বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে হাই-টেক ইনোভেশন এই শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে বলে মনে করেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম এনডিসি।
বৃহস্পতিবার রাতে গুড টু গ্রেট একাডেমি আয়োজিত ‘দ্য নেক্সট বিগ থিং: হাই-টেক ইনোভেশন ইন ফ্যাশন অ্যান্ড টেক্সটাইল’ শীর্ষক সরাসরি ওয়েবিনারে তিনি এ কথা বলেন। ভবিষ্যতের এই প্রযুক্তিগত বিপ্লব নিয়ে আয়োজিত এই প্রোগ্রামটি বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এর ভেরিফাইড অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এবং গুড টু গ্রেট একাডেমির ফেসবুক পেইজে সরাসরি প্রচারিত হয়।
ওয়েবিনারে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পের অটোমেশনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোকপাত করা হয়। এই সেক্টরে উচ্চ প্রযুক্তির ব্যবহার বাংলাদেশকে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে আরো একধাপ এগিয়ে নিবে বলে আলোচকগণ মনে করেন। বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ সারা দেশে যে ২৮টি হাই-পার্ক স্থাপন করছে সেখানে এই ইনোভেটিভ প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করা যেতে পারে বলে ওয়েবিনারে আলোচকগণ মতামত প্রদান করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) জনাব হোসনে আরা বেগম এনডিসি বলেন, দেশে যে কোনো সময়ের তুলনায় সব চেয়ে ভালো বিনিয়োগ পরিবেশ বিরাজ করছে। আর বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ হচ্ছে আইটি সেক্টর। বিনিয়োগকারীদের জন্য বর্তমানে সরকার ১৪টি প্রনোদনা সুবিধা দিচ্ছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় আমাদের পার্কগুলোতে এর বাইরেও আরো কিছু সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। বর্তমানে আমাদের পার্কগুলোতে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি কোম্পানি কাজ করছে এবং পার্কে উৎপাদিত পণ্য বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। দেশের গার্মেসন্টস এবং টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির আধুনিকায়নে প্রয়োজনীয় উচ্চ প্রযুক্তি পণ্যগুলো হাই-টেক পার্কগুলোতে তৈরি হতে পারে। আমরা এক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
ওয়েবিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লন্ডনের প্লেক্সেলের বারক্লেস ঈগল ল্যাবের ল্যাব ইঞ্জিনিয়ার মি. জো ক্র্যাকমা। তিনি একজন থ্রি-ডি প্রিন্টিং বা অ্যাডিটিভ উৎপাদন বিশেষজ্ঞ। তিনি পোশাক/আনুষঙ্গিক উৎপাদনের জন্য অনেক ফ্যাশন ব্র্যান্ডের থ্রি-ডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি প্রয়োগের বিষয়ে পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি বৈশ্বিক প্রযুক্তি শিল্পে পরবর্তী বড় উদ্ভাবন এবং এটি কীভাবে ফ্যাশন ও টেক্সটাইল শিল্পের সাথে সামঞ্জস্য করা হবে তা নিয়ে ওয়েবিনারে আলোচনা করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের পরামর্শক জনাব তামজিদ বিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশকে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম তৈরী পোশাক রপ্তানিকারক হিসেবে টিকে থাকতে হলে ইনোভেশন এর বিকল্প নেই। সম্ভবত এই প্রথম, আমরা হাই-টেক গার্মেন্টস সম্পর্কিত ধারণাগুলি নিয়ে এবং এটি কীভাবে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে ভূমিকা রাখতে পারে তা নিয়ে কথা বলছি। বিশ্বব্যাপী ক্রসকাটিং সেক্টরে প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রবণতা নিরুপন করে তার সাথে বাংলাদেশের সক্ষমতা বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারলেই তা দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
লন্ডনের ইন্টেলএক্সসাইসের গবেষণার প্রধান মি. ফারাবি বলেন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস সেক্টর ইতিমধ্যেই গ্রীন টেকনোলজি কমপ্লায়েন্স মেনে চলছে। পরিবর্তিত বিশ্বে প্রতিযোগিতার সাথে তাল মিলিয়ে, বাংলাদেশকে অবশ্যই প্রযুক্তি বিপ্লবে মনোনিবেশ করতে হবে, যা গার্মেন্টস সেক্টরের উৎপাদন ব্যয় এবং সময়ের কার্যকরী ব্যবহার নিশ্চিত করবে। টেকনোলজির এই বিস্তারিত প্রভাবকে কাজে লাগানোর এখনই যথাযথ সময়। উপস্থিত বক্তাদের সাথে অনুষ্ঠানে সঞ্চালক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গুড টু গ্রেট এর প্রতিষ্ঠাতা মাশরুর রহমান এবং ফ্যাশন ডিজাইনার মার্টিনা ব্রান্টলোভা