৫ম “ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ফর সাসটেইন্যাবল ডেভেলপমেন্ট (আইসিসিইএসডি ২০২০)” শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আগুনে না পুড়িয়ে ও শিল্পর্বজ্য ব্যবহার করে কিভাবে ইট তৈরি করা যায় তার সমাধান দিয়ে বাজিমাত করেছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এর পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষক ও সাবেক শিক্ষার্থীরা। তাদের ৩টি সহ পুরস্কৃত হয়েছে মোট ৫টি গবেষণাপত্র।
চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষক জি এম সাদিকুল ইসলাম,এবং সাবেক শিক্ষার্থী সুদীপ্ত সরকার, লিভারপুল জন মুরস ইউনিভার্সিটির শিক্ষক মনোয়ার সাদিক এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আলী শুবের গবেষণা পত্রে বলা হয়েছে- মাটিকে পুড়িয়ে ইটভাটায় যে ইট তৈরি হয় তাতে পরিবেশের উপর অনেক বিরুপ প্রভাব ফেলে ও প্রচুর পরিমানে কৃষিজমি নষ্ট করে। এ কারণে বাংলাদেশে সরকারী কাজে ২০২৪-২৫ সালের পর আর কোন মাটির তৈরি ইট ব্যবহার করা যাবে না। এ লক্ষে বিকল্প তৈরি করাই এ গবেষণার মূল বিষয় ছিল। অপর দিকে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র সেই সময়ে ৮ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন ফ্লাই এ্যাশ তৈরি করবে। এ ছাড়াও রড তৈরির কারখানা হতে দুই ধরনের স্লাগ(উপজাত) তৈরি হয় যার ব্যাবস্থাপনা খুব কষ্টসাধ্য ও ব্যয় সাপেক্ষ। গবেষণাটিতে দেখানো হয় উক্ত বিকল্প বর্জ্য পদার্থগুলো দিয়ে মাটির ইট হতে অনেক ভাল মানের ইট তৈরি করা সম্ভব। গবেষণাটি যৌথভাবে সম্পাদন করে চুয়েট এর পুরকৌশল বিভাগ ও ইংল্যান্ডের লিভারপুল জন মুরস বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগ।
এদিকে ভূমিধস গবেষণায় বহুল প্রচলিত ফাইনাইট এলিমেন্ট মডেল এর সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে আরো নির্ভূলভাবে ভূমিধস এর সম্ভাব্য ক্ষতি নিরূপণ করার কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষক মো. আফতাবুর রহমান ও নাফিসা তাবাসসুম। প্যারামেট্রিক সেনসিটিভিটি ইন লার্জ ডিফর্মেশন এনালাইসিস বাই স্মুথড পার্টিকেল হাইড্রোডায়নামিক্স(এসপিএইচ) শিরোনামে একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে- ভূমিধস বা অন্য যেকোনো ভূতাত্ত্বিক দূর্যোগ যদি আগে থেকেই অনুমান করা যেত তাহলে তা একদিকে যেমন অনেক প্রাণ বাঁচাতো তেমনি আর্থিক ক্ষয়ক্ষতিও কমিয়ে আনা যেত বহুগুন।
অন্যদিকে টেকসই নগর ড্রেনেজ ব্যবস্থার প্রয়োগের মাধ্যমে চট্টগ্রামের খালগুলোকে কিভাবে ব্যবহার উপযোগি করে তোলা যায় তার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ সেরা গবেষণা পত্রের সম্পাদক হয়েছেন চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষক সুদীপ কুমার পাল এবং একই বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মো. মেহেদী মাসুম। এই গবেষণার মাধ্যমে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতাসহ সংশ্লিষ্ট সমস্যার সমাধান দেয়া সম্ভব হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) তিন দিন ধরে চলেন ৫ম “ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ফর সাসটেইন্যাবল ডেভেলপমেন্ট (আইসিসিইএসডি ২০২০)” শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন। সম্মেলনে মোট পাঁচটি কী-নোট সেশন এবং ৩২টি টেকনিক্যাল সেশনে দেশ-বিদেশের গবেষকদের মোট ২০১টি গবেষণা পত্র উপস্থাপিত হয়।