‘যখন যেখানে দরকার সেখানেই থাকবে সরকার’-এ স্লোগান বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার স্মার্ট বাংলাদেশের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে বলে মন্তব্য করেছন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে যুগোপযোগী প্রযুক্তি শিক্ষার বিকাশে ২০০৮ সালে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এর রূপকল্প প্রদান করেন। ওই সময়ে এটি অবাস্তব চিন্তা বলে সমালোচিত হলেও আজ তা অতি বাস্তব। বাংলাদেশ এখন প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষায় সারা বিশ্বের অগ্রগামী দেশ। প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপনের মাধ্যমে প্রযুক্তি শিক্ষার বিস্তার ঘটেছে। মাত্র ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে শতভাগ বিদ্যুৎ এবং ৫৬ লাখ ইন্টারনেট সংযোগকে ১৩ কোটি সংযোগে উন্নীতকরণের মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তি খাতে ২০ লক্ষ উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে। দেশে আট হাজার ৮৬৩টি ডিজিটাল সেন্টার নাগরিক সেবাকে সহজ করেছে, অর্থ ও সময়ের অপচয় রোধ করেছে, হয়রানি বন্ধ করেছে।
নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে শনিবার এসএমএসের মাধ্যমে অবসর ভাতা প্রদান ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের কল সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
পলক বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অন্যতম ভিত্তি হচ্ছে স্মার্ট সিটিজেন। একমাত্র শিক্ষকবৃন্দই তাদের শিক্ষার্থীদের স্মার্ট সিটিজেন হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন। কারণ শিক্ষকরা হচ্ছেন মোমবাতির মত, নিজে জ্বলে মানুষ, সমাজ, দেশ আর বিশ্বকে আলোকিত করেন। তারা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি নৈতিকতা, মূল্যবোধ, নেতৃত্ব এবং মানবিক গুণাবলীতে আলোকিত করেন।
‘সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান রচনা করার সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৫ টি মৌলিক অধিকারের কথা লিপিবদ্ধ করে গেছেন- অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা। আজ সমগ্র বিশ্ব এই ৫টি মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে অগ্রাধিকার দিচ্ছে; মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলস ও সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস এর মতো সকল পরিকল্পনায় বঙ্গবন্ধুর সেই দর্শনের প্রতিফলন হচ্ছে’- যোগ করেন পলক।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতির হাতেখড়ি হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর শিক্ষক আব্দুল হামিদের মাধ্যমে। বঙ্গবন্ধু বলতেন, সোনার বাংলা গড়তে সোনার মানুষ চাই। আর এ সোনার মানুষ তৈরি করেন শিক্ষকবৃন্দ। বঙ্গবন্ধু শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের সংবিধানে পাঁচটি মৌলিক অধিকারের মধ্যে শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করেন। এর ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাকেন্দ্রীক চিন্তাধারা ৫০ বছর পরেও সারা বিশ্বের মানুষ অনুসরণ করছে। শিক্ষাকে অগ্রাধিকার প্রদান করে বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শন অনুসরণ করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে এমডিজি, এসডিজির মত উন্নয়ন পরিকল্পনা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. মাহমুদা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ওহিদুর রহমান শেখ এবং উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শামীমা হক রোজী।
অনুষ্ঠানে ৮৪ জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মচারীকে এসএমএসের মাধ্যমে স্ব স্ব ব্যাংক হিসাবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জমা হওয়া অবসর সুবিধার প্রতীকী চেক হস্তান্তর করেন প্রতিমন্ত্রী পলক।