কৃষিতে আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এর ধারাবাহিকতায় ধানের উৎপাদন বাড়াতে নদী-খাল খনন ও পতিত জমি ধান চাষের আওতায় নিয়ে নিয়মিত সেচ নিশ্চিত করার পাশাপাশি আর্টিফিশিয়াল রেইনের (কৃত্রিম বৃষ্টি) পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার ব্রাহ্মগাতি দাশপাড়ার ৫০ বিঘা জমিতে ধান গবেষণা পরিদর্শনকালে এমন পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর।
তিনি বলেন, ‘এখানে ৭টি জাত প্রদর্শন হয়েছে। এর ৫টি উফসী ও ২টি হাইব্রিড। সবগুলোই চাষ করতে হবে এমন বিষয় না। আগামীতে যার যেটা ভালো লাগবে, তিনি সেটাই চাষ করতে পারবেন। এজন্য প্রয়োজনীয় বীজ সরবরাহ করা সম্ভব হবে। পানি ও লবণাক্ততা সমস্যা আছে। কিন্তু নদীর মিষ্টি পানি ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। ডুমুরিয়ায় ১০১ জাত চাষে প্রতি শতকে ১ মণ ধান পাওয়া গেছে। গত ৩-৪ বছরে চাল আমদানি করিনি। নিজেরাই প্রয়োজনীয় ধান উৎপাদন করছি। তাই উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য গবেষণা ও পরিকল্পনা নিয়ে কাজ এগুচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মোহন কুমার ঘোষ জানিয়েছেন, খুলনায় এক লাখ সাত হাজার হেক্টর পতিত জমি চাষের আওতায় আনতে তৎপরতা চলছে। এর অংশ হিসেবে দিঘলিয়ার ৮টি খাল খনন প্রায় শেষ। আরও ৬টি খাল খনন করা হবে। খুলনা অঞ্চলে এক হাজার ১২৭টি খাল রয়েছে। এর মধ্যে ৬১৫টি খাল খনন করা প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে কাজ এগিয়ে চলছে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ জানিয়েছেন, খাল খনন সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা। পরিকল্পনা অনুযায়ী, কারও একটু জমি খাল খননে পড়লে তিনি যদি বাধা না দেন তবে সবারই লাভ হবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের উদ্যোগ খুলনার দিঘলিয়ায় ৫০ বিঘা জমিতে ৭টি জাতের ধান চাষ প্রদর্শন করা হয়। জাতগুলো হলো উফসী ব্রী ৮৯, ব্রী ৯২, ব্রী ১০০, ব্রী ১০৪ ও ব্রী ১০৫, হাইব্রিড ৩ ও ৮। এর মধ্যে ১০৫-কে ডায়াবেটিস ধান হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। যা চাষ ও উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে বাণিজ্যিকীকরণ করা সম্ভব।