তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, “বিকেএসপি থেকে যেমন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান উঠে এসেছে, সামনের দিনে সায়েন্স টেকনোলজির জন্যও আমরা তেমনি একটি ইনস্টিটিউশন তৈরী করবে ইনশাআল্লাহ। যেখান থেকে বিজ্ঞানী উঠে আসবে”।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) নগরীর সোবাহানবাগে ড্যাফোডিল আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ মিলনায়তনে সায়েন্স ও রোবট অলিম্পিয়াড জয়ী কিশোর জাতীয় বীরদের হাতে ফুল ও উপহার তুলে দয়ার আগে দেয়া প্রধান অতিথির বক্তেব্যে তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু পার হয়ে ডান পাশে ৭০ একর জমি নিয়ে আমরা শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনলোজি স্থাপন করছি। সেখানে কাতারের স্টেম স্কুল থেকে এক ধাপ এগিয়ে আগামীতে আমরা ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে উচ্চ স্তর পর্যায়ে বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করতে যাচ্ছি। সেখান থেকেই সাকিব আল হাসানের মতো আগামী দিনের প্রযুক্তি বীর খুঁজে পাবো।
এবারের অলিম্পিয়াডে অর্থের অভাবে ১৪টির মধ্যে ৪টি ক্যাটাগরিতে অংশ নেয়া প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শুধুমাত্র অর্থের অভাবে বাকি ক্যাটাগরিতে আমাদের কিশোরেরা অংশ নিতে পারবে না এটা কখনোই হতে পারে না। আগামী দিনে আইসিটি পরিবার এই আয়োজনে পাশে থাকবে।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আমরা অর্থের দিকে না তাকিয়ে ভবিষ্যত মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বুয়েটে দুই কোটি টাকা ব্যায়ে রোবটিকস ল্যাব প্রতিষ্ঠা করছি। আগামীতে ফ্রেবিকেটিংসহ অন্যান কাজ শুরু হবে। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট ও বিডিওএসএন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের এই ল্যাবে নিয়ে যাবেন। সেখানে তাদের গবেষণা করার সুযোগ করে দিন।
তিনি বলেন, প্রয়োজন হলে আইসিটি বিভাগের পক্ষ থেকে উচ্চমাধ্যমিক, প্রয়োজন হলে মাধ্যমিক পর্যায়ে রোবটিক ল্যাব স্থাপনে আমি উপদেষ্টা ও প্রধান মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবো।
সবাইকে রোবটিকস এর বিষয় মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে পলক বলেন, রোবট মানেই শুধু মানুষের রিপ্লেস নয়, মানুষের কমিপ্লিমেন্টও। রোবটিক্স এমন একটি প্রযুক্তি যার সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট অব থিংকস, বিগ ডেটা, মাইক্রোচিপ প্রসেসর ডিজাইন, ব্লক চেইন ইত্যাদি নানা বিষয় জড়িত।
বিজ্ঞান ল্যাবের ঘাটতি মেটাতে ভিআর ও এআর এর মাধ্যমে এই বিস্তৃত ঘটাতে চেষ্টা করবো।
দ্বিতীয় বারের মতো অলিম্পিয়াডে অংশ নিয়ে অর্জিত এই গৌরাবের কারিগরদের শুভেচ্ছা জানিয়ে পলক বলেন, বিজয়ের মাসে তোমরা আমাদের গর্বিত করেছে। ভয়-কে জয় করে বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছো। এই মেধা দিয়ে আগামীতে বিশ্ব জয় করবে। তোমরাই বঙ্গবন্ধুর সোনার মানুষ।
মা-বাবা এবং শিক্ষকদের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পৃথিবীকে পরিবর্তন করতে হলে মা, বাবা এবং শিক্ষক- এই তিনজন লোকই যথেষ্ট। তাই আমি যারা আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করে দেশের জন্য গৌরব অর্জন করে এনেছেন, তাদেরসহ সব শিক্ষার্থীর মা, বাবা এবং শিক্ষকদের ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
পলক বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়েও আমরা প্রোগ্রামিং এবং আইসিটি বিষয়কে নিয়ে যেতে চাই। গত ১১ বছরে আমরা ৮ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠা করেছি। আগামী পাঁচ বছরে আরও ২০ হাজার ল্যাব স্থাপন করা হবে।
এ সময় অনুষ্ঠানে ডেপুটি সেক্রেটারি ড. মুহম্মদ মেহেদী হাসান, দুই অলিম্পিয়াডের দেশীয় আয়োজক বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়ককরণ সমিতির সহ-সভাপতি জনাব মুনীর হাসান, ড্যাফোডিল ফ্যামিলির সিইও মোঃ নুরুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিক্স ও মেকাট্রনিক্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শামীম আহমেদ দেওয়ান, বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন এর নির্বাহী পরিচালক সাজ্জাদুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি ড. লাফিফা জামাল, বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের বাংলাদেশ কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।