গত ২২ জানুয়ারি থেকে বন্ধ রয়েছে শিখনকালীন মূল্যায়নের স্কোর ‘নৈপুণ্য’ অ্যাপ। মূল্যায়ন স্কোর ইনপুট দিতে গেলেই দেখাচ্ছে ‘নৈপুণ্য এর সকল কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে’। ফলে বেশিরভাগ স্কুল শিক্ষকই ইনপুট দিতে পারছেন না । সব মিলিয়ে চলতি শিক্ষাবর্ষের তিন মাস পারও নিয়মিত ইনপুট দিচ্ছে হাতেগোনা দু-চারটি স্কুল। এতে শিক্ষকরা যেমন বেকায়দায় পড়েছেন। তেমনি হতাশার প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা।
ঢাকার প্রধান প্রধান স্কুলসহ জেলা পর্যায়ের কিছু স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধিকাংশ শিক্ষকই শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের স্কোর ‘নৈপুণ্য’ অ্যাপে ইনপুট দেননি। দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্কুলগুলোতেই অ্যাপটির কার্যকর ব্যবহার হচ্ছে না। আর দেশের প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো গত ফেব্রুয়ারি মাস গেলেও শুরুই করতে পারেনি। নৈপুণ্য অ্যাপে বিদ্যালয় রেজিস্ট্রেশন ও শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করলেও মূল্যায়ন ইনপুট দেয়া শুরু করেনি গ্রামাঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।
বর্তমানে অ্যাপটিতে কাজ করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ জহুরা বেগম। তিনি জানিয়েছেন, বর্তমানে অ্যাপটিতে কাজ করতে পারছেন না। অ্যাপে ঢুকলে দেখাচ্ছে— ‘নৈপুণ্য এর সকল কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে’। তাই তারা হার্ড কপিতে মূল্যায়ন প্রস্তুত করছেন। একইভাবে মূল্যায়ন অ্যাপ কার্যকর না থাকায় অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠকও করতে পারছেন না। কেননা, বৈঠক ডাকলেই মূল্যায়ন সম্পর্কে জানতে চাইবেন অভিভাবকরা।
তবে কবে নাগাদ এই স্থবিরতা কাটবে সে বিষয়েও কোনও নির্দেশনা পাননি শিক্ষকেরা। একইভাবে গত ৪ মার্চ নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে একটি সমন্বয় কমিটিও গঠন করলেও সমন্বয় কমিটির কাজের অগ্রগতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা। লিখিত পরীক্ষা কীভাবে হবে, তা নিয়ে কোনও স্পষ্ট নির্দেশনা না পাওয়ায় তাদের এই উদ্বেগ। এ পরিস্থিতিতে অভিভাবকরা আস্থা হারিয়ে ক্ষুব্ধ হলেও নাম প্রকাশ করতে চান না।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান জানিয়েছেন, সমস্যা সমাধানে কাজ চলছে। ছুটির মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে।’
তবে ঈদের ছুটির পরে ২১ এপ্রিল থেকে আবারও ক্লাস শুরু হলে অতিক্রান্ত হবে বর্তমান শিক্ষাবর্ষের প্রায় চার মাস। এতোদিনেও মূল্যায়ন শুরু করতে না পারার জন্য এনসিটিবির ব্যর্থতাকেই দায়ী করেছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা। তারা বলছেন, এত সমস্যা সৃষ্টি না করে পুরো সিলেবাসভিত্তিক সামষ্টিক মূল্যায়ন করতে হবে। আর অবশ্যই নির্দিষ্ট নম্বরের লিখিত পরীক্ষা রাখতে হবে।