স্মার্টফোনের টাচ সুবিধা আর ফোসবুকের প্রতি আসক্তি বর্তমান তরুণদের শিক্ষা, জ্ঞান ও গবেষণার প্রতি মনোযোগ দিন দিন কমাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিষয়টি ‘ভয়ঙ্কর’ হিসেবে দেখছেন তারা।
শুক্রবার রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) অডিটোরিয়ামে তরুণদের নিয়ে এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
দেশের মোট ৭২টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে থেকে আসা ইয়ুথ ক্লাব অব বাংলাদেশের প্রায় ৪০০ জন তরুণ সদস্যকে নিয়ে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী এই আয়োজনে তরুণদের স্মার্টফোনে মজে না থেকে বাস্তবে মানবিক হওয়ার তাগিদ দেয়া হয়।
বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক, ডিএফআইডির বাংলাদেশ প্রতিনিধি যুদিথ হারবার্টসন, বাংলাদেশ পুলিশের অ্যাডিশনাল ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল হায়দার আলী খান, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের সাংগঠনিক সম্পাদক দীপক কুমার বণিক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শাহিন আনাম, ইয়ুথ ক্লাব অব বাংলাদেশের সভাপতি আরিফিন রাহমান হিমেল ও সাধারণ সম্পাদক সানজিদা জামান, এমসিসিআইর সভাপতি নিহাদ কবীর, অভিনেতা জাহিদ হাসান, প্রীত রেজা, আরিফ আর হোসাইন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, রেজওয়ানুল করিম এবং শহরিয়ার মান্নান সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট লেখক ও শিক্ষাবিদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমি ছেলেমেয়েদের পড়াই, আমি জানি। চোখের সামনে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ প্রতিদিন কমছে। আস্তে আস্তে কমতে-কমতে এখন কমে গেছে। ওদের আগের মতো মনোযোগ নেই। তার কারণ স্কিনের দিকে তাকিয়ে থাকে, সেখানে লাইক দেয়, কিছু লিখে না। খালি আঙ্গুল দিয়ে একটা ঠোকা মারে, এটা কিন্তু মানুষের জন্য না।’
তিনি আরো বলেন, ‘কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের হেড ছিলাম। ওখানকার অ্যাপালাই সাইন্সের আমি ডিন ছিলাম। আমার গাইডেন্সে অসংখ্য কাজ হয়েছে আমাদের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে।’
এক পর্যায়ে তরুণদের উদ্দেশে নিজের ব্যবহৃত ‘বোতামযুক্ত’ সাধারণ ফোনটি দেখিয়ে জাফর ইকবাল বলেন, ‘এটাতে কিন্তু আমার ভালোভাবেই কাজ চলে যায়। আমার যখন দরকার হয় তখন আমি ল্যাপটপ ওপেন করি, তথ্য নিই। আমার সময় নষ্ট হয় না। আমার দিন চলে গেলে তোমরাও তোমাদের দিন চালাতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘সায়েন্স ভালো, কিন্তু প্রযুক্তির ভালো মন্দ আছে। তুমি টেকনোলজি ব্যবহার করবে টেকনলজি যেন তোমাকে ব্যবহার না করতে পারে। আমার প্রয়োজনে টেকনোলজি ব্যবহার করবো। আমি ফেসবুক ব্যবহার করবো। কিন্তু আমার ইচ্ছে করছে না তারপরও আমাকে ফেসবুক টেনে নিয়ে যাচ্ছে। আমি ফেসবুকে থাকছি।’
তার ভাষায়, ‘যন্ত্র যতই হোক তারা কিন্তু মানুষ না। মানুষ যেগুলো পারে তারা পারে না। তারা প্রসেস করতে পারে। অনেক কিছু করতে পারে। কিন্তু মানুষের কাজ করতে পারে না। মানুষ চোখের ইশারায় অনেক কিছু বোঝাতে পারে যেটা যন্ত্র পারবে না। তাই তোমরা একটা ছোট চারকোণা স্কিন নিয়ে থেকো না।’
ইয়ুথ ক্লাব অব বাংলাদেশ এর আয়োজনে ‘ন্যাশনাল লিডারশিপ কার্নিভাল ২০১৯’ এর সহযোগিতায় ছিল ইউকে এইড এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন।