প্রযুক্তির সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়নে আইসিটি বিভাগের নেয়া শি-পাওয়ার (She Power) প্রহল্পের ২য় পর্যায়ে এসে এর নামকে আরো সমৃদ্ধ করে ‘হার পাওয়ার’ (Her Power) নামে অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলনকক্ষের সঙ্গে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরেন।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় শি পাওয়ার প্রকল্পঃ প্রযুক্তির সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়ন (২য় পর্যায়) প্রকল্পটি উপস্থাপন করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সভায় পাশ হওয়া এই প্রকল্পের মধ্যমে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের তত্বাবধানে ৪৪ টি জেলার ১৩০টি উপজেলায় তথ্য প্রযুক্তিতে নারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে চারটি ক্যাটাগরিতে মোট ২৫ হাজার ১২৫ জন নারীকে ৫ মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এর মধ্যে আইটি সেবাদাতা হিসেবে ১০,৪০০ জন; নারী ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ১০,৪০০ জন; নারী কলসেন্টার এজেন্ট হিসেবে ১,০৭৫ জন এবং নারী ই-কমার্স পেশাজীবি হিসেবে ৩,২৫০ জনকে এই প্রশিক্ষণ পাবেন। প্রশিক্ষণ শেষে উত্তীর্ণ প্রশিক্ষণার্থীদের নিয়ে ০১ (এক) মাসব্যাপী মেন্টরশীপ প্রোগ্রাম আয়োজন করা হবে। পাশঅপাশি প্রকল্পের আওতায় ২৫,১২৫ জন নারীকে আইসিটি পেশাজীবী এবং উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য একটি একক নারী উদ্যোক্তা প্ল্যাটফরম তৈরি করা হবে।
প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রশিক্ষিত নারীদের প্রশিক্ষণ পরবর্তী পর্যায়ে কর্মসংস্থান এর সুযোগ তৈরি করা, অন্যান্য আইসিটি সংগঠন বা আইসিটি পেশাজীবী নারীদের সাথে যোগাযোগ (Networking), চলমান আইটি সেক্টরের বিভিন্ন তথ্য ও উদ্যোগসমূহ সম্পর্কে জানা, তথ্য আদান প্রদান, গবেষণা, পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি কার্যক্রম এর জন্য নারী উদ্যোক্তা প্ল্যাটফরমটি তৈরি করা হবে।সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার সাথে পার্টনারশীপ স্থাপন এবং চাকুরী মেলার আয়োজন করা হবে। সফল প্রশিক্ষণার্থীদের ল্যাপটপ ক্রয়ের জন্য আর্থিক অনুদান প্রদান করা হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ের নারী জনগোষ্ঠীকে আইসিটিতে দক্ষ ও উৎপাদনশীল মানব সম্পদে রুপান্তরে অবদান রাখবে। ফলে দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, সু-শাসন ও টেকসই উন্নতি নিশ্চিত করা সহজ হবে।
প্রসঙ্গত, আইসিটির মৌলিক ও নিত্যনতুন ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আইসিটি উন্নয়নের মূলধারায় নারী জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্তকরণ এবং তাদের টেকসই ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে ইতোপূর্বে বাস্তবায়িত শি পাওয়ারঃ প্রযুক্তির সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ১০,৫০০ জন নারীকে ফ্রিল্যান্সার (৪,০০০ জন), আইটি সেবাদাতা (৪,০০০ জন) ও কল সেন্টার এজেন্ট (২,৫০০ জন) এই তিনটি ক্যাটাগরিতে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে যার ফলে আইটি খাতে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে, নারীরা উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠছে ও আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে।