বঙ্গবন্ধুর সংগ্রাম কম্পিউটার অ্যালগরিদমের মতো শুরু হয়েছিলো। আর প্রজন্মে থেকে প্রজন্মে বঙ্গবন্ধুকে জাগ্রত রাখতে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার চেয়ে জাতির ডিএনএ এর সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সম্পৃক্ততা উন্মোচন করা হলেই জাতির রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুক্ত একসঙ্গে প্রস্ফূটিত হবে।
রোববার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদত বার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে বেসিস আয়োজিত দোয়া ও আলোচনা সভায় এমনটাই তুলে ধরেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ডঃ তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
আলোচক হিসেবে আরো সংযুক্ত ছিলেন সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, রাজী মোহাম্মদ ফখরুল ও নাহিদ ইজাহার খান এবং একাত্তর টেলিভিশন এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে দেশের বর্তমান ও পরবর্তি প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে সঠিক ধারণা প্রদানের উদ্যোগ নেয়ার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস ডিজিটাল মাধ্যমে সংরক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল মহলের প্রতি আহ্বান জানান ডঃ তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে ধীর লয়ে তার অনুসারী করেছিলেন। ওনার সংগ্রাম শুরু হয়েছিলো কম্পিউটার অ্যালগরিদমের মতো। শুরু করেছিলেন ছোট একটা প্লাটফর্মের মতো। কিন্তু তা ছিলো খুবই শক্তিশালী। ভাষা থেকে শুরু হয়ে তা স্বাধিকার আন্দল থেকে মুক্তিযুদ্ধে রূপ দিয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু একজন সফল সরকার প্রধান ছিলেন। তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলার প্রধান লক্ষ্যই ছিল মানুষের ৫টি মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। আজকের এই মহামারি ও দুর্যোগ মোকাবেলায় বঙ্গবন্ধুই আমার প্রেরণার উৎস। বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শন ও রাজনৈতিক দর্শনকে অনুসরণ করে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। নতুন প্রজন্মের মাধ্যমে সেই অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জিত হবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে আলোচনা অনুষ্ঠানের সূচনা করেন বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর।
আলোচনায় ডিএনএ এর সঙ্গে ‘বঙ্গবন্ধু’র সম্পৃক্ততা উন্মোচনের মাধ্যমে তাঁর আদর্শ ও চেতনা জাগ্রত করার আহ্বান জানিয়েছেন একাত্তর টেলিভিশন এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক জনাব মোজাম্মেল বাবু।
আলোচকগণ তাঁদের আলোচনায় উল্লেখ করেন, কেবল শোকদিবস বা আলোচনা সভা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করলেই হবে না বরং তাঁর আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। তিনি অত্যন্ত প্রগতিশীল মানসিকতার মানুষ ছিলেন। দেশকে একটি অগ্রসর ও স্বনির্ভর করে গড়ে তোলার যে স্বপ্ন তিনি দেখতেন, তা সফল ও সার্থক হবে যদি সত্যিকার অর্থে আমরা আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সাথে হত্যা করা হয় বাঙালী জাতির স্বপ্নকে। বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের কাছে আমরা অনেক ঋণী। বঙ্গবন্ধুর বাকী খুনিদের দেশে এনে বিচার করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর নাম এখন মহাকাশে, তার নাম আর মুছে ফেলা যাবে না।
বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর একটি সংক্ষিপ্ত জীবনালেখ্য তুলে ধরে বলেন, ১৯৭৪ সালেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ যোগ দেয় আন্তর্জাতিক টেলিকেমিউনিকেশন ইউনিয়নে (আইটিইউ)। তারই সিদ্ধান্তে বেতবুনিয়ায় স্থাপন করা হয় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র। বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর কন্যা তার অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। গড়ছেন স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ।
সবশেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার পরিবারবর্গের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন বেসিস এর প্রাক্তন মহাসিচিব নাহিদ আহমদ।