প্রস্তাবিত বাজেটে টেলিকম খাতে ‘বৈষম্য মূলক’ কর ও শুল্ক আরোপ করায় বিদ্যমান মোবাইল অপারেটরদের অবস্থা সিটিসেল ও এয়ারটেল’র মতো হবার শঙ্কা প্রকাশ করেছে টেলকম অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকমিউনিকেশ অপারেটর অব বাংলাদেশ (অ্যামটব)। সরকারের কর ও শুল্ক কাঠামো নিয়ে এক রাশ ‘হতাশা’ ব্যক্ত করে আলোচনার মাধ্যমেই উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
অতিরিক্ত কর ও শুল্কায়নের ফলে মুনাফার পরিবর্তে পুঁজিতে টান পড়ায় অল্পদিনের মধ্যে বিনিয়োগকারীরাও মুখ ফিরিয়ে নেয়ার পরিস্থিতিতে চলে এসেছে বলে জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ৬.২ শতাংশ অবদান রেখে আয়ের ৫১ শতাংশই সরকারি কোষাগারে জমা দেয় টেলিকম খাত। এর ওপর যদি সম্পূরক শুল্ক, সিমের প্রতি আরোপিত শুল্ক দ্বিগুণ করা এবং দ্বৈত করের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয় তবে তা হবে ‘সোনার ডিম পাড়া’ হাঁসকে ‘গলা টিপে হত্যা’ করার নামান্তর।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) রাজধানীর প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত বাজটে পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা জানানো হয়। ২০১৯ -২০ সালের অর্থবছরের কর প্রস্তাব উল্লেখ করে এর প্রভাবও তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
অ্যামটব মহাসচিব এস এম ফরহাদের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের হতাশার কথা তুলে ধরেন রবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন, গ্রামীণফোনের হেড অব রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স সাদাত হোসেন, বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান এবং টেলিটকের উপ মহাব্যবস্থাক সাইফুল আলম।
বাজেটে শুল্ক ও কর ভারের বিবরণ তুলে ধরে অ্যামটব মহাসচিব বলেন, “মোবাইল ইন্ডাষ্ট্রি সরকারের জন্য একটি রাজহাঁস হিসেবে বিবেচিত, এটি সোনার ডিম দেয়। বাজেট বক্তৃতায় রাজহাঁস থেকে পালক তোলার কথা বলা হয়েছে, রাজহাঁস যেন ব্যাথা না পায়। এ খাত ৬ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপিতে অবদান রাখছে। সরকার যে ঘোষণা দিয়েছে পালক তুলে শুধু ব্যাথা দেওয়া নয়, মরণ দশা হয়েছে। গলা টিপে হত্যা না করে এই রাজহাঁসকে সরকার যেন কোলে করে রাখে, যেন বেশী রেভিনিউ দিতে পারে।”
রবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন বলেন, লাভ করা গুনাহ নয়। আর কর ভ্যাট দিয়ে আমরা কিন্তু সুপার প্রফিট করি না। অথচ প্রতিবছর কেবল আমাদের ওপরই করের খড়গ চালানো হয়।
তিনি বলেন, “ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে আমরাই সবচেয়ে বেশি অবদান রেখে চলেছি। অথচ আমাদের কোন দাবি মানা হয় না। আরো বেশী ট্যাক্স ইমপোজ করা হয়। অনেকে বলে প্রফিট করি দেখাই না, তবে কোন অডিটে বের হয়নি আমরা টাকা পাচার করছি।”