ জুনাইদকে।
কম্বল বিতরণ শেষে নতুন বছরের প্রথম দিনে সিংড়া উপজেলার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১০০ জন স্মার্ট নারী উদ্যোক্তাদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণের মাধ্যমে নতুন বছরে জনসেবা কার্যক্রম শুরু করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী।
রবিবার সকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ ওহিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রুহুল আমিন।
এসময় প্রতিমন্ত্রী জানান, ২৫ হাজার নারী উদ্যোক্তা তৈরি করতে আইসিটি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রথমে ৩ মাসের প্রশিক্ষণ শেষে তাদের ২ মাসের ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করা হবে। এরপর তাদের হাতে অফেরত যোগ্য পুঁজি হিসেবে ২০ হাজার করে টাকা দেয়া হবে যেনো তারা ই-কমার্স উদ্যোক্তা, আইটি ফ্রিল্যান্সার বা কলসেন্টার এজেন্ট কিংবা মোবাইল-ফ্রিজ সারাইয়ে যুক্ত হতে পারেন।
‘তবে এসবই বাস্তবে রূপ নেবে যখন নৌকা প্রতীককে বিজয়ী হতে পারি’- যোগ করেন পলক। তিনি আরো বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল পথ পরিক্রমায় বর্তমান মেধাবী প্রজন্মকে প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষায় শিক্ষিত করে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাই আমরা। ইতোমধ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে উঠবে দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমে নারীদের সমভাবে সম্পৃক্ত করার মধ্য দিয়ে। স্মার্ট নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার।
সেলাই মিশন বিতরণের পর সমতল ভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির আর্থ-সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প এর আওতায় ভেড়া বিতরণ করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ২০০ পরিবারের মধ্যে ৪০০টি ভেড়া ও আনুষঙ্গিক উপহার দেয়া হয়।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এমএম সামিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থি ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় প্রণীসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মো’: নজরুল ইসলাম ঝন্টু, জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো গোলাম মোস্তাফা,উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ ওহিদুর রহমান ও পৌরসভার মেয়র মো. জান্নাতুল ফেরদৌস।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল শুধুমাত্র শিক্ষিত মানুষই পাচ্ছে না। শুধু শহরের মানুষই পাচ্ছে না। গ্রামের একজন খামারি পর্যন্ত পেয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের আর্কিটেক সজীব ওয়াজেদ ভাই জয়ের নির্দেশনায় আইসিটি মিনিস্ট্রি থেকে ডিজিটাল হাট তৈরি করে দেই। প্রথম বছর ২৭ হাজার কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রি হয়। দ্বিতীয় বছরে সারা বাংলাদেশের ৮০০ হাট ডিজিটালি সংযুক্ত করে হাজার হাজার খামারিকে নিবন্ধন করা হলো। এর ফলে বিশ্বে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করে এই হাট থেকে ৩ লাখ ৮৭ হাজার কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয় হয়। অনলাইনে লেনদেন হয় ২৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ডিজিটাল হাটে প্রথম স্থান অর্জন করে নাটোর।
তিনি আরো বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে দেশে দুধ উৎপাদন হতো ২২ লাখ মেট্রিক টন এখন হয় ১৩০ লাখ। ডিম উৎপাদন হতো ৪৫৯ কোটি; এখন হয় ২৩৩৫ কোটি। মাংস উৎপাদন হতো ১০ লাখ মেট্রিকটন, এখন হয় ৯৩ লাখ মেট্রিকটন।
এসময় তিনি জানুয়ারির শিক্ষা উৎসবে সিংড়ার এসএসসি, এইচএসসি পাশ শিক্ষার্থীদের ফ্রিল্যান্সিং শেখানো এবং ল্যাপটপ উপহার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার সব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি সৃষ্টির মাধ্যমে দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন নিশ্চিতসহ দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়েছে।